জুমবাংলা ডেস্ক : ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শাহীনের সহকারী সিয়াম নেপালে আটক হয়েছেন বলে শুনেছি। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার পর অন্যান্য আসামিরাও নেপালে যাওয়া সম্ভাবনা আছে। সবদিক বিবেচনা করে আমরা সেখানে যাচ্ছি।
শনিবার (১ জুন) সকালে নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান। ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে রয়েছে ডিবির তিন সদস্য ও একজন ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরস-এনসিবির সদস্যসহ মোট চারজনের একটি দল।
হারুন অর রশীদ বলেন, বাংলাদেশের অনেক সন্ত্রাসী কাঠমান্ডুকে ব্যবহার করছেন। এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনও কাঠমান্ডুর মাটি ব্যবহার করে অন্য দেশে চলে গেছেন। এমন আরও অন্য আসামিদের বিষয়েও তথ্য পাচ্ছি।
ডিবিপ্রধান বলেন, আগেও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নেপালে পালিয়ে থেকেছেন। তদন্তের কাজেই আমরা নেপালের কাঠমান্ডু যাচ্ছি। নেপালের পুলিশের কাছে তদন্তে সহযোগিতা চাইবো।
সিয়াম নামে কোনো আসামি নেপালে আটক আছেন কি না, জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের বিষয়ে আমরা ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছি। কাঠমান্ডু পুলিশকেও জানিয়েছি। যেসব আসামি নেপালে থাকবে তদের গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা তাদের অনুরোধ জানিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নেপাল পুলিশের সঙ্গে কথা বলবো।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কেউ কাঠমান্ডু থাকতে পারে, আবার কেউ সেখান থেকে অন্য দেশে চলে যেতে পারে। অনেক আসামি কাঠমান্ডুকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে সেখানে থাকে।
ভবিষ্যতে কোনো আসামি বাংলাদেশে অপরাধ করে নেপালে যেন ঠাঁই না পায় সে ব্যাপারেও দেশটির পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরের দিন, ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।
চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আনার তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছিলেন।
গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় এমপি আনার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সঙ্গে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠান বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।
১৭ মে আনারের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে জানান, তার (আনার) সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিন ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২০ মে এমপি আনারের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে। তারা জানতে পারে, কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারে। পরে বুধবার (২২ মে) ভারতের এনডিটিভির খবরে বলা হয়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীভা গার্ডেন্সের একটি ফ্লাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।