বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী হিসেবে ৫৬ বিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বেতন নেন ইলন মাস্ক। শেয়ারহোল্ডাররা এই বেতন দিতে রাজি না হলে টেসলা থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন বলে সর্তক করেছেন কোম্পানিটির চেয়ারম্যান রবিন ডেনহোম। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
২০১৮ সালে ইলন মাস্কের পারিশ্রমিক ৫৬ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার নির্ধারণ করে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ডেলাওয়ারের এক আদালত এই বেতন-ভাতা অতিরিক্ত বলে খারিজ করে পরিচালনা বোর্ডকে বেতনের নতুন চুক্তি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। আদালত বলেন, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ মাস্কের এই বিপুল পরিমাণ অর্থের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে এই অঙ্কের বেতন না পেলে মাস্ক ‘অন্য জায়গায়’ চলে যেতে পারেন।
বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে রবিন ডেনহোম বলেন, ‘এটি মার্কিন করপোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পারিশ্রমিক চুক্তি। এটি ‘‘অবশ্যই অর্থের বিষয় নয়’’ কারণ ফলাফল যাই হোক না কেন, মাস্ক পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি থাকবেন।’
ভোটের রায় বিরুদ্ধে গেলে মাস্ক কোম্পানি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন বা টেসলায় কম সময় ব্যয় করতে পারেন।
মাস্ক তাঁর সময় রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক কোম্পানি এক্সএআই ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সেও (সাবেক টুইটার) ব্যয় করতে পারেন। টেসলার ওপর মাস্কের মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টেসলার কিছু বিনিয়োগকারী।
এক্সে মাস্কের ১৮ কোটি ৬০ লাখ ফলোয়ার রয়েছেন। এই প্ল্যাটফরমে মাস্কের আচরণ টেসলার বিনিয়োগকারীর রস গারবারকেও বিরক্ত করেছে। তিনি বলেন, তাঁর আচরণ ব্র্যান্ডকে (টেসলা) ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
চিঠিতে রবিন ডেনহোম আরও বলেন, ২০১৮ সালের চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল টেসলার ওপর ইলনের মনোযোগ নিবদ্ধ রাখা এবং কোম্পানির অতুলনীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জনে অনুপ্রাণিত করা। টেসলায় ইলনের মনোযোগ ধরে রাখতে ও কোম্পানিতে সময়, শক্তি ব্যয় করার জন্য তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে চাইলে এই চুক্তি পরিবর্তন করা যাবে না।
মাস্কের সম্পদ নিয়েও চিঠিতে বলা হয়, বিষয়টি স্পষ্টতই অর্থ সম্পর্কে নয়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি হলেন ইলন মাস্ক এবং ২০১৮ সালে মাস্ককে টেসলা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা প্রত্যাহার করলেও তিনি ধনীই থাকবেন।’
এই চুক্তির মাধ্যমে মাস্ক যে শেয়ার পাবেন, তা বিক্রির জন্য তাঁকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে।
ব্লুমবার্গ বলছে, মাস্কের সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
গত মাসে, শেয়ারহোল্ডারদের এই বেতন প্যাকেজের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সুপারিশ করেছে শীর্ষ উপদেষ্টা সংস্থা আইএসএস। আরেকটি উপদেষ্টা সংস্থা গ্লাস লুইসের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
তবে বেতন প্যাকেজটিকে সমর্থন করার পরিকল্পনা করছে টেসলার শীর্ষ বিনিয়োগকারী বেইলি গিফোর্ড। মার্কিন পাবলিক পেনশন তহবিল ক্যালপারস ও শীর্ষ ২৫ শেয়ারহোল্ডার এর বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
মাস্ক টেসলার প্রায় ১৩ শতাংশের মালিক। কিন্তু তার শেয়ার ভোটের জন্য গণনা করা হবে না। এই ভোট অবশ্যই টেসলার শেয়ারের সংখ্যাগরিষ্ঠ হতে হবে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাস্কের ভাই কিম্বলের মালিকানাধীন নয় এমন শেয়ার ভোট হিসেবে গণনা করা হবে না।
মার্কিন স্টক ব্রোকার ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস বলেছেন, মাস্ক ‘কোথাও যাচ্ছেন না’, তবে সিইও বা প্রধান নির্বাহী পদ থেকে সড়ে দাঁড়াতে পারেন ও এবং ভোট তাঁর বিপক্ষে গেলে টেসলার সঙ্গে জড়িত হবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।