নেহা কাক্করকে জন্মই দিতে চাননি গায়িকার মা

বিনোদন ডেস্ক : বিয়ের তিন বছরও পার হয়নি। এরই মধ্যে বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় গায়িকা নেহা কাক্করের। ৩৫ বছরে পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে গায়িকার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একরাশ জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে জল্পনা, বিতর্ক কি নেহার জীবনে এই প্রথম?

১৯৮৮ সালের ৬ জুন উত্তরাখণ্ডে জন্ম জনপ্রিয় এই গায়িকার। দুই ভাইবোনসহ বাবা-মায়ের সঙ্গে একটি মাত্র ঘরে ঠাসাঠাসি করে থাকতেন নেহা। সুখ্যাতি হওয়ার পর বহু সাক্ষাৎকারেই গায়িকা জানিয়েছিলেন যে, তাদের পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো ছিল না।

পরিস্থিতি এমন ছিল যে, কাক্কর পরিবারের অর্থাভাবের কারণেই নাকি নেহাকে জন্ম দিতে চাইছিলেন না গায়িকার মা। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় রোজগারের কারণে পরিবারসহ দিল্লি চলে যান নেহা। একটি মাত্র ঘরে দুই ভাইবোন এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি।

খুব কম বয়সেই নেহা বুঝে যান যে, তাকে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। চার বছর বয়স থেকে ভজন গাইতে শুরু করেন তিনি। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, যে এক ঘরের ভাড়াবাড়িতে নেহার পরিবার থাকত, সেখানে আলাদা ভাবে কোনো রান্নাঘরও ছিল না।

ঘরের একটি টেবিলের উপর রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করেছিলেন নেহার মা। শৈশব থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছেন তিনি। ভজন গাওয়ার সময় থেকে গানবাজনার প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। কোথাও ছোটখাটো অনুষ্ঠান হলে সেখানেও গান গাইতেন। গানের প্রতি আগ্রহ থেকেই নেহা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি গানের রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করবেন।

২০০৪ সালে নেহা তার ভাই টনি কাক্করের সঙ্গে মুম্বাই চলে আসেন। এর দুই বছর পর একটি জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণও করেন। নেহা ভেবেছিলেন এই শোয়ে নিজের সংগীতপ্রতিভার মাধ্যমে শ্রোতাদের মন জয় করবেন। কিন্তু প্রতিযোগিতায় তার যাত্রা বেশি দিনের ছিল না। শুরুর দিকেই বাদ পড়েন।

যে রিয়্যালিটি শোয়ের মাধ্যমে গায়িকা হিসাবে পরিচিতি গড়বেন ভেবেছিলেন, তা থেকেই বাদ পড়ে গিয়েছিলেন নেহা। কিন্তু এর ফলে দমে যাননি তিনি। আবার নতুন করে নিজের কেরিয়ার তৈরির পথ খুঁজে বের করেন।

২০০৮ সালে নেহা নিজের একটি গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন। সেই সময় ভাই টনির সঙ্গে একটি মিউজ়িক অ্যালবামেও কাজ করেন তিনি। ২০০৯ সালে এ আর রহমানের সুরে ‘ব্লু’ ছবির একটি গানে গলা মিলিয়েছিলেন নেহা। সেই গানে সমবেত শিল্পীদের মধ্যে একটি কণ্ঠ ছিল তার।

২০০৯ সালে সম্প্রচারিত ‘না আনা ইস দেশ লাডো’ নামের হিন্দি ধারাবাহিকের গানে নিজের কণ্ঠ দেন নেহা। গানের পাশাপাশি অভিনয়ও শুরু করেন তিনি। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইসি লাইফ মে’ ছবিতে অভিনয় করেন নেহা। হিন্দি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি দক্ষিণী ফিল্মেও গানের সুযোগ পান নেহা। কন্নড় এবং তেলুগু ছবিতে গান গেয়ে দক্ষিণের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও সম্মানিত হন তিনি।

কপিল শর্মা এবং আলি আসগরের সঙ্গে হাস্যরস পরিপূর্ণ একটি শোয়ে অংশগ্রহণ করেন নেহা। ২০১২ সালে তার কেরিয়ারে নতুন মোড় নেয়। ‘ককটেল’ ছবিতে গান গেয়ে রাতারাতি নিজের পরিচিতি গড়ে ফেলেন নেহা।

তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিন্দি ছবিতে গান গেয়ে চলেছেন তিনি। তার পাশাপাশি ইউটিউবে নিজস্ব চ্যানেলও খুলেছেন। সেখানে নিজের মিউজিক ভিডিও আপলোড করেন নেহা।

২০১৪ সালে অভিনেতা হিমাংশু কোহলির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন গায়িকা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টেলিভিশনের পর্দায় তাদের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেন নেহা। দুজনে বিয়ে করবেন বলেও ঘোষণা করেন। কিন্তু তিন মাস পর তাদের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। সমাজমাধ্যমে নিজেদের বিচ্ছেদের কথা জানান গায়িকা।

২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর নয়াদিল্লির গুরুদ্বারে পাঞ্জাবি শিল্পী রোহনপ্রীত সিংহের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন নেহা। চণ্ডীগড়ে দেখা হয়েছিল নেহা আর রোহনের। প্রথম দেখাতেই প্রেম। নেহার চেয়ে বয়সে ৮ বছরের ছোট রোহনও পেশায় গায়ক।

অভিনেত্রীর ডিম্বাশয়ে অস্ত্রোপচার, নারীদের জন্য আনুশার পরামর্শ

বর্তমানে ১০৪ কোটি টাকা সম্পত্তির মালকিন নেহা। প্রতি মাসে দুই কোটি টাকা উপার্জন করেন তিনি। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠানপ্রতি ৯০ লাখ টাকা রোজগার করেন নেহা। এছাড়া ইউটিউব থেকে অতিরিক্ত আয় করেন তিনি। হিন্দি ছবিতে গানপ্রতি ১০ লাখ টাকা নেন এই গায়িকা।