জুমবাংলা ডেস্ক : কয়েক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী মুরগির বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারেও; তবে দাম চড়া দেশি মাছের। শুক্রবার (১৬ জুন) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগর, পুরান ঢাকার শ্যামবাজার ও বংশাল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।
কয়েক মাস ধরেই অস্বস্তিতে নিত্যপণ্যের বাজার। আজ মুরগির দাম বাড়ে তো কাল সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের। তবে বাজারে অবশেষে কমতে শুরু করেছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে শাকসবজির দাম।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৬০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, ঢ্যাঁ ড়শ ৪০ টাকা আর শসা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ঝাঁজ কমেনি দেশি পেঁয়াজের; বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। পাশাপাশি এবার অতিবৃষ্টি না হওয়ায় ফসল নষ্ট হয়নি। এতে দাম কিছুটা কম। আর ক্রেতারা জানান, সবজির দাম কমায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। তবে দাম আরও কমলে ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে আসবে।
আনোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এখনও সবজির যা দাম, সেটিও আমাদের মতো মধ্যবিত্তের জন্য অনেক বেশি। দাম আরও কমলে ভালো।’
এদিকে, সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকা। এছাড়া সোনালি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। মূলত বাজারে মুরগির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতির দিকে।
বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর এখনও বাড়েনি গরু ও খাসির দাম। এছাড়া বাজারে প্রতি ডজন সাদা ডিম ১৩৫ টাকা ও লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়।
ঊর্ধ্বমুখী দেশি মাছের বাজার। বাজারে প্রতিকেজি দেশি মাগুর ১ হাজার ২০০ টাকা, দেশি শিং ১ হাজার ৪০০ টাকা, শোল ১ হাজার টাকা, নদীর আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং নদীর পাঙাশ ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিকেজি টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৩০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৮০০, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
ক্রেতারা জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ পর্যাপ্ত; কিন্তু দাম অনেক বেশি। আসগর নামে এ ক্রেতা জানান, ‘বাজারে ২০০ টাকার নিচে কোনো মাছ নেই। আর নদীর মাছের দাম তো আকাশছোঁয়া।’
বিক্রেতারা বলেন, এ সময় বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ কম থাকে। তাই দাম একটু চড়া। কিন্তু বর্ষা শুরু হলে খাল-বিলের মাছ আসতে শুরু করলে দাম কমবে।
বাজারে কিছুটা স্থিতিশীল মসলার বাজার। তবে ঈদের আগে দাম বাড়ার আশঙ্কা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলেন, ঈদ উপলক্ষে এখন থেকেই মসলার দাম বাড়াতে শুরু করেছেন দোকানিরা। আর বিক্রেতারা জানান, জিরা ছাড়া এখনও বাড়েনি অন্যান্য মসলার দাম।
রাকিব নামে এক বিক্রেতা বলেন, জিরার দামটাই একটু বেশি। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। ঈদের পর দাম কমতে পারে। তবে অন্যান্য মসলার দাম তেমন বাড়েনি।
বাজারে নিম্নমুখী আদা ও রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ৩৫০ টাকা ও প্রকারভেদে প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে।
শ্যামবাজারের মেসার্স রাইয়ান এন্টারপ্রাইজের মালিক মাণিক সাহা বলেন, ‘আমদানি বাড়ায় দাম কমছে। তাছাড়া আদা ও রসুন পচনশীল কাঁচামাল। এসব মজুত করে লাভ নেই। পেঁয়াজ আমদানির খবরে অসাধু ব্যবসায়ীরা আদা ও রসুনের দাম কমিয়ে দিয়েছে।’
এদিকে ,নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।
শরীর গরম করে দেবার মত ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না
আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছে করে দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।