সাইফুল ইসলাম : সম্প্রতি তীব্র তাপদাহ ও ঘন ঘন লোডশেডিং পরিস্থিতিতে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সঙ্গীতশিল্পী মমতাজ বেগমের একটি পুরোনো বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া বক্তব্যটি বেশ কয়েকবছর আগে তিনি সংসদে দিয়েছিলেন। পুরোনো এই বক্তব্যের ভিডিও নিয়ে ট্রল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানাভাবে প্রচার করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। বিষয়টি নজরে আসলে এ নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেছেন কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি।
মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে মমতাজ বেগম ১২ মনিটি ১২ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তায় তার সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান সময়ে বিদুৎ নিয়ে সাময়িক একটি কষ্টের মধ্যে সারা দেশের মানুষ পড়েছেন। সবাই কষ্টের মধ্যে আছেন। সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধ্যমগুলোতে আলোচনা-সমালোচনা ও প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। সেই বিষয় নিয়ে দুটি কথা বলতে চাই। আমি যেহেতু সংসদ সদস্য, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় কি কাজ করেছি, কি কাজ করা বাকি আছে, এই সব কিছু বলার জায়গা হলো সংসদ। আমি কতটুকু কাজ করতে পেরেছি, কোন কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে করেছি কি কি কাজ আমার করা উচিত এবং সেইগুলো চাওয়া এই সুবাদেই সংসদে অনেক বক্তব্য দেই। তার দু-একটি কথা ধরেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বিদুৎ থাকছে না। বিদুৎ এর এই কষ্টটা সবাই পাচ্ছি কম বেশি, সবার ঘরেই এ সমস্যা আছে এটা আসলে একটি সাময়িক সমস্যা ।
তিনি আরও বলেন, সরকার চেষ্টা করছে আপনারা জানেন, গতকাল বিদুৎ প্রতিমন্ত্রী কথা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংসদে আলোচনা হচ্ছে। এই সাময়িক সমস্যাটা কাটিয়ে তুলে, বিদুৎতের একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে চেষ্টা চলছে। আমি বলে ছিলাম সংসদে আপনারা জানেন, সরকার যে হারে বিদুৎ উৎপাদন করছে এবং যে হারে বিদুৎতের লাইন দিয়েছে সত্যিকার অর্থে এটা প্রশংসা কুড়িয়েছে। আর সেই প্রশংসাটাই আমি করেছি, আমার নির্বাচনি এলাকায় ৩০ ভাগ মানুষের ঘরে বিদুৎ ছিলো এক সময়, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর শত ভাগ মানুষের ঘরে বিদুৎ দিয়েছি।
মমতাজ বলেন, এক সময় এলাকায় গেলে গ্রামের মা-বোনেরা এসে বলতো কিছুই চাই না বিদুৎতের লাইন দেন আমাদেরকে মিটার দেন, সেই সংকট কিন্তু আমরা মোকাবিলা করেছি। লোকজন বলে স্বাধীনতা পরবর্তি সময় যে উন্নয়ন হয়নি সেই উন্নয়ন এই সরকারের আমলে হয়েছে। সেই জন্য আমি সংসদে বলে ছিলাম, যেভাবে বিদুৎতের উন্নয়ন হয়েছে, ঘরে ঘরে বিদুৎ দিয়েছি, সত্যিকারে এখন কিন্তু গ্রামে গেলে আর বলে না আপা দুইটা মিটার দেন। আসলেও এখন মিটার দেওয়ার জায়গা খুজে পাওয়া যায় না, এটাই কিন্তু বাস্তব, সেই জন্যই সংসদে এই কথা বলা হয়েছিলো। সেই কথাটাকে ভুল ব্যখ্যা দিয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করে অসাধু লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলার চেষ্টা করছে। আমি তাদেরকে বিনীতভাবে বলবো, সঠিক সময়ে সঠিক কথা বলেছি,আমার কাছে তার সত্যতা আছে। সাময়িক এই সমস্যা সৃষ্টি হবে এটা আমি আপনি কেউ কিন্তু জানতাম না।
আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে, আমাদের বিদুৎতের খরচ কিভাবে কমানো যায়,সমস্যা সকলকেই নিয়েই মোকাবিলা করতে হবে । দোষারোপ করে একে অপরের গায়ে কাদা ছুড়াছুড়ি করে লাভ নেই ক্ষতি হবে অশান্তি হবে। আমি ফেইজবুকে ঢুকে দেখি, মমতাজের বাড়ি ঘেড়াও করা হয়েছে, কেন বিদুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এই যে প্রোপাগান্ডা এই যে মিথ্যাচার এগুলা কি আপনাদের বিবেককে একটুও নাড়া দেয় না। শুধু শুধু একটি মানুষের বিরুদ্ধে কেন আমরা মিথ্যাচার করছেন, আপনারা বিবেকবান মানুষ আপনাদের বিনীতভাবে বলছি এই ধরণের মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকবেন। একটু ধৈর্য ধরুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন, আল্লাহ যেন আমাদের খুব দ্রুত এই কষ্ট থেকে মুক্ত করবেন বলেও উল্লেখ করেন এই সংসদ সদস্য।
অনেকেই এমপি মমতাজের প্রশংসা করে এই ফেসবুক লাইভের কমেন্ট বক্সেও বিভিন্ন মন্তব্য করলেও সমালোচনা ও কটাক্ষ করেছেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী।
মনসুর হেলাল নামের এক ব্যক্তি কমেন্টে লেখেন, আপনার অমূল্যবান বক্তব্য তাড়াতাড়ি শেষ করুন না হলে কারেন্ট চলে যাবে পরে আবার আপনাকে দেখা যাবে না অন্ধকারে।
মো: ইমরান হোসেন নামের আরেক জন লেখেন, বিদ্যুৎ আপা আপনার সব কথাই বুঝলাম আমার একটা কথা আপনি বলেন আমরা যখন বিদ্যুৎ চালায় মাস শেষ হলে আমরা বিদ্যুতের টাকাটা দিয়ে দিই এই টাকাটা যায় কোথায় এটা একটু জানান তো আমাদেরকে কয়লা আনতে পারতেছেন না টাকার জন্য।
আরিফুল ইসলাম নামের একজন লেখেন, আওয়ামী লীগের একমাত্র অজুহাত ইউক্রেন -রাশিয়ার যুদ্ধ, অথচ ইউক্রেনেও কারেন্ট আছে এবং রাশিয়াতেও কারেন্ট আছে। নেই শুধু বাংলাদেশে।
মো: মিন্টু হোসেন লেখেন, আমি যখন আপনার ভিডিও দেখছি।তখনও আমার ঘড়ে বিদ্যুৎ নাই আপা। খুব কষ্ট হচ্ছে গরমে।
তবে আশা করছি,আল্লাহ পাকের ইচ্ছায়, এই দূরাবস্থা থেকে শীগ্রই জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উদ্ধার করবেন,ইনশাল্লাহ। জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু।
তোফায়েল আহমেদ লিটন লেখেন, হরিরামপুর সিংগাইরের উন্নয়নের রুপকার প্রিয় নেত্রী মমতাজ বেগম এম পি, আপনার জন্য শুভ কামনা সবসময়।
ফেসবুকে ভক্ত-সমালোকচকদের কমেন্টের কোন জবাব দেননি মমতাজ বেগম। বিষয়টি নিয়ে মমতাজ বেগমের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।