বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : প্রায় এক কোটি মাইল (১ কোটি ৬ লাখ কিলোমিটার) দূর থেকে লেজার রশ্মির মাধ্যমে বার্তাগ্রহণ করল নাসা। সাইকি নভোযান থেকে এ বার্তা পাঠানো হয়। এটি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার-ই নভোযান। সে হিসেবে বলা যায়, নিজেরাই নিজেদের বার্তা পাঠাল নাসা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেকে (ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি) নাসার অর্থায়নে পরিচালিত জেট প্রপালশন ল্যাব এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে সম্প্রতি। এতে বলা হয়, এর গবেষকেরা প্রথমবারের মতো ডিপ স্পেস অপটিক্যাল কমিউনিকেশন (সংক্ষেপে ডি-সক, DSOC) প্রযুক্তির আলোক সংকেত ধরতে পেরেছে।
নাসা উদ্ভাবিত মহাকাশ যোগাযোগের নতুন প্রযুক্তি এই ডি-সক। প্রচলিত বেতার তরঙ্গের বদলে লেজার রশ্মির মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায় এ প্রযুক্তিতে। ফলে সময় যেমন কম লাগে, তেমনি পাঠানো যায় প্রচুর তথ্য। প্রযুক্তিটি পরীক্ষামূলকভাবে যুক্ত করা হয় সাইকি নভোযানে। গত মাসে পৃথিবী ছেড়েছে এ নভোযান। লক্ষ্য, প্রায় ছয় কোটি কিলোমিটার দূরের এক ধাতব গ্রহাণু—সাইকি। এই গ্রহাণুর নামেই নভোযানের নামকরণ করা হয়েছে। গ্রহাণুটি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে নভোযানটি। সংগ্রহ করবে নানা বৈজ্ঞানিক তথ্য। এ থেকে পৃথিবীর কোর বা কেন্দ্র সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে নভোযানটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখান দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
দূর মহাকাশে আলোক যোগাযোগ কতটা কার্যকর করা সম্ভব, তা দেখার জন্যই মূলত ডি-সক প্রযুক্তি হাতে-কলমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর আগে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে লেজার রশ্মির সাহায্যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে। কোটি মাইল দূর থেকে এ প্রযুক্তির ব্যবহার এবারই প্রথম। ১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার সাইকি নভোযানের পাঠানো তথ্য গ্রহণ করে জেট প্রপালশন ল্যাব। গবেষকরা বলছেন, সাইকি নভোযান থেকে পৃথিবীতে তথ্য আসতে সময় লেগেছে মাত্র ৫০ সেকেন্ড। অবলাল আলোকরশ্মির মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয় এ প্রযুক্তিতে।
ডি-সক প্রযুক্তিতে এখনও কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। যেমন দূরত্ব বাড়লে যোগাযোগ নির্ভুল রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তা ছাড়া ফোটনের শক্তিও কমে আসে দূরত্বের কারণে। ফলে যোগাযোগে বিঘ্নতা তৈরির আশংকা থাকে। বর্তমানে রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থার চেয়ে ডি-সক প্রযুক্তিতে ১০-১০০ গুণ বেশি দ্রুত তথ্য পাঠানো যায় কি না, তা যাচাই করা নাসার এ পরীক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আর্জেন্টাইন তারকার বিরুদ্ধে গোপনে ভিডিও করার অভিযোগ বান্ধবীর
প্রযুক্তিটি ঠিকভাবে কাজ করলে ভবিষ্যতে মহাকাশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঘটবে বিপ্লব। আরও দ্রুত ও বেশি পরিমাণ তথ্য পাঠানো যাবে মহাকাশ থেকে। ফলে চাইলে মঙ্গল থেকে সরাসরি ভিডিও সম্প্রচার করাও সম্ভব হবে ভবিষ্যতে, এমনটাই আশা নাসার বিজ্ঞানীদের।
লেখক: প্রদায়ক, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: ফিউচারিজম, আইএফএল সায়েন্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।