বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন অনেকেরই থাকে, কিন্তু যখন সেটি বারবার বাধাগ্রস্ত হয় শুধুমাত্র একটি দেশের পাসপোর্ট থাকার কারণে, তখন তা হয়ে ওঠে হতাশার বড় কারণ। এমনই এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন জনপ্রিয় ভ্রমণ ভ্লগার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর নাদির (Nadir On The Go)।
৭টি ভিসা আবেদন, সবই বাতিল!
২০২৫ সালে নাদির বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের জন্য ৭টি ভিসার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, প্রতিটি আবেদনই প্রত্যাখ্যাত হয়। সোমবার (২৮ জুলাই) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে (সূত্র: YouTube/@NadirOnTheGo) প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি জানান, এই প্রত্যাখ্যানের পেছনে মূলত বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংক্রান্ত বৈশ্বিক সন্দেহ কাজ করেছে।
কেন বারবার ভিসা বাতিল?
নাদিরের মতে, তার ভিসা প্রত্যাখ্যানের পেছনে তিনটি সাধারণ কারণ তুলে ধরা হয়েছে:
- অতীত অভিজ্ঞতা: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের অতীতে ‘অনুপ্রবেশের চেষ্টা’ ও ‘ওভারস্টে’-এর রেকর্ড।
- ফেরত আসার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ: ‘ইনটেনশন টু রিটার্ন’ বিষয়ক অনিশ্চয়তা।
- জাতিগত প্রোফাইলিং: কিছু ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার কারণে ভিসা রিজেক্ট করা হয়েছে।
নাদির বলেন,
“It’s frustrating. I’ve never overstayed or broken rules. But still, I’m paying the price for others’ mistakes.”
(সূত্র: YouTube/@NadirOnTheGo, 28 July 2025)
তরুণদের হতাশা ও প্রতিবাদ
নাদিরের অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। হাজারো ভ্রমণপিপাসু তরুণ তার ভিডিওর নিচে কমেন্ট করে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। কেউ লিখেছেন,
‘ছোট একটা দেশ, অথচ এত বড় নিষেধাজ্ঞা আমাদের মাথায়।’
আশা হারাননি নাদির
যদিও এই ঘটনাগুলো তার জন্য হতাশাজনক, তবুও নাদির অনুপ্রেরণার বার্তা দিয়েছেন—
“ভিসা না পাওয়া মানে এই না যে স্বপ্ন থেমে যাবে। আমি চালিয়ে যাব।”
তার পোস্ট করা ‘Visa Rejected’ লেখা পাসপোর্ট হাতে তোলা ছবি ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি একটি জাতীয় সংকট
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো ব্যক্তির একক সমস্যা নয়—এই সংকট বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ইমেজ বা আস্থার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।
তাদের মতে, এমন পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হলে শুধু ব্যক্তি উদ্যোগ নয়, সরকারি পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ না করলে ভবিষ্যতে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
পাসপোর্ট শুধু কাগজ নয়, এটি সম্মানের প্রতীক
নাদিরের অভিজ্ঞতা হাজারো মানুষের হৃদয় ভেঙে দিলেও, তা আবার এক অজানা বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করায়—
একটি দেশের পাসপোর্ট কেবল একটি কাগজ নয়, বরং তা আন্তর্জাতিক সম্মান ও আস্থার প্রতীক।
যতদিন কিছু মানুষ সিস্টেমকে অপব্যবহার করবে, ততদিন ভালো মানুষেরা ভুগতেই থাকবে।
নাদিরের এই অভিজ্ঞতা আমাদের একটি গভীর প্রশ্নের সামনে দাঁড় করায়— আমরা আমাদের পাসপোর্টকে কতটা সম্মানযোগ্য করতে পেরেছি? সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব, যেন কোনো অপব্যবহারে আমাদের সবার সম্মান ক্ষুণ্ন না হয়।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের প্রতি বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হলে এখনই সময় জাতীয়ভাবে সচেতন হওয়ার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।