লাইফস্টাইল ডেস্ক : নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের মতো এবার পুরুষদের জন্যও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নিয়ে আসছেন গবেষকরা। পরীক্ষামূলক পণ্যটি একটি হরমোনাল জেল যা পুরুষদের দিনে একবার তাদের কাঁধে ঘষতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি শুক্রাশয়ে শুক্রাণু উৎপাদনকে হ্রাস করবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এবং ননপ্রফিট পপুলেশন কাউন্সিল দ্বারা উদ্ভাবিত জেলটি নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়িগুলোর মতোই কাজ করবে। এটিতে দুটি হরমোন রয়েছে: নেস্টোরন (একটি প্রোজেস্টিন) এবং টেস্টোস্টেরন। নেস্টোরন শুক্রাশয়ে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন কমিয়ে শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করে।
তবে পেশী রক্ষণাবেক্ষণ, কামশক্তি এবং অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য টেস্টোস্টেরন গুরুত্বপূর্ণ। জেলটি পুরুষদের সুস্থ রাখার জন্য সীমিত টেস্টোস্টেরন সরবরাহ করলেও তা শুক্রাণু উৎপাদন করার জন্য যথেষ্ট নয়। গবেষকরা ২০০৫ সাল থেকে জেলটির সঠিক ডোজ এবং ঘনত্ব নিয়ে কাজ করছেন। সম্প্রতি তিনশোটিরও বেশি দম্পতির ওপর চালানো এক পরীক্ষার পর তারা তাদের ফলাফলে সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সাধারণত প্রতি মিলিলিটার বীর্যের মধ্যে ১৫ থেকে ২০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি মিলিলিটার বীর্যে এক মিলিয়নেরও কম শুক্রাণু থাকলে গর্ভাবস্থা রোধ করা যায়।
একটি ক্লিনিকাল পরীক্ষায় দেখা গেছে, জেল ব্যবহারের পর ৮৬ শতাংশ পুরুষের শুক্রাণু সংখ্যা নির্দিষ্ট সংখ্যায় কমে আসে। কারও কারও ক্ষেত্রে আরও দ্রুত চার থেকে আট সপ্তাহের মধ্যেই শুক্রাণু উৎপাদন হ্রাস পায়। আমেরিকার এনআইএইচের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের শাখা প্রধান ডায়ানা ব্লিথ বলেন, ‘ফলাফল দেখে আমরা সত্যিই উচ্ছ্বসিত। সংমিশ্রণটি আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে আরও ভালো ও দ্রুততার সহিত শুক্রাণু উৎপাদন কমিয়ে দেবে বলে মনে হচ্ছে।’
তবে ট্রায়ালের সময় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঘটনা ঘটেছিল কিনা তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ব্লিথ। তিনি বলেছেন, তিনি ফলাফলগুলো এখন প্রকাশ করতে চান না, এবং গবেষকরা আশা করছেন যে চূড়ান্ত তথ্য একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হবে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির নিয়মিত ডোজ টানা এক বা দুই দিন নিতে ভুলে গেলে গর্ভাবস্থার ঝুঁকি থেকে থাকে। কিন্তু জেলের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটা হয় না। কোনো পুরুষ এক বা দুই দিন বাহুতে জেল লাগাতে ভুলে গেলেও তার শুক্রাণু গণনা পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে প্রায় ৮ থেকে ১০ সপ্তাহ সময় লাগে।
নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ির কারণে মেজাজ পরিবর্তন বা হতাশায় আক্রান্ত হওয়ার মতো ব্যাপার থাকলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে এ প্রভাব কম। ব্লিথ বলেন, ‘অল্প সংখ্যক পুরুষের মেজাজ পরিবর্তন হয় তবে এর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, আমরা অবাকই হয়েছি এতে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।