জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাগেরহাটের রামপালে একটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতে ৩০০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। যৌথভাবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে সৌদি আরবের অ্যাকওয়া পাওয়ার কোম্পানি এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেড’ ও ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং লিমিটেড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও) ভিত্তিতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হবে। আইপিপি হিসেবে ‘নো পাওয়ার, নো পেমেন্ট’ শর্তে ২০ বছর মেয়াদে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার নির্ধারণ করা হয়েছে দশমিক ১০২০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ টাকা ৭ পয়সা। সে হিসাবে কেন্দ্রটি থেকে ২০ বছরে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭৬১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর সৌদি আরবের জয়েন্ট স্টক কোম্পানির তালিকাভুক্ত অ্যাকওয়া পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারকে সই করে বিপিডিবি। সেই সমঝোতা স্মারকের আওতায় ওই বছর ২৬ ডিসেম্বর রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টসংলগ্ন বিপিডিবির জমিতে দেশীয় দু’টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ৩০০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দেয় সৌদি প্রতিষ্ঠানটি।
নির্মিতব্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে সৌদি প্রতিষ্ঠান অ্যাকওয়া পাওয়ার কোম্পানির শেয়ার হচ্ছে ৪৫ শতাংশ, বিপিডিবির ২৫ শতাংশ এবং দুই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের ১৫ শতাংশ করে ৩০ শতাংশ। প্রাথমিক প্রস্তাবে বিপিডিবিকে ১২ শতাংশ শেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব করা হলেও পরে আলোচনার মাধ্যমে তা বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রকল্প স্থান থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৩০ কেভি সুইচইয়ার্ড পর্যন্ত আনুমানিক দেড় কিলোমিটার ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন এবং ওই ২৩০ কেভি সুইচওয়ার্ডে দু’টি ২৩০ কেভি বে নির্মাণ করে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিতব্য বিদ্যুৎ ইভ্যাকুয়েট করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য স্পন্সর কোম্পনি নিজ খরচে ও নিজ উদ্যোগে পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও বে নির্মাণ, সাবস্টেশন নির্মাণসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যয় নির্বাহ করবে। এছাড়া, নির্মিতব্য বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে হওয়ায় সোলার প্যানেল রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। চুক্তি সম্পাদনের পর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার জন্য স্পন্সর কোম্পানি তিন বছর বা ৩৬ মাস সময় পাবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সার্বজনীন বিদ্যুৎসেবা দেওয়া এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও প্রসারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। চলতি অর্থবছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাময় উৎস সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ সৌর বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেখানে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এরই আলোকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।