জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায় ব্যাপকভাবে শসার চাষ হয়। অল্প সময় ও কম খরচে অধিক লাভ পাওয়ায় কৃষকরা সারা বছরই এ সবজি চাষ করেন। এখানকার উৎপাদিত শসা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। এবার এই উপজেলার ৮ হাজার ৫৭০ মন (৩২০ টন) শসা উৎপন্ন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। মৌসুমের প্রথম দিকে কৃষক ভালো দাম পেলেও এখন দাম অর্ধেকে নেমেছে। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, তিন দিন আগেও পাইকারি বাজারে প্রতিমন শসা ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। এর আগে দাম আরও বেশি ছিল। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতিমন শসা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষকের হাত বদল হয়েই খুচরা বাজারে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ চাষিরা দাম কম পেলেও লাভ করছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।
উপজেলার সর্ববৃহৎ দিউ শসার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কৃষরা আড়তে প্রতিমন শসা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা মন দরে বিক্রি করছেন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বোররচর গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান জানান, ৪০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করে তার প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় হতাশ তারা। উপজেলার সিংগিমারী গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, ১৪ শতাংশ জমিতে শসা করতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৬ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। দাম না কমলে আরও বেশি লাভ করতে পারতেন। পৌরসভার দিউ শসার বাজারের আড়তদার আনারুল ইসলাম জানান, প্রতিমন শসা ঢাকায় বিক্রির জন্য নিতে ১৩০ টাকা খরচ হয়।
সেখানে আড়তে বিক্রি করে মনপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা লাভ পেয়ে থাকেন। আড়তদার খলিলুর রহমান জানান, আগে বেশি দামে শসা কিনে বিক্রি করে বেশি লাভ পেতেন। এখন আড়তে কম দামে শসা কিনেও লোকসান গুনতে হচ্ছে। ভাইটকান্দি বাজারের আড়তদার সোহাগ মিয়া জানান, ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মন দরে শসা কিনে ঢাকায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মন দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। কৃষকরা জানান, বর্তমানে তারা পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি শসা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা ওই শসা কিনে নিয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কামরুল হাসান কামু জানান, এ বছর উপজেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক হাজার ৩২০ মেট্রিক টন শসা। প্রতিকেজি শসা উৎপাদনে ৮ থেকে ৯ টাকা খরচ হয়ে থাকে। বর্তমানে কৃষকরা পাইকারি ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে শসা বিক্রি করতে পারছেন। উপজেলার অধিকাংশ জমিই শসা চাষের উপযোগী। বিশেষ করে মনকান্দা, সাহাপুর, মামুদপুর, রগুরামপুর, বালিয়া, দ্বারাগপুর, শুনই, মোকামিয়া, রামভদ্রপুরসহ চর এলাকায় সারা বছরই শসা চাষ হয়ে থাকে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে।
সূত্র : যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।