আন্তর্জাতিক ডেস্ক : থাইল্যান্ডের বডি ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার পরে একজন গায়িকা এবং আরেকজন বিদেশি পর্যটকের মৃত্যুর পর আলোচনা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারা বডি ম্যাসাজের কিছু কৌশলের সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে সতর্ক করছেন।
সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, ২০ বছর বয়সী থাই গায়িকা চায়াদা প্রাও-হোম গত রবিবার উত্তর-পূর্ব উদন থানি শহরের হাসপাতালে মারা যান।
অক্টোবর থেকে তিনবার বডি ম্যাসাজ নিয়েছিলেন ওই গায়িকা। এরপর আকস্মিকভাবে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।
একইভাবে, ফুকেটের একটি পার্লারে ৪৫ মিনিট তেল মালিশ করার পরে ৫২ বছর বয়সী সিঙ্গাপুরের এক পর্যটকও মারা যান।
গায়িকা চায়াদা কাঁধের ব্যথার জন্য ম্যাসাজ নিয়েছিলেন।
মৃত্যুর আগের তিনি তিনবার ম্যাসাজ নিয়েছিলেন। যেটি সম্পর্কে চায়াদা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বডি ম্যাসাজের কারণেই তিনি শয্যাশায়ী হয়েছেন। তার শরীরে অসাড়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রতিটি বডি ম্যাসাজ সেশনের পর তার শরীর আরো দুর্বল হয়ে যায় বলেও তিনি জানান।
চায়াদা গত নভেম্বর মাসে জানান, ম্যাসাজের জন্য একটি পার্লারে গিয়েছিলেন তিনি। কিছুদিন পর নিজেকে একটি অনেকটা পঙ্গু অবস্থায় দেখতে পান তিনি। নিজের ডান হাত তুলতে অক্ষম হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি চাই আমার গল্পটি সবাই জানুক। যারা অনেক বেশি ম্যাসাজ করা পছন্দ করে তাদের জন্য এটি জানা জরুরি। এখান থেকে আমাকে ঘুর দাঁড়াতে হবে।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গায়িকার রক্তের সংক্রমণ এবং মস্তিষ্ক ফুলে গিয়েছিল, সে কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। অন্য কোনো কারণেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে কি না সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পার্লার এবং বডি ম্যাসাজ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক লাইসেন্স নিয়ে কাজ করছে।
এদিকে, একইভাবে সিঙ্গাপুরের পর্যটক লি মুন টুক ফুকেটের পাটং বিচে একটি পার্লারে বডি ম্যাসাজ নেওয়ার পরপরই মারা যান। পুলিশ বলেছে, বডি ম্যাসাজের সময় ওই পর্যটক ঘুমিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তিনি ব্যথায় কাতড়াতে থাকেন।
তার ক্ষেত্রেও ম্যাসাজ মৃত্যুর কারণ কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বডি ম্যাসাজের কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে ডা. চ্যাটপন কংফেংফুং বলেছেন, ‘অভিজ্ঞ কেউ ক্লায়েন্টকে বিপদে ফেলবেন না। ঘাড় মঁচকে যায় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি ক্লায়েন্টদেরও খেয়াল রাখতে হবে।’
রঙ্গসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টাল মেডিসিন কলেজের অধ্যাপক ডা. থিরাভাত হেমাচুধাও ঘাড় বাঁকানো বা সার্ভিকাল মেরুদণ্ডে ম্যাসাজ করা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। এ কারণে পঙ্গু হওয়ার মতো পরিস্থিতিও হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এসব কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলকারী রক্তনালীর ক্ষতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।