লাইফস্টাইল ডেস্ক : হিরের থেকে হাজার গুণেরও বেশি দাম চিনের এই চা। বিশ্বের সবথেকে দামি এই চা ‘দ্য হং পাও’-এর প্রতি কেজির দাম প্রায় ৯ কোটি টাকা। কারণ, এই চা পাতা শুধু দুষ্প্রাপ্য নয়, বরং এর সঙ্গে হাজারো ঔষধিগুণ। মদ্যপান, ধূমপানের ক্ষতিকারক মাত্রা যেমন এই চা নিমেষে কমিয়ে দেয়, তেমনই এই জৈব চা শ্রান্তি দূর করে মানুষকে তরতাজা করে মুহূর্তে। এর পাশাপাশি ত্বক ভাল রাখা, ওজন কমানো, সর্দিকাশি থেকে মুক্তি-সহ আরও হাজারো গুণ তো রয়েছেই।
এক ক্যারাট হিরের দাম বর্তমানে ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু তার থেকেও প্রায় 1300গুণ বেশি দাম দিতে হবে চিনের ফুজিয়ান প্রদেশের ‘দ্য হং পাও’-এর কারখানায় তৈরি চা খেতে হলে। কারণ, ১ কেজি এই চায়ের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি টাকা।
কিন্তু কী এমন রয়েছে চিনের এই চা’য়ে যার ফলে এত দাম এর?
ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, এটি আসলে জৈব চা। ফুজিয়ান প্রদেশের ইউয়ী পর্বতমালায় ‘দ্য হং পাও’ নামে একটি দুষ্প্রাপ্য গাছের পাতা দিয়ে এই চা তৈরি হয়। এই পাতার উচ্চ ওষুধগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে এই চা পাতা দুষ্প্রাপ্য। এর দুষ্প্রাপ্যতা আর ওষুধগুণের জন্যই এই চায়ের এত দাম!
Flavonoids, tea polyphenols, theophylline এবং caffeine সমস্ত কিছুই এই চা পাতায় বিদ্যমান। তার ফলে এই চা পানে ক্লান্তি দূর হয় এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ধূমপান এবং মদ্যপানের কারণে যে শারীরিক ক্ষতি হয়, তার মাত্রা এই চা পান করলে কমে যায়। কারণ, রক্তে মিশ্রিত নিকোটিন ও অ্যালকোহলের মাত্রাকে এই চা কমিয়ে দিতে সক্ষম।
এখানেই শেষ নয়। ‘দ্য হং পাও’ চায়ের এরকম আলাদা আরও গুণ রয়েছে। তা হল, এই চা ত্বক ভাল রাখতে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে উপরি পাওনা হল সর্দিকাশি থেকে মুক্তি। ফলে এমন চায়ের দাম যে আকাশছোঁয়া হবে, তা তো স্বাভাবিকই।
তবে চায়ের এই বিশ্বখ্যাত হওয়ার নেপথ্যের গল্পটাও খুবই আকর্ষণীয়। তা বলছে, বেজিংয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় একজন ছাত্র শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এমন সময়ে Tianxin মঠের এক সন্ন্যাসী তাঁকে দেখতে পান। তিনি ইউয়ী পর্বতমালাজাত এক কাপ চা তৈরি করে ওই পড়ুয়াকে দেন। নিমেষে ওই পড়ুয়া সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে জানা যা, পরীক্ষাতেও তিনি প্রথম স্থান দখল করেছেন।
কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মঠের ওই সন্ন্যাসীকে ধন্যবাদ দিতে আসেন ওই পড়ুয়া। পরে ওই পড়ুয়া আবার ওই চা-র মাধ্যমেই অসুস্থ ক্ষমতাসীন শাসককে সুস্থ করে তোলেন। খুশি হয়ে শাসক তাঁকে তখন একটি লাল পরিধেয় উপহার দেন। এবং তাঁকে নির্দেশ দেন, পড়ুয়া যেন ওই চা-গাছে লাল পরিধেয়টি ঝুলিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, সেই সময়ে ওই লাল পরিধেয়কে খুব সম্মানের বলে মনে করা হত।
ক্ষমতাসীন শাসক অন্য পারিষদবর্গকেও নির্দেশ দেন, যাঁরাই ওই এলাকা থেকে যাবেন, আতঁরা যেন নিজেদের লাল পরিধেয়টি সংশ্লিষ্ট চা-গাছে রেখে দেন। সে কারণে ওই চা গাছের নাম তখন থেকে ‘বিগ রেড রোব’ হয়, চিনে যাকে বলা হয় ‘দ্য হং পাও’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।