Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home মুঘল সম্রাটরা রোজা ও ইফতার পালন করতেন যেভাবে
    আন্তর্জাতিক

    মুঘল সম্রাটরা রোজা ও ইফতার পালন করতেন যেভাবে

    Saiful IslamApril 10, 20249 Mins Read
    Advertisement

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৩০০ বছর ধরে ভারত শাসন করা মুঘল সাম্রাজ্যের সময় রোজার চাঁদ উঠলে ১১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে তা ঘোষণা দেয়া হতো।

    মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ বাবরের ‘তুজক-ই-বাবরি’ ডায়েরিতে লেখা আছে যে বাবর রোজা রাখতেন এবং নামাজও বাদ দিতেন না।কিন্তু তিনি ছিলেন মদ ও মাজুন (গ্রীক মিশ্রণ) প্রেমী।

    সেই ডায়েরির এক জায়গায় বাবর লেখেন, আমি সন্ধ্যায় পাইজাদীতে পৌঁছলাম, কাজীর বাড়িতে ইফতার করলাম এবং পরে মদের আসর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলাম, কিন্তু কাজী নিষেধ করলেন। কাজীর প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আমি মদের আসর আয়োজনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলাম।

       

    এই বইয়ে বাবরের নফল রোজা রাখার ইতিহাস সম্পর্কেও জানা যায়।

    ফররুখ বেগ ১৫৮৯ সালে ‘তুজক-ই-বাবরি’-এর সচিত্র সংস্করণ প্রস্তুত করেছিলেন। তার মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে শাহেনশাহ বাবর ১৫১৯ সালে শেষ রোজা উদযাপনের পর মদ্যপ অবস্থায় ঘোড়ার পিঠে চড়ে ক্যাম্পে ফিরছিলেন।

    তার পেছনে চাকররা তাকে অনুসরণ করছিলেন। তার মধ্যে একজনের হাতে ছিল হারিকেন, আরেকজনের হাতে ছিল মদের বোতল।

    তুজক-ই-জাহাঙ্গিরী বা জাহাঙ্গিরনামা প্রকাশিত হয় তার রাজত্বের ত্রয়োদশ বছরে। সেখানে দেখা যায়, জাহাঙ্গির রমজানে রোজা পালন করতেন এবং স্থানীয় ওলামা ও সৈয়দদের সঙ্গে ইফতার পালন করতেন।

    জাহাঙ্গির ওলামাদের মাধ্যমে গরীবদের মধ্যে দান-খয়রাত করতেন। একবার ব্যক্তিগতভাবে তিনি পঞ্চান্ন হাজার রুপি, এক লাখ নব্বই বিঘা জমি, চৌদ্দটি গ্রাম এবং দরবেশদের মধ্যে চাল বহনকারী এগারো হাজার খচ্চর বিতরণ করেছিলেন’।

    ‘আমির’ (সম্রাটের প্রতিনিধি)রাও তখন ইফতারের আয়োজন করতেন। সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলে মুঘল সালতানাতের একজন সেনাপতি ছিলেন মুবারজ খান। তার সময়ে রমজান মাসে তার একটি সামরিক অভিযানও পরিচালিত হয়েছিল।

    রমজানে প্রতিদিন একে অপরের শিবিরে খাবার পাঠাতেন। যেটি মুঘলদের ঐতিহ্য ছিল। রমজানের শেষ দিনে (৩০ রমজান ১০২০ হিজরি বা ৫ ডিসেম্বর ১৬১১) মুবারজের শিবিরে ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। তখন অনেক বড় একটি উৎসব পালিত হয়েছিলো। রোজাদাররা চাঁদ দেখে রোজা শেষ করলো। পরে তোপধ্বনির মাধ্যমে উৎসবের জানান দেওয়া হয়েছিলো।

    ‘বাহারিস্তান-ই-গাবি’ বইয়ে মির্জা নাথুন লিখেছেন এই ঘটনাটি ভূমিকম্পের মতো চারদিককে প্রকম্পিত করেছিলো।

    মোহাম্মদ সালেহ কাম্বোহ লাহোরির বই ‘আমল-ই-সালাহ’ অনুযায়ী ১৬২১ সালে মদ ছেড়ে দেওয়ার পর, যুবরাজ খুররম বাংলা ও বিহারে তার শাসনামলে রমজানের সব রোজা পালন করেছিলেন।

    মির্জা নাথুন বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, তখন প্রচণ্ড তাপে মানুষ ও পশুপাখির খুব অসুবিধা হচ্ছিলো এবং খুব কম মানুষ রোজা রাখতে পারতো। প্রচণ্ড গরম থাকা সত্ত্বেও প্রিন্স রোজা রেখেছিলেন’।

    মনিস ডি ফারুকি ‘দ্য প্রিন্সেস অফ দ্য মুঘল এম্পায়ার’ বইয়ে লিখেছেন, শুধু মির্জা নাথুনই যুবরাজ খুররাম দ্বারা প্রভাবিত ছিলেনই না, একই কারণে জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে বাংলার বিপুল সংখ্যক সুফি ও ওলামা তাকে সমর্থন করেছিলেন।

    যখন খুররম শাহজাহান হন, তখন মুসলমানদের সকল উৎসব রাজকীয় জাঁকজমকের সাথে পালিত হতে থাকে।

    শাহজাহানের শাসনামলে মুঘল সালতানাত তুঙ্গে ছিল। সালমা ইউসুফ হোসেনের একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, তখনকার খাবারগুলো ছিল রঙিন ও সুস্বাদু এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের খাবার থেকে অনেকটাই আলাদা।

    তখন এটি একটি প্রথা ছিল যে খাওয়ার আগে সম্রাট দরিদ্রদের জন্য খাবারের একটি অংশ আলাদা করে রাখতেন। সম্রাট দোয়ার মাধ্যমে খাবার শুরু ও শেষ করতেন।

    ডক্টর মোবারক আলী লিখেছেন, সম্রাট আকবর থেকে শাহজাহান পর্যন্ত সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ উৎসব ছিল নওরোজ।

    তবে আওরঙ্গজেবের সময় এটি পাল্টে যায়। তখন, উভয় ঈদই নওরোজের চেয়ে বেশি জাঁকজমপূর্ণভাবে উদযাপন শুরু হয়।

    পরে আলমগীর (আওরঙ্গজেব) রাজ আসনে বসার পরপরই নওরোজ উৎসব বন্ধ করেন। এর পরিবর্তে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা ও রমজানের দিনগুলোতে ইফতার উদযাপনকে অধিক গুরুত্ব দেন।

    তিনি ঈদকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন কারণ তিনি সিংহাসনে বসেছিলেন রমজান মাসে। আওরঙ্গজেব তার রাজ্যভিষেক ঈদ পর্যন্ত বাড়িয়ে একসঙ্গে উদযাপন করেছিলেন।

    নামাজ এবং রোজা পালনের বিধিবিধানগুলো কড়াকড়িভাবে পালন করতেন আওরঙ্গজেব। তিনি সবসময় জামাতে নামাজ পড়তেন, তারাবি নামাজ পড়তেন এবং রমজানের শেষ দশকে ইত্তেকাফে (মসজিদে দিন রাত থাকা) বসতেন।

    একইভাবে, তিনি সপ্তাহে তিন দিন সোমবার, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার রোজা রাখতেন। দিনরাত মিলিয়ে তিনি মাত্র তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন।

    পর্যটক বার্নিয়ার লিখেছেন, আওরঙ্গজেব যখন দিল্লিতে পৌঁছান তখন জুন মাস ছিল এবং খুব গরম ছিল। আওরঙ্গজেব এই গ্রীষ্মেও পুরো রমজানজুড়ে রোজা রাখতেন। রোজা পালন অবস্থায় তিনি সব সরকারি কাজ করেছেন। সন্ধ্যায় ইফতারে তিনি জোয়ার এবং ভুট্টার রুটি খেতেন। এরপর তারাবি আদায় করতেন এবং রাতের বেশিরভাগ সময় নামাজে কাটাতেন।

    আওরঙ্গজেবের পর মুঘল শাসনামলের পতনের শিকার হয়। শেষ মুঘল সম্রাট বৃটিশদের বৃত্তি নিয়ে চলতো কিন্তু তারপরও রমজান পালিত হতো ব্যাপক আড়ম্বরে।

    মুন্সী ফয়জুদ্দিন দেহলভী তার ‘বাজমে আখির’ গ্রন্থে চাঁদ দেখা যাওয়ার সময়ের কথা বর্ণনা করেন। সেখানে তিনি বলেন, সেই সময় সমস্ত বেগম, হারেমের দাসী সবাই মিলে গান গাইতো। মহিলা, রাজকুমারী এবং রাজকন্যারা তাদের অভিনন্দন জানাতে আসেন। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে সবাই স্বাগত জানাতো।

    এই অভিনন্দন আর উৎসব রাজার বাড়ি থেকে শুরু করে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়তো।

    রোজার চাঁদ ওঠার উদযাপনের পরেই তারাবির আয়োজন শুরু হতো। রাতে এশার আজানের পর নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হতো। বাদশাহর সেবক সকর্তবার্তা উচ্চারণ করে জানাতেন বাদশাহ নামাজে আসছে। বাদশাহ নামাজের স্থানে আসতেন। সবাই সারিবদ্ধভাবে নামাজে দাঁড়াতেন।

    ইমাম দেড় পাড়া পড়তেন তারাবি নামাজে। বাদশাহ নামাজ শেষ করে ঘরে এসে বসে কথাবার্তা বলতেন, হুক্কা খেতেন ও পরে বিশ্রামে যেতেন।

    ফয়জুদ্দিন মুঘল দরবারে সেহরির বিবরণও তুলে ধরেছেন তার লেখনিতে। তিনি লিখেছেন, রাতের দেড় ঘণ্টা বাকি থাকা অবস্থায় প্রাসাদের ভেতরে ও বাইরে সেহরির জন্য ডাকা হতো। তখন জামে মসজিদে সেহরির প্রথম ডাকা শুরু হতো।

    এটাই ছিলো সেহরির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এরপর টেবিলে একটি কাপড় বিছিয়ে দেয়া হতো যেটির নাম দস্তরখান। পরে বাদশাহ টেবিলে রাজা সেহরি স্পেশাল (বাদশাহ’র জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা সেহরি) খেতেন।

    সেখানে সাধারণ দিন ও বিশেষ দিনে পার্থক্য ছিলো। সেহরির বিশেষ দিনে এমন কিছু খাবার রান্না করা হতো যা অন্য দিনে রান্না করা হতো না।

    ‘চাপাতিস, ফুলকাস, পরাটা, রুগনি রুটি, বিরি রুটি, বেসানি রুটি, খামিরি রুটি, নান, শিরমাল, গাভ দিদা, গাভ জাবান, কুলচা, বাকর খানি, গাউসি রুটি, বাদাম রুটি, পেস্তা রুটি, চালের রুটি, গাজর নান খাতাই, মিসরি রুটি, নান পাম্বা, নান গুলজার, নান কামাশ, নান টুঙ্কি, বাদাম নান খাতাই, পিস্তা নান খাতাই, খেজুর নান খাতাই’।

    এগুলো ছিল রুটির বিভিন্ন আইটেম। এছাড়াও পোলাও অন্যান্য ভাতের খাবার ছিলো।

    সেগুলো- ‘ইয়াখনি পোলাও, মতি পোলাও, নূর মাহালি পোলাও, নুকতি পোলাও, কিসমিস পোলাও, নার্গিস পোলাও, জামুরদি পোলাও, লাল পোলাও, মুজাফ্ফর পোলাও, ফলসাই পোলাও, আবি পোলাও, সুনেহরি পোলাও, রুপালি পোলাও, মুরগি পোলাও, কোফতা পোলাও, বিরিয়ানি পোলাও, চুলাভ, আস্ত ছাগল পোলাও, বুট পোলাও, শোলা, খিচুরি, কাবুলি, তেহারি, মুতঞ্জন’।

    এছাড়া জর্দা মুজাফফর, সেবাই, মান ও সালওয়া, ফিরনি, ক্ষীর, বাদাম ক্ষীর, কুমড়ার ক্ষীর, গাজরের ক্ষীর, কাংনি ক্ষীর, ইয়াকুটি, নমিশ, দুধের ডালমা, বাদাম ডালমা, সামোছা, শাক, খাজলে।

    সালান কোরমা, কালিয়া, দো পেয়াজা, হরিণের কোরমা, মুরগির কোরমা, মাছ, বুরহানি, রাইতা, শসার শরবত, পনিরের চাটনি, সিন্নি, আশ, দই, বেগুন ভর্তা, আলু। ছোলা ভর্তা, ছোলার ডাল ভর্তা, আলুর ডাল, বেগুনের ডাল, করলা ডাল, এসব ডাল বাদশা পছন্দ করতো।

    কাবাবের মধ্যে রয়েছে শিক কাবাব, শামি কাবাব, গলি কাবাব, ফিজেন্ট কাবাব, কোয়েল কাবাব, নুকতি কাবাব, লাভজাত কাবাব, খাতাই কাবাব, হুসাইনি কাবাব।

    হালুয়ার মধ্যে রয়েছে রুটির হালুয়া, গাজরের হালুয়া, কুমড়ার হালুয়া, ক্রিম হালুয়া, বাদাম হালুয়া, পেস্তার হালুয়া, কমলার হালুয়া।

    ছিলো নানা ধরনের মোরব্বা। মোরব্বার মধ্যে রয়েছে আম মোরব্বা, আপেল মোরব্বা, বি মোরব্বা, করলা মোরব্বা, রাংতারে মোরব্বা, লেবু মোরব্বা, আনারস মোরব্বা, হিবিস্কাস মোরব্বা, বাদাম মোরব্বা, কুকুরন্ডা মোরব্বা, বাঁশ মোরব্বা।

    এসব আচার ছাড়াও মাউথ ফ্রেশনার, মিষ্টি, পেস্তার নির্যাস, পোস্ত, পপির নির্যাস, মিষ্টির রং, কাস্টার্ড আপেল, পেয়ারা, জামুন, ডালিমসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল।

    আর গম দিয়ে তৈরি মিষ্টি হালুয়া, পাপড়ি, আঠা, হাবশি লাড্ডু, মতিচুর, মুগ, বাদাম, পেস্তা। মুগ, দুধ, পেস্তা, বাদাম, জাম, পিঠা, পিস্তা মাগাঝি, ইমারতি, জালেবি, বরফি, ফেনী, কালাকান্দ, মতি পাক, দার-বহিষ্ট, বালুশাহীও ছিলো খাদ্য তালিকায়।

    সকালের কামান বেজে উঠতো। বাদশাহ কুলি করার আগে শেষ টান দিতেন হুক্কায়। এরপর রোজার নিয়তে সব কিছু খাওয়া বন্ধ থাকতো। নিয়তের মাধ্যমে শুরু হতো রোজা।

    সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায়, দরগায় গিয়ে সালাম, বাইরে ঘোরাফেরা, প্রাসাদে মানুষের কিছু অভিযোগ শুনতেন এরপর বিকেলে বিশ্রাম নিয়েই সারাদিন কেটে যেতো। ইফতারের জন্য প্রস্তুতি শুরু হতো ৩টায়।

    তিনটা বাজে। প্রাসাদে তন্দুর গরম করা হচ্ছে। রাজার জন্য সিংহের পায়ের আকৃতির একটি চেয়ার, পেছনে সোনার ফুল এবং পাতাসহ একটি নরম মখমলের গদি বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে তন্দুর ভাজা হচ্ছে সেটির সামনে রাখা চেয়ারটি। প্রাসাদের বেগম, হারেমের দাসী ও রাজকন্যারা নিজ হাতে তন্দুরে বসনি, রুগনি, মিষ্টি রুটি, কুলছা সাজিয়ে রাখতো। রাজা বসে বসে তা দেখতেন।

    বিশটি লোহার গরম চুল্লি, হাঁড়িতে শব্দ করে পছন্দের জিনিস রান্না চলছে। টিপাটি- মেথির পাতা প্রস্তুত। সবুজ মরিচ, মতিয়া ফুলের সবুজ অংশ, বেগুনি ও বিভিন্ন ভর্তার জন্য প্রস্তুতি।

    কোনটিতে ভাদা, ফুলকি, পুরি, শামি কাবাব ভাজা হচ্ছে। কোথাও শিক কাবাব, হুসেনি কাবাব, টিক্কা কাবাব, নান গাজরের কাঠিসহ নানান জিনিস রান্না চলছে।

    আসরের নামাজের পর শুরু হতো রোজা ভাঙ্গা বা ইফতারের চূড়ান্ত প্রস্তুতি।

    ফয়জুদ্দিন লিখেছেন, একদিকে গ্লাস, বাটি, কাপ, চামচ রাখা হতো। চামচগুলো রাখা হতো হাড়ির মধ্যে। আরেকদিকে কলস ও বয়াম (পানীয়ের পাত্র), এবং ছোট কাপ থাকতো। সবার ওপরে পরিস্কার পাত্রে খাবারগুলো রাখা হতো।

    সব শাকসবজি, শুকনো ফল ইত্যাদি এনে রাখা হতো। সবগুলো ফলের খোসা ছাড়ানো হতো। কোনোটা কোন কিছুর মিশানো ছাড়াই পরিবেশন করা হতো। কোনটিতে কাঁচা মরিচ, কোনটিতে মুগ ডাল, কোনোটা থাকতো কাঁচা, কোনটি আবার সিদ্ধ করা থাকতো। কোনটি শুকনা মরিচ আবার কোনটি কালো মরিচ দিয়ে প্রস্তুত করা হতো।

    ভাজা মুগ, ছোলার ডাল, বেসন ভার্মিসেলি, নুকটিয়া, ভাজা পেস্তা, বাদাম, পেস্তার সাথে বাদাম, খেজুর, কিসমিস ইত্যাদি প্লেটে প্লেটে সাজানো থাকতো। আঙ্গুর, ডালিম, ফালুদা, শুকনো ফলের শরবত, লেবুর শরবত, থাকতো গ্লাসে সাজানো।

    ইফতারের সময় হয়ে গেলে, বাদশাহ নির্দেশ দিতেন হেরাল্ডরা পতাকা দোলাতেন, শুরু হতো তোপধ্বনি। এরপর হতো আজান। এটা আনন্দের সময়। চারিদিকে দারুণ এক পরিবেশ। প্রথমে জমজমের পানি, ভুট্টা বা খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙতেন সম্রাট। তারপর শরবতের গ্লাস হাতে নিয়ে চামচ দিয়ে গুলিয়ে শুরু হতো শরবত পান। তৃঞ্চার্ত কেউ গ্লাস মুখে নিয়ে শরবত পান করতো। ডাল, সবজি, ড্রাই ফ্রুটসও খাওয়া চলতো খানিকটা।’

    তৃপ্তি নিয়ে কিছুটা সময় খাওয়ার পর মাগরিবের নামাজ হতো। নামাজের পরও খানাপিনা চলতো।

    রমজানের শেষ শুক্রবার জুমাতুল বিদার প্রস্তুতি চলে।

    ফয়জুদ্দিন লিখেছেন, বাদশাহ হাতিতে চড়লেন। জামে মসজিদের সিঁড়ির কাছে কাহাররা হাওদার (পালকি) হাতির সমান করে রাখা থাকতো। বাদশাহ হাওদারে চড়ে জামে মসজিদে ঢুকতেন। ট্যাঙ্কের কাছে এসে তিনি হাওয়াদার থেকে নামলেন। এরপর বিশেষ সেবক দল তাকে মসজিদের একদম ভেতরে নিয়ে যেতেন। তার পেছনে থাকতো রাজপুত্র এবং প্রাসাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তারা সাজ-সজ্জা ও সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করতেন।

    ইমামের পিছনে রয়েছে বাদশাহের জায়নামাজ। বাম পাশে যুবরাজের জায়নামাজ, ডান পাশে রাজপুত্রদের। রাজা, যুবরাজ এবং রাজপুত্ররা এসে নিজ নিজ গায়ে বসলেন। ইমাম সাহেবকে খুতবার নির্দেশ দেওয়া হলো। ইমাম মিম্বরে (বিশেষ স্থানে) দাঁড়ালেন। ইমাম তরবারির ওপর হাত রাখলেন। খুতবা পড়া শুরু করলেন। খুতবায় ইমাম আগের সম্রাট ও বর্তমান সম্রাটের নাম বলতেন।

    তখন তোশাখানার পরিদর্শক ইমামকে খেলাত (বিশেষ পোশাক) পড়ানোর নির্দেশ দেয়া হতো।

    তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ করা হলো। ইমাম তার নিয়ত করলেন। সবাই ইমামের সাথে তার নিয়ত করলেন। বাদশাহ ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করলেন। পরে বাকি নামাজ আদায়ের পর সম্রাট আসর শরীফে গেলেন। যেখানে মসজিদ যেখানে পবিত্র জিনিসপত্র রাখা হয়। জিয়ারত শেষে তিনি দুর্গে ফিরে এলেন।

    উনত্রিশ রোজা আসলে সবার দৃষ্টি থাকতো আকাশের দিক। যদি চাঁদ দেখা যায়। যদি চাঁদ দেখা যেতো কিংবা দেখা গেছে বলে কেউ সাক্ষী থাকতো চারিদিকে দারুণ আনন্দ শুরু হতো। এদিন চাঁদ দেখা না গেলে পরের দিন অর্থাৎ ত্রিশতম রোজার সন্ধায় উৎসব শুরু হয়ে যেতো।

    ঈদের চাঁদ উঠলে রাজ দরবারের দরজার সামনের ২৫ বার তোপধ্বনি দেয়া হতো। চলতো আনন্দ আর গান আয়োজন। সূত্র : বিবিসি বাংলা

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    আন্তর্জাতিক ইফতার করতেন পালন মুঘল যেভাবে রোজা সম্রাটরা
    Related Posts
    এ বছরের শেষে নতুন চমক দেখাবে ইরান

    এ বছরের শেষে নতুন চমক দেখাবে ইরান

    September 24, 2025
    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনার্ড ট্রাম্প

    জাতিসংঘের সম্মেলনে জাতিসংঘকে ধুয়ে দিলেন ট্রাম্প

    September 24, 2025
    Trump

    জাতিসংঘের দরকার নেই : ডোনাল্ড ট্রাম্প

    September 23, 2025
    সর্বশেষ খবর
    top 10 scholarships in the world for meritorious students

    Top 10 Global Scholarships for Meritorious Students: Fully Funded Programs, Eligibility, and How to Apply

    পুলিশ

    আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ পাচ্ছে ৪০ হাজার বডিক্যাম

    AI career growth future of work

    Artificial Intelligence Drives Future of Work: Career Growth, Job Skills, and Professional Development in the Age of AI

    AI-proof future careers

    Experts List 10 Careers Most Resistant to AI Disruption

    Jimmy Kimmel returns

    Jimmy Kimmel Guest Tonight: Glen Powell and Sarah McLachlan on ABC Return Episode

    Explosion so loud ears hurt oslo

    ‘Explosion So Loud, Ears Hurt’: What Happened in Oslo Blast With Grenade Found by Norway Police?

    Celeste Rivas birthday claim debunked

    Why Hasn’t D4vd Been Arrested After Celeste Rivas’ Body Was Found?

    Dancing with the stars songs this week

    Dancing with the Stars Songs This Week: Full List for Week 2 (Season 34)

    Celeste Rivas D4vd

    D4vd Update: Teenager’s Decomposed Body Found in Tesla Linked to Singer

    Power of Veto

    Big Brother 27 Power Of Veto Results: Morgan Pope Wins Again

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.