বিশ্বের ৭টি রহস্যময় ভুতুড়ে জায়গা

ভুতুড়ে জায়গা

লাইফস্টাইল ডেস্ক : যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করি ভূত দেখেছেন কখনো। আপনার উত্তর কি হবে। অবশ্যই না। ভূত এমন একটা শব্দ। যা আমাদের মনে ভয় তৈরি করে ঠিক আছে। কিন্তু বেশিরভাগেরাই বলবে। বিষয়টা তে সে ভয় পেলেও কখনো দেখেনি সেটাকে। তবে তাই বলে কি নেই নাকি। ভুত বা অতৃপ্ত আত্মা বিষয় নিয়ে কেউ সঠিক ডেফিনেশন দিতে পারবে না। কিন্তু আমরা এটা অবশ্য বলতে পারবো।

ভুতুড়ে জায়গা

এই দুনিয়াতে এরকম অনেক প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিস হয়ে থাকে। যার কোন কারণ পাওয়া দায়। যে বিষয়গুলোর সঠিক আনসার কারো কাছেই নেই। আর সেই সব বিষয়গুলোর কারণে দুনিয়াতে এমন কিছু স্থান রয়েছে। যেগুলোকে নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কেওই ভয়ে সেখানে যেতে চায় না। আজ এরকমই কিছু স্থান সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চলেছি।

যেখানে নাকি এমন কিছু প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিস লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যা আপনার গা শিউরে দেবে। তার আগে আপনি চাইলে এই ভিডিওটা আপনার এমন বন্ধুর কাছে শেয়ার করুন। যে নাকি ভুতে খুব ভয় পায়। চলুন শুরু করি।

নাম্বার ওয়ান হলো ইংল্যান্ডের বড়লে গ্রামে অবস্থিত বড়লে রেক্টরি। ইতিহাস অনুযায়ী এই রেক্টরে ১৮৬৩ সালে হেনরি ডাউসন এলিস বুলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। ঘটনা অনুযায়ী অনেক আগের কথা এটা। তখনকার তাদের জাতের এক ছেলে নাকি তাদের জাতের বাইরে বেরিয়ে। এক সন্ন্যাসিনীর প্রেমে পড়েছিল। তারা বিয়ে করতে চেয়েছিল।

বিশ্বের ৭টি রহস্যময় ভুতুড়ে জায়গা

তবে সমাজ আর তার পরিবার সেটা মেনে নেয়নি। যার কারণে তারা পালিয়ে গিয়েও বিয়ে করার চেষ্টা করেছিল। তবে মাঝ রাস্তায় ধরা পড়ে যায় তারা। যতোটুকু জানা গিয়েছে। এর শাস্তি স্বরূপ সেই সন্ন্যাসিনীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। অনেকে আবার বলেন এই প্রাসাদের মধ্যেই নাকি তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এলাকাবাসীদের কথা অনুযায়ী।

তখন থেকেই নাকি এই প্রাসাদের সাথে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটতে শুরু করে। আবার এই বিষয়টাকে নিয়ে ১৯৪৪ সালে বিখ্যাত লাইভ ম্যাগাজিনের বিষয় প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছিলো। সেখানে দরকারি কিছু ছবি তুলতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের সাথেও। কিছু প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিজ হয়েছিল। সে জানিয়েছে। যখন নাকি সে ছবি তোলার জন্য ভেতরে যায়।

কোথা থেকে যেন ইটের টুকরো তাকে ছুড়ে মারা হচ্ছিল। তাছাড়াও একে নিয়ে আরও অনেক অদ্ভুত অদ্ভুত বিষয় ঘটে যায় বলে এলাকাবাসীরা দাবি করে। আর সেই সময়ের পর থেকেই ইংল্যান্ডের সবথেকে ভুতুড়ে স্থান হিসেবে। একে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এমনকি এখনো ভয়ে এই বাড়িতে কেউ যায় না।

বিশ্বের ৭টি রহস্যময় ভুতুড়ে জায়গা

তারপরে যেই স্থানটির কথা বলব সেটা হল ভারতে অবস্থিত রাজস্থানের ভানগড়। কোন এককালের বিশাল এক শহর ছিল এটা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় স্থানটা এতটাই বদলে যায়। বর্তমানে এখানে কেউই বসবাস করে না। দিনের বেলা জায়গাটা একটা টুরিস্ট স্পট।

কিন্তু রাতের বেলায় এই জায়গাটাই হয়ে ওঠে একটা ভুতুড়ে স্থান। এমনকি এখানকার একটা সাইনবোর্ডে এমনটাও লেখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষর থেকে অনুরোধ। দয়া করে সূর্যাস্তের পর এবং সূর্যোদয়ের আগের মুহূর্তে। কেউ এখানে প্রবেশ করবেন না। এটার ইতিহাসটা যদি বলতে যাই। রানী রত্নাবাতী নামের এক মেয়ে ছিল এই প্রাসাদে। বলা হয় তৎকালীন সময়কার সব থেকে সুন্দরী নারী ছিলেন তিনি।

তাকে বিয়ে করার জন্য প্রতিনিয়ত অনেক স্থান থেকে অনেক রাজা মহারাজাদের প্রস্তাব আসতে শুরু করে। তৎকালীন সময়ে এক জাদুকর ছিল যে নাকি কালো জাদু করত। সে রানীকে খুবই চাইত। কিন্তু জানত এটা কখনোই সম্ভব নয়। যার কারণে সে রাণীর উপর কালো জাদু করার চিন্তা করে। রানী যে পারফিউম ব্যবহার করে লুকিয়ে সেই পারফিউমের মধ্যে। সে তার কার্য ঘটায়। আর যখনই রানী সে পারফিউম ব্যবহার করবে। তখনই যেন সে জাদুকরের প্রতি আকৃষ্ট হবে।

কিন্তু রানী এ বিষয়টা তার গুপ্তচরের কাছ থেকে জেনে যায়। আর পরমুহূর্তে নাকি ওই জাদুকরের মৃত্যুর আগে সে অভিশাপ দিয়ে যায়। এই শহর ধ্বংস হবে। আর তার ঠিক এক বছরের মধ্যেই এক যুদ্ধের কারণে। এই শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। বর্তমানে এই কেল্লার আশেপাশে যারা বসবাস করে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতি রাতে কেল্লার ভেতর থেকে পায়েলের আওয়াজ শোনা যায়। তাছাড়াও কান্নার আওয়াজ তো আছেই। এবং এক বিশেষ সুগন্ধি রাতের বেলা ছড়িয়ে পড়ে। যেটা নাকি যে কাউকেই তার দিকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। আর এ কারণেই জায়গাটা ভারতের সবথেকে হন্টেড এরিয়ার মধ্যে একটা ।

‌তারপর যেই স্থান রয়েছে সেটা হল মন্টে ক্রিস্ট হোমস্টিড। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত এই বাড়িটা সে দেশের সব থেকে ভুতুড়ে বাড়ি হিসেবে পরিচিত। এই বাড়ির মালিক যখন মারা গিয়েছিলেন। তার স্ত্রী কালনি এতটাই শোকাহত হয়েছিলেন। যেখানে সে আর কখনোই বাইরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । দীর্ঘ ২৩ টা বছর এই বাড়ির মধ্যেই থেকেছেন তিনি।

বিশ্বের ৭টি রহস্যময় ভুতুড়ে জায়গা

বাড়ির বাইরে এক পা বাড়াননি। অবশেষে তার আপনজনেরা সবাই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। রয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকি ওই বাড়ির মধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছিল। আর মৃত্যুর পর তার লাশটাকেও সমাধি বা কিছু করা হয়নি। সেই লাশটা ওই বাড়ির মধ্যেই পড়েছিল। সময় যেতে যেতে সেটা পচে গেলে বাতাস এবং আবহাওয়ার সাথে মিশে যায়। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় সমস্ত ভৌতিক সমস্যা।

তার অনেক বছর পর এই বাড়িটাকে দখল করার জন্য অনেকে গিয়েছিল। কিন্তু কোন না কোন ভাবে কিছু প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিস এর কারনে। সেই বাড়িটা ছাড়তে তারা বাধ্য হয় তারা । এলাকাবাসী ধারনা করেন সেই মেয়ে নাকি এখনো এই বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। রাতের বেলা কালোনীর কান্নার আওয়াজ শোনা যায় এই বাড়ি থেকে। তাই এখনো অস্ট্রেলিয়ার সবথেকে ভুতুড়ে স্থান গুলোর মধ্যে এটি সবার উপরে।

তারপরের যেই স্থানটা সেটাও অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত যাকে বলা হয় অ্যারাডেল লোনাটিক এসিলাম । এটা একটা মেন্টাল হসপিটাল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত এটা। ১৯৬৬ সালের দিকে এই হাসপাতাল টাকে তৈরি করা হয়েছিল। তবে চলে যায় কিছু বছর। এক দুর্ঘটনায় তৎকালীন সময়ে এক নার্স সেখানে জঘন্যভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল। তবে সমস্যাটা দেখা যায় তার পরবর্তী সময় টায়। এখানে ভর্তি হওয়া যতগুলো পেশেন্ট।

মানসিকভাবে অসুস্থ সেই মানুষগুলো হঠাৎ ভয় পেতে শুরু করে। কিছু একটা যেন তাদেরকে উত্তেজিত করতে শুরু করে। যতটুকু জিজ্ঞাসা করা হয় তারা শুধু একটা নার্সের কথাই জানিয়েছিল। তবে যেহেতু মেন্টাল হসপিটাল সবাই পাগলের মত কথা বলবে স্বাভাবিক। কিন্তু সব পাগলে কি একই কথা বলবে। যে বিষয়টা তাদেরকে ভাবিয়ে তোলে। তবে এই হসপিটালের কাল রূপ তখন চলে আসে। যখন এই একই কথা বারবার শোনা যাচ্ছিল। এবং এমনকি কিছু পেশেন্ট সুইসাইড করতে শুরু করে। সেটা অবশ্যই সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। তারপর পরবর্তী সময় টাতে এই হসপিটাল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো বলা হয় সেই নার্স নাকি এখনো এই হসপিটালে ঘুরে বেড়ায়।

বিশ্বের ৭টি রহস্যময় ভুতুড়ে জায়গা

তারপর হল হাইগ্রেট সিমেট্রি ইংল্যান্ড। এটা ইংল্যান্ডের একটা কবরস্থান। শুধুমাত্র কবরস্থান বললে হবে না। এটা ইংল্যান্ডের সবথেকে বড় কবরস্থানগুলোর মধ্যে সবার উপরে। কয়েক লক্ষ মানুষের কবর রয়েছে এখানে। তবে এটা ভয়ের বিষয় নয়। এখানকার সমস্ত মানুষকে যেটা ভয় দেখায়। সেটা হল মাঝে মাঝেই নাকি একটা কালো স্যুট পরা ভ্যাম্পায়ার এর মত মানুষ দেখা যায় এখানে। রাত হলে পুরো কবরস্থানেই যেন তাকে ঘুরতে দেখা যায়। সেটাও তেমন বড় বিষয় ছিল না। ঘটনা তখন চরম পর্যায়ে যায়।

যখন নাকি এক মহিলার সম্পূর্ণ আগুনে পোড়া লাশ এই কবরস্থানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্ত করা হয়েছিল কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি কিছুই। যেটা তার পরবর্তী সময়টাতে এই কবরস্থানকে ইংল্যান্ডের ভয়ংকর স্থানগুলোর মধ্যে। একটা করে তুলে। রাত হলে এখনো মানুষ এই কবরস্থানের আশেপাশে যেতে ভয় পায়।

তারপর হলো মেরি কিংস ক্লোজ। স্কটল্যান্ড এর এই জায়গাটা মূলত প্রথমে একটা আন্ডারগ্রাউন্ড এবং বিভিন্ন টানেলের সাথে যুক্ত ছিল। ১৬ এবং ১৭ শতাব্দীর মধ্যে এখানে একটা দুর্ঘটনায় মহাবিস্ফোরণে। জায়গাটা পরিতক্ত হয়ে যায়। কিন্তু পরিত্যক্ত হওয়ার পরে নাকি এই জায়গাটা ভৌতিক আলোচনায় সবার শীর্ষে উঠে যায়। এমন কিছু প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিস এখানে অহরহ ঘটতে শুরু করে। যেগুলো নাকি মানুষদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এখান দিয়ে যাবার সময় বর্তমানেও নাকি ভেতরে এমন একজন মহিলাকে দেখা যায়। সে নাকি দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু যদি লক্ষ্য করা হয় সাথে সাথে গায়েব হয়ে যায়। এটা শুধুমাত্র একজনের সাথে হয়নি। এরকম অনেক মানুষ রয়েছে যারা এমনটা ব্যাখ্যা করে। তাছাড়াও রাতের বেলা এমনকি দিনের বেলাতেও এই স্থান থেকে অদ্ভুত কিছু আওয়াজ আসতে শোনা যায়। যেটা নাকি এই স্থানকে সবথেকে ভয়ানক স্থানের রূপ দিয়েছে।

ভুলটির কারণে বেশিরভাগ মানুষের তারাবি নামাজ হয় না

তারপর হল সেট আগস্টাইন লাইট হাউস। লাইট হাউস সাধারণত সমুদ্রের জাহাজের দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। এটা এমন একটা লাইট হাউস যেটা নাকি বর্তমানেও চলছে খোলা আছে। কিন্তু তবু সব থেকে হন্টেড প্লেস গুলোর মধ্যে একটা। কারণটা হলো এখানকার প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিস। এখানে এই লাইটহাউজ দেখাশোনার দায়িত্বে যে থাকেন সে নাকি মাঝে মাঝেই এমন অনুভব করেন। যে তার পেছনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু পেছনে ঘুরে দেখলে কেউ নেই তা ছাড়াও এর একদম টপ ফ্লোরে মাঝে মাঝে এক মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু সরাসরি কখনো সামনাসামনি দেখা যায় নি। এক ঝলক দেখা গেলেই পরবর্তী মুহূর্তে নাকি উধাও হয়ে যায়। যা এই লাইট হাউসটাকে ভুতুড়ে স্থান হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরছে।