জুমবাংলা ডেস্ক : কৃষিতে ন্যানো ইউরিয়ার ব্যবহার ব্যাপকভাবে কমাবে ফসলের উৎপাদন খরচ। এই সারের উদ্ভাবক যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের দাবি, ৪ হাজার ২০০ টাকার গতানুগতিক ইউরিয়া সারের পরিবর্তে ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহার করলে খরচ হবে মাত্র ২৩০ টাকা। উদ্যোক্তারা বলছেন, বাংলাদেশে উপযুক্ত বিবেচনায় গবেষণা পর্যায়ে সফল এই সারের বাণিজ্যিক ব্যবহারে শুধু খরচই কমবে না, রক্ষা পাবে মাটির উর্বরতাও। কৃষিতে ন্যানো ইউরিয়ার ব্যবহার বাড়াতে, সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার তাগিদ দিচ্ছেন কৃষিবিদরা।
দেশের প্রধান খাদ্য ভাতের চাহিদা মেটাতে দেশে বছরে ধান উৎপাদন হয় প্রায় ৬ কোটি টন। আর তা উৎপাদনে প্রতিবছর কৃষিজমিতে ব্যবহার হয় প্রায় ৩০ লাখ টন ইউরিয়া সার। যার ৮০ শতাংশই পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে।
বিশাল অঙ্কের এই সার আমদানিতে যেমন বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়, তেমনি রাসায়নিকের ব্যবহারে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির উর্বরতাও। এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে, ন্যানো ইউরিয়ার ব্যবহার।
ন্যানো ফার্টিলাইজার উদ্ভাবক অধ্যাপক ড. জাবেদ হোসেন খান বলেন, এক বস্তা ইউরিয়া সরকার ৯০-৯২ টাকা দরে আমদানি করে। সে হিসেবে দাম পড়ে প্রায় অন্তত ৪২শ টাকা। তবে ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহার করে এ বিঘা জমি চাষ করতে সার খরচ হবে মাত্র ২৩০ টাকা। এটি স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে।
গবেষকের দাবি, এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশকয়েকটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তার উদ্ভাবন। বগুড়ার শেরপুর উপজেলা ঘুরে দেখা গেল, পরীক্ষামূলকভাবে মাঠ পর্যায়ে হচ্ছে এর ব্যবহারও।
ড. জাবেদ হোসেন খান আরও বলেন, গত ৭ বছর যাবত আমেরিকায় বহু গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পেপার পাবলিকেশন করা হয়েছে এবং সেখানে তা অ্যাপ্রুভ হয়েছে। মিনিসোটার একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের এই প্রযুক্তি নিতে আগ্রহী। এটা আমার নামে প্যাটেন্ট করা।
উদ্যোক্তারা বলছেন, ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষি জমির উর্বরতা রক্ষার পাশাপাশি কমাবে উৎপাদন ব্যয়ও। ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের হেড অব অপারেশন (সিডস) মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাকাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি পার্টনারশিপের আওতায় এটি নিয়ে কাজ চলছে।
কৃষিবিদরা বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজন সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তা। কৃষিবিদ ড. মো. সদরুল আমিন বলেন, সারাবিশ্বেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। দেশেও বাণিজ্যিকভাবে ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি গবেষণা ও সরকারি সহায়তা।
গতানুগতিক ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে ন্যানো ইউরিয়া সারের ব্যবহার বাড়ানো গেলে ফসল উৎপাদনে ব্যয় অন্তত ৫০ ভাগ কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৬ লাখ ২৩ হাজার টন ইউরিয়া আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। সূত্র : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।