শীতকাল এলেই শুরু হয় উৎসবের আমেজ, আর সেই উৎসবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজতে থাকে বিয়ের সানাই। বাংলাদেশে সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই সময়টাকেই বিয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ধরা হয়। আবহাওয়ার স্বস্তি থেকে শুরু করে নানা লজিস্টিক সুবিধা—সব মিলিয়ে শীতকাল বিয়ের মৌসুম হিসেবেই পরিচিত।

দেখে নেওয়া যাক, কেন শীতকালই বিয়ের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক সময়—
১. লম্বা ছুটি ও আত্মীয়-সমাগম
ডিসেম্বর মাসে স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়, শুরু হয় লম্বা ছুটি। এই সময়ে কর্মজীবী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত সবাই কিছুটা অবসর পান। ফলে দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা আত্মীয়-পরিজনদের একই ছাদের নিচে পাওয়া যায়, যা অন্য সময়ে কঠিন।
২. কাজে ক্লান্তিহীন অংশগ্রহণ
বিয়ের আয়োজন মানেই শত রকম ব্যস্ততা দাওয়াত, সাজসজ্জা, খাওয়াদাওয়া, আয়োজন পরিচালনা ইত্যাদি। গরমের সময় সামান্য পরিশ্রমেও ক্লান্তি আসে, কিন্তু শীতকালে স্বস্তির কারণে সবাই প্রাণবন্তভাবে কাজ করতে পারেন।
৩. মেকআপে স্বস্তি
গরমের দিনে ঘাম বা আর্দ্রতায় মেকআপ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শীতকালে এই চিন্তা একেবারেই নেই। বর-কনে ও অতিথিরা সহজে সাজগোজে আরাম পান, মেকআপও দীর্ঘক্ষণ টেকে।
৪. ভরপুর ভোজ ও খাদ্য সংরক্ষণে সুবিধা
পোলাও, বিরিয়ানি, রোস্ট বা রেজালার মতো ভারী খাবার শীতকালে বেশি উপভোগ্য হয়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি প্রায় থাকে না। সঙ্গে পিঠাপুলি ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী পদ যোগ হয়ে বিয়ের আয়োজনকে আরও মুখরোচক করে তোলে।
৫. ফুলসজ্জায় সহজলভ্যতা
গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, অর্কিডসহ বিভিন্ন ফুল শীতকালে সহজলভ্য হয় এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এতে ডেকোরেশন আরও রঙিন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়।
৬. ফলের ঝামেলা কম
এই সময় মৌসুমি ফল কম থাকায় ফলের প্লেট সাজানোর বাড়তি ঝক্কি থাকে না। ফলে আয়োজন সহজ ও খরচও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭. সময় ও খরচ সাশ্রয়
শীতকালে দিনের আলো কম থাকায় কাজগুলো সাধারণত দিনের মধ্যেই শেষ হয়। এতে সময় বাঁচে এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বা শ্রম খরচও কমে।
৮. বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয়
শীতকালে ফ্যানের প্রয়োজন হয় না, তাছাড়া রাতের অনুষ্ঠান শেষে সবাই দ্রুত বিশ্রামে যান। ফলে বিদ্যুৎ বিলও তুলনামূলকভাবে কম আসে।
৯. মশার ঝামেলা নেই
শীতকালে মশা কম থাকায় মশারি টানানো বা স্প্রে করার বাড়তি ঝামেলা থাকে না। অতিথি ও নবদম্পতিরা নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারেন।
১০. জম্পেশ হানিমুন
শীতকাল ঘোরাঘুরির জন্য আদর্শ সময়। নবদম্পতিরা এই সময়ে আবহাওয়া উপভোগ করতে পারেন এবং দেশি-বিদেশি পর্যটনকেন্দ্রে আকর্ষণীয় কাপল প্যাকেজও পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, আয়োজনের স্বাচ্ছন্দ্য, অতিথি আপ্যায়ন, সাজসজ্জা ও রোমাঞ্চ—সব দিক থেকেই শীতকালই বিয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



