Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত – চাঁদে মানুষ, মঙ্গলে স্বপ্ন!
    প্রযুক্তি ডেস্ক
    বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

    নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত – চাঁদে মানুষ, মঙ্গলে স্বপ্ন!

    প্রযুক্তি ডেস্কMynul Islam NadimJuly 15, 202514 Mins Read
    Advertisement

    মহাকাশের অন্ধকারে নিঃসঙ্গ ভেসে বেড়ানো নীলাভ সেই গোলক, আমাদের পৃথিবী। এর বাইরে কী আছে? আমরা কি একা? এই প্রশ্ন হাজার বছর ধরে মানুষকে তাড়া করে এসেছে। আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই, মানবসভ্যতার সীমাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তাগিদেই, আবারও প্রস্তুত হচ্ছে মানবজাতি। নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে এক অকল্পনীয় সম্ভাবনার দুয়ার। শুধু চাঁদে ফেরা নয়, এই অভিযানের লক্ষ্য অনেক দূরের, অনেক লাল গ্রহের দিকে – মঙ্গলের দিকে। এটি শুধু বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির গল্প নয়; এটি মানব অদম্য কৌতূহল, সাহসিকতা এবং ভবিষ্যতের স্বপ্নের এক মহাকাব্যিক যাত্রার গল্প।

    নাসার নতুন মিশন

    চাঁদের ধূসর মাটিতে আবারও মানুষের পদচিহ্ন পড়তে চলেছে। শুনতে অবাক লাগলেও, এটি এখন আর কল্পবিজ্ঞান নয়, বাস্তবতার খুব কাছাকাছি। নাসার আর্টেমিস (Artemis) কর্মসূচিই এই অভিযানের প্রাণকেন্দ্র। গ্রিক পুরাণে চন্দ্রদেবী আর্টেমিসের নামে নামকরণ করা এই মিশন, তার জমজ ভাই অ্যাপোলোর নামে চাঁদে প্রথম মানুষ পাঠানো সেই ঐতিহাসিক অ্যাপোলো মিশনের উত্তরসূরি। কিন্তু আর্টেমিস শুধু অতীতের পুনরাবৃত্তি নয়, এটি এক দিগন্তপ্রসারী অগ্রযাত্রা।


    আর্টেমিস: চাঁদে ফেরার মহাযাত্রা ও তার গভীর তাৎপর্য (H2)

    নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত শুরু হয়েছিলো আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ সালে, কিন্তু এর বীজ রোপিত হয়েছিলো আরও আগে। আর্টেমিস কর্মসূচির লক্ষ্য পরিষ্কার: ২০২৫ সালের মধ্যে প্রথম নারী এবং প্রথম বর্ণের মানুষকে (First Woman and First Person of Color) চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করানো। এটি শুধু একটি ল্যান্ডিং নয়; এটি একটি টেকসই উপস্থিতির সূচনা। চাঁদে দীর্ঘমেয়াদী বসতি গড়ে তোলা, সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালানো এবং ভবিষ্যতে মঙ্গল অভিযানের জন্য একটি পরীক্ষাগার ও পথনির্দেশক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলাই এর প্রধান উদ্দেশ্য।

    কেন আবার চাঁদ?

    • মঙ্গলের পথে স্টপওভার: চাঁদ হল মঙ্গল অভিযানের জন্য আদর্শ ‘টেস্ট বেড’। পৃথিবী থেকে মাত্র ৩-৪ দিনের দূরত্বে অবস্থিত চাঁদে দীর্ঘসময় অবস্থান করে, চরম পরিবেশে বেঁচে থাকার প্রযুক্তি, রিসোর্স ব্যবহার (যেমন চন্দ্রপৃষ্ঠের বরফ থেকে পানি ও অক্সিজেন তৈরির প্রযুক্তি বা ISRU – In-Situ Resource Utilization), এবং গভীর মহাকাশে মানবদেহের প্রতিক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব। মঙ্গল যাত্রা, যা কিনা কয়েক মাস বা বছর ধরে চলবে, তার জন্য এই অভিজ্ঞতা অমূল্য। নাসার প্রাক্তন প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন বলেছিলেন, “চাঁদ হল আমাদের প্রুভিং গ্রাউন্ড… সেখানেই আমরা শিখব কিভাবে গভীর মহাকাশে বাঁচতে হয়।”
    • বৈজ্ঞানিক রত্নভাণ্ডার: চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল, যেখানে ক্রেটারগুলোর গভীরে স্থায়ীভাবে ছায়ায় ঢাকা জায়গা আছে, সেখানে বরফের সন্ধান মিলেছে। এই পানি শুধু পানীয় হিসেবেই নয়, রকেটের জ্বালানি তৈরির মূল উপাদান হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনেও পরিণত করা যেতে পারে। এছাড়াও চাঁদের ভূতত্ত্ব, সৌরজগতের উৎপত্তি এবং বিকাশ সম্পর্কে অজানা তথ্যের সন্ধান পাওয়া যাবে। চাঁদ সৌরজগতের একটি জীবন্ত ইতিহাস বই।
    • আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ও বাণিজ্যিক সুযোগ: আর্টেমিস শুধু নাসার একার প্রচেষ্টা নয়। এটি একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA), জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA), কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA), এবং বাণিজ্যিক স্পেস কোম্পানিগুলো (যেমন স্পেসএক্স, ব্লু অরিজিন) এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এই সহযোগিতা শুধু খরচ ভাগাভাগিই করে না, বৈশ্বিক কূটনীতি ও প্রযুক্তি বিনিময়েরও সুযোগ তৈরি করে। আর্টেমিস অ্যাকর্ডস (Artemis Accords) নামক একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণ অভিযান, স্বচ্ছতা এবং মহাকাশ সম্পদ ব্যবহারের নীতিমালা মেনে চলতে সম্মত হয়েছে। বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো ল্যান্ডার নির্মাণ, কার্গো পরিবহন এবং এমনকি ভবিষ্যতে চন্দ্রপর্যটনের মতো সেবা দিতে পারে, যা মহাকাশ অর্থনীতির (Space Economy) নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

    আর্টেমিসের ধাপসমূহ:

    1. আর্টেমিস ১ (সম্পন্ন): এটি ছিলো একটি অনাক্রম্য (Uncrewed) টেস্ট ফ্লাইট। ২০২২ সালের ১৬ই নভেম্বর ইতিহাস গড়ে নাসার সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS – Space Launch System) এবং ওরিয়ন মহাকাশযান (Orion Spacecraft) এর প্রথম যৌথ উড্ডয়ন। ২৫ দিনের এই মিশনে ওরিয়ন চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে, পৃথিবী থেকে প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার কিলোমিটার দূরে গিয়ে একটি নতুন রেকর্ড গড়ে, এবং নিরাপদে প্রশান্ত মহাসাগরে অবতরণ করে। এটি প্রমাণ করেছিল যে SLS এবং ওরিয়ন গভীর মহাকাশে মানুষ বহন করার জন্য প্রস্তুত। নাসার অফিসিয়াল আর্টেমিস ১ মিশন পেজ
    2. আর্টেমিস ২ (পরিকল্পিত: সেপ্টেম্বর ২০২৫): এটি হবে সর্বপ্রথম ক্রুড (Crewed) আর্টেমিস মিশন। চারজন মহাকাশচারীকে নিয়ে SLS রকেটে চড়ে ওরিয়ন যানটি চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে, কিন্তু অবতরণ করবে না। এই প্রায় ১০ দিনের মিশনে গভীর মহাকাশে মানবদেহের প্রতিক্রিয়া, যানের ক্রু সিস্টেম এবং পৃথিবী-চাঁদ ব্যবস্থায় যোগাযোগ প্রণালীর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হবে। এটি হবে ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭ মিশনের পর প্রথমবারের মতো মানুষকে চাঁদের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া।
    3. আর্টেমিস ৩ (পরিকল্পিত: ২০২৬): ইতিহাস গড়ার মিশন। এই মিশনে ওরিয়ন যান চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করবে। সেখানে অপেক্ষা করবে স্টারশিপ হিউম্যান ল্যান্ডিং সিস্টেম (Starship HLS), যা নির্মাণ করছে স্পেসএক্স। দুজন মহাকাশচারী (যার মধ্যে একজন নারী হবেন) ওরিয়ন থেকে স্টারশিপ এইচএলএস-এ স্থানান্তরিত হবেন এবং তারপর সেই যানে চেপে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করবেন। তারা প্রায় এক সপ্তাহ চাঁদে অবস্থান করে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন, নমুনা সংগ্রহ করবেন এবং প্রমাণ করবেন যে মানুষ আবারও চাঁদে পা রাখতে সক্ষম। এটি হবে নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত এর সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো মুহূর্ত।

    মঙ্গলের দিকে অভিযাত্রা: আর্টেমিসের পরের পদক্ষেপ (H2)

    চাঁদ আর্টেমিস কর্মসূচির শেষ গন্তব্য নয়, বরং এটি একটি বিশাল লম্ফের জন্য প্রস্তুতি ক্ষেত্র। নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত এর চূড়ান্ত লক্ষ্য অনেক বেশি উচ্চাভিলাষী – মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানো এবং সেখানে একটি টেকসই উপনিবেশ গড়ে তোলা।

    কেন মঙ্গল?

    • জীবনের সম্ভাবনা: মঙ্গল হল সৌরজগতে পৃথিবীর পরেই সবচেয়ে বসবাসযোগ্য গ্রহ বলে বিবেচিত। অতীতে এতে তরল পানি ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে। এখনও এর মেরু অঞ্চলে বরফ জমে আছে। সেখানে অতীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, বা ভূগর্ভে এখনও আছে কিনা, তা জানার প্রবল আকাঙ্ক্ষা বিজ্ঞানীদের তাড়া করে।
    • মানবজাতির ভবিষ্যতের বাসস্থান: পৃথিবীর বাইরে মানবসভ্যতার দ্বিতীয় আবাসস্থল গড়ে তোলার স্বপ্ন অনেকের। জলবায়ু পরিবর্তন, গ্রহাণুপাত বা অন্যান্য বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মুখে মানবজাতির টিকে থাকার নিশ্চয়তা হিসেবে মঙ্গলকে দেখা হয়। এলন মাস্কের স্পেসএক্স তো স্পষ্টভাবেই “মাল্টিপ্ল্যানেটারি স্পেসিস” বা বহু-গ্রহের প্রজাতি হিসেবে মানুষকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে।
    • বৈজ্ঞানিক অভিযানের চূড়ান্ত সীমা: মঙ্গল নিয়ে গবেষণা সৌরজগতের ইতিহাস, গ্রহের বিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রক্রিয়া এবং পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অমূল্য তথ্য দিতে পারে। রোভার যেমন পারসিভিয়ারেন্স (Perseverance) এবং কিউরিওসিটি (Curiosity) ইতিমধ্যেই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার করেছে।

    চাঁদ থেকে মঙ্গলের পথে:

    চাঁদে আর্টেমিস কর্মসূচির মাধ্যমে যে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা অর্জিত হবে, তা সরাসরি মঙ্গল অভিযানে কাজে লাগবে:

    1. গভীর মহাকাশ পরিবহন ও আবাসন: মঙ্গল যাত্রা হবে দীর্ঘ – প্রায় ৬-৯ মাস শুধু যেতে। এই দীর্ঘ সময় মহাকাশচারীদের একটি নিরাপদ, স্বয়ংসম্পূর্ণ আবাসনে কাটাতে হবে। আর্টেমিসের সময় চন্দ্র কক্ষপথে নির্মাণের পরিকল্পনা আছে গেটওয়ে (Gateway) নামক একটি ছোট স্পেস স্টেশনের। গেটওয়ে হবে মঙ্গল অভিযানের জন্য ক্রু এবং কার্গোর ট্রানজিশন পয়েন্ট এবং গভীর মহাকাশে আবাসনের প্রোটোটাইপ। নাসার গেটওয়ে স্পেস স্টেশন তথ্য
    2. অত্যাধুনিক ল্যান্ডিং সিস্টেম: চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর ১/৬ অংশ হলেও, মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর প্রায় ১/৩ অংশ। মঙ্গলে ভারী কার্গো এবং মানুষ নামানোর জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য ল্যান্ডিং সিস্টেম দরকার। স্টারশিপ এইচএলএস বা অনুরূপ প্রযুক্তির বিকাশ মঙ্গল অভিযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
    3. ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন (ISRU): চাঁদে যেমন বরফ থেকে পানি ও জ্বালানি তৈরি করার পরিকল্পনা আছে, মঙ্গলে সেটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিয়ে অক্সিজেন তৈরি করা (MOXIE এক্সপেরিমেন্ট, যা পারসিভিয়ারেন্স রোভারে সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে), মাটির (রেজোলিথ) থেকে নির্মাণ সামগ্রী তৈরি করা – এসব প্রযুক্তি মঙ্গলে মানুষের স্বাবলম্বিতার চাবিকাঠি।
    4. মানবদেহের উপর প্রভাব মোকাবেলা: দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশযাত্রায় মহাকাশ বিকিরণ (Cosmic Radiation), শূন্য মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব (মাংসপেশী ও হাড়ের ক্ষয়), এবং সীমাবদ্ধ পরিবেশে মানসিক চাপ মোকাবেলা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। চাঁদে দীর্ঘসময় অবস্থান করে এই সমস্যাগুলো বোঝা এবং সমাধান খুঁজে বের করা হবে মঙ্গল অভিযানের সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। নাসার হিউম্যান রিসার্চ প্রোগ্রাম (Human Research Program) এই বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা চালাচ্ছে।

    সময়সীমা: নাসা আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর তারিখ ঘোষণা করেনি। এটি একটি অত্যন্ত জটিল লক্ষ্য, যার জন্য বিপুল অর্থ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। অনুমান করা হয় যে ২০৩০-এর দশকের শেষভাগ বা ২০৪০-এর দশকের শুরুর দিকে প্রথম মানব মঙ্গল অভিযান হতে পারে। আর্টেমিস কর্মসূচি সফলভাবে এগোলে সেই স্বপ্নের পথ অনেকটাই সুগম হবে।


    প্রযুক্তির বিস্ময়: আর্টেমিস মিশনের পেছনের যন্ত্রপাতি (H2)

    নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত এর সাফল্য নির্ভর করে কিছু যুগান্তকারী প্রযুক্তির উপর। এই প্রযুক্তিগুলো শুধু আর্টেমিস নয়, ভবিষ্যতের সমস্ত গভীর মহাকাশ অভিযানের ভিত্তি স্থাপন করছে।

    স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS): পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট (H3)

    • SLS হল একটি “সুপার হেভি-লিফট” রকেট, যা পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ভারী কার্গো পাঠানোর জন্য বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে।
    • এটি নাসার ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট, যার ধাক্কা শাটল প্রোগ্রামের স্যাটার্ন V রকেটকেও ছাড়িয়ে গেছে।
    • SLS এর বিভিন্ন কনফিগারেশন থাকবে। আর্টেমিস ১ ও ২ তে ব্যবহৃত “ব্লক ১” কনফিগারেশন চাঁদের দিকে ২৭ মেট্রিক টন কার্গো পাঠাতে পারে। ভবিষ্যতের “ব্লক ১বি” ও “ব্লক ২” ভার্সনগুলো আরও শক্তিশালী হবে, যা মঙ্গল অভিযানের জন্য অপরিহার্য।
    • এর মূল স্টেজে শাটল প্রোগ্রামের প্রমাণিত RS-25 ইঞ্জিন এবং শক্তিশালী সলিড রকেট বুস্টার ব্যবহার করা হয়।
    • SLS এর সাফল্য গভীর মহাকাশে মানুষের উপস্থিতির জন্য রকেটের শক্তির জোগান দেবে। নাসার SLS ওভারভিউ

    ওরিয়ন মহাকাশযান: মহাকাশচারীদের নিরাপদ ঘর (H3)

    • ওরিয়ন হল সেই ক্যাপসুল যেখানে মহাকাশচারীরা বসবাস করবেন এবং কাজ করবেন পৃথিবী থেকে চাঁদ পর্যন্ত এবং তারও পরের যাত্রায়।
    • এটি অ্যাপোলো ক্যাপসুলের চেয়ে অনেক বড় এবং উন্নত। এতে চারজনের জন্য স্থান আছে (অ্যাপোলোতে ছিল তিনজন)।
    • ওরিয়নের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হল:
      • অত্যাধুনিক লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম: দীর্ঘ অভিযানের জন্য বায়ু, পানি পুনর্ব্যবহারযোগ্যকরণ ব্যবস্থা।
      • শক্তিশালী তাপ ঢাল (Heat Shield): পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঘন ঘর্ষণ থেকে সুরক্ষার জন্য বিশেষ নকশার তাপ ঢাল (আর্টেমিস ১ এ এটি প্রায় ২,৭৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করেছিল)।
      • উন্নত নেভিগেশন ও কমিউনিকেশন সিস্টেম: গভীর মহাকাশে নির্ভুল পথচলনা এবং পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা।
      • লঞ্চ অ্যাবোর্ট সিস্টেম: উড্ডয়নের সময় কোনো জরুরি অবস্থায় ক্রু মডিউলকে নিরাপদে দূরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা।

    স্টারশিপ হিউম্যান ল্যান্ডিং সিস্টেম (HLS): চন্দ্রপৃষ্ঠের ট্যাক্সি (H3)

    • আর্টেমিস ৩ মিশনে চাঁদে নামানোর দায়িত্বে থাকবে স্পেসএক্সের নির্মিত স্টারশিপ এইচএলএস।
    • এটি ওরিয়ন থেকে আলাদা একটি বিশাল এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য (Reusable) মহাকাশযান।
    • ওরিয়ন চাঁদের কক্ষপথে থাকাকালীন, দুজন মহাকাশচারী ওরিয়ন থেকে স্টারশিপ এইচএলএস-এ স্থানান্তরিত হবেন। তারপর এইচএলএস তাদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামাবে এবং আবার চন্দ্র কক্ষপথে ওরিয়নের সাথে ডকিং করার জন্য ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।
    • স্টারশিপের বিশাল আকার (অ্যাপোলো লুনার মডিউলের চেয়ে অনেক বড়) চাঁদে বেশি পরিমাণে বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম ও নমুনা পরিবহন এবং ভবিষ্যতে বৃহত্তর ক্রু পাঠানোর সুযোগ দেবে। স্পেসএক্সের এই প্রযুক্তিই ভবিষ্যতে মঙ্গলে বিশাল সংখ্যক মানুষ ও কার্গো পাঠানোর মূল হাতিয়ার হতে পারে। স্পেসএক্সের স্টারশিপ এইচএলএস

    গেটওয়ে: চন্দ্র কক্ষপথের ছোট্ট স্টেশন (H3)

    • গেটওয়ে হল চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে ঘূর্ণমান একটি ছোট আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন।
    • এটি আর্টেমিস অভিযানগুলোর জন্য একটি কেন্দ্রীয় হাব হিসেবে কাজ করবে:
      • ক্রু ও কার্গোর জন্য ট্রানজিশন পয়েন্ট।
      • চাঁদের বিভিন্ন অঞ্চলে রোবোটিক ও ক্রুড মিশনের অপারেশনাল বেস।
      • গভীর মহাকাশে দীর্ঘমেয়াদী মানব অভিযানের প্রযুক্তি পরীক্ষার ল্যাব।
      • ভবিষ্যৎ মঙ্গল অভিযানের জন্য প্রস্তুতিমূলক কেন্দ্র।
    • গেটওয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অংশীদারদের দ্বারা সরবরাহকৃত মডিউল দিয়ে ধাপে ধাপে নির্মিত হবে। প্রথম দুটি মডিউল – পাওয়ার অ্যান্ড প্রপালশন এলিমেন্ট (PPE) এবং হ্যাবিটেশন অ্যান্ড লজিস্টিক্স আউটপোস্ট (HALO) – পরিকল্পনা অনুযায়ী একত্রে উৎক্ষেপণ করা হবে।

    অত্যাধুনিক স্পেসস্যুট: এক্সপ্লোরেশন এক্সট্রাভেহিকুলার মোবিলিটি ইউনিট (xEMU) (H3)

    • চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কঠিন ও রুক্ষ পরিবেশে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে নকশা করা হচ্ছে নতুন স্পেসস্যুট, যার কোডনেম xEMU।
    • এই স্যুটগুলো হবে:
      • অধিক নড়াচড়ার সুবিধাযুক্ত: অ্যাপোলো স্যুটের চেয়ে বেশি ফ্লেক্সিবল, বিশেষ করে কোমর ও কাঁধে, যাতে চাঁদের মাটিতে হাঁটা, নুইয়ে পড়া, নমুনা সংগ্রহ করা সহজ হয়।
      • উন্নত সুরক্ষা: চন্দ্র ধুলো (Lunar Regolith) থেকে সুরক্ষা, যা অত্যন্ত ক্ষয়কারী এবং যন্ত্রপাতির জন্য ক্ষতিকর। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ (দুপুরের প্রখর সূর্যালোক থেকে রাতের হিমশীতল ঠাণ্ডা পর্যন্ত)।
      • নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য মানানসই: মডুলার ডিজাইন, যাতে ভিন্ন ভিন্ন শারীরিক গড়নের মহাকাশচারীরা ভালোভাবে ফিট করতে পারেন।
      • সহজে রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য: চাঁদে বা গেটওয়েতে স্যুটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের সুবিধা থাকবে।

    বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ: আমাদের ভূমিকা ও অনুপ্রেরণা (H2)

    নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত শুধু আমেরিকা বা উন্নত দেশগুলোর গল্প নয়। এটি সমগ্র মানবজাতির অগ্রযাত্রা। বাংলাদেশও এর অংশ হতে পারে এবং এর থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে।

    • বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের সুযোগ: যদিও বাংলাদেশ এখনও সরাসরি আর্টেমিস অ্যাকর্ডসে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছোট বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও দ্বার খোলা থাকতে পারে, বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। আমাদের তরুণ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় প্রেরণা: আর্টেমিস ও মঙ্গল অভিযানের মতো মেগা প্রজেক্টগুলো আমাদের তরুণ প্রজন্মকে, বিশেষ করে মেয়েদের, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) বিষয়ে আকৃষ্ট করার বিশাল সুযোগ দেয়। নাসার ওয়েবসাইটে প্রচুর মুক্ত শিক্ষামূলক সম্পদ (Educational Resources) আছে, যা বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যবহার করা যেতে পারে। নাসা স্টেম এনগেজমেন্ট
    • দূর অনুধাবন (Remote Sensing) ও ডেটা বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ও ২)। আর্টেমিস মিশন থেকে পাওয়া চাঁদ ও গভীর মহাকাশ সম্পর্কিত বিপুল পরিমাণ বৈজ্ঞানিক ডেটা বিশ্বব্যাপী গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। বাংলাদেশি গবেষকরাও এই ডেটা ব্যবহার করে নিজেদের গবেষণা চালাতে পারেন, বিশেষ করে ভূতত্ত্ব, পরিবেশ বিজ্ঞান বা ডেটা সায়েন্সের ক্ষেত্রে।
    • আমাদের স্বপ্ন, আমাদের মহাকাশ: নাসার অভিযান আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে স্বপ্ন দেখাটাই প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশের তরুণরাও স্বপ্ন দেখতে পারে মহাকাশ বিজ্ঞানী, মহাকাশচারী বা মহাকাশ প্রকৌশলী হওয়ার। এর জন্য প্রয়োজন STEM শিক্ষায় জোর দেওয়া, গবেষণার সুযোগ তৈরি করা এবং একটি বৈজ্ঞানিক মানসিকতা গড়ে তোলা।

    চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা: পথ যে মসৃণ নয় (H2)

    নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত যতই উত্তেজনাকর হোক না কেন, এর সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ এবং কিছু যুক্তিসঙ্গত সমালোচনাও আছে:

    • অবিশ্বাস্য ব্যয়: আর্টেমিস কর্মসূচি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। শুধু ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নাসার বাজেটে এজন্য প্রায় ৯৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের কথা আছে। সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন, পৃথিবীতে এত সমস্যা (দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য) থাকতে এত টাকা মহাকাশে খরচ করা কি ন্যায্য?
    • প্রযুক্তিগত জটিলতা ও ঝুঁকি: SLS, ওরিয়ন, স্টারশিপ এইচএলএস, গেটওয়ে – প্রত্যেকটি অত্যন্ত জটিল সিস্টেম। একটি সিস্টেমে ব্যর্থতা পুরো মিশনকে বিপন্ন করতে পারে। মহাকাশচারীদের জীবনও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নগুলোর মধ্যে কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
    • সময়সূচী পিছিয়ে যাওয়া: আর্টেমিস কর্মসূচির সময়সূচী ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে। আর্টেমিস ২ এর উড্ডয়ন ২০২৪ থেকে পিছিয়ে ২০২৫ সালে, আর্টেমিস ৩ এর অবতরণ ২০২৫ থেকে পিছিয়ে ২০২৬ সালে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের অনিশ্চয়তা, প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং মহাকাশযানের উন্নয়নে বিলম্ব এর কারণ।
    • বাস্তব সুবিধা সম্পর্কে প্রশ্ন: চাঁদে বা মঙ্গলে মানুষের উপস্থিতির সরাসরি বাস্তব সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার দীর্ঘমেয়াদে লাভবান করলেও, তাৎক্ষণিক প্রভাব কম।
    • মহাকাশের দূষণ ও ভবিষ্যতের দ্বন্দ্ব: চাঁদ ও মঙ্গলে মানুষের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি পরিবেশগত প্রভাব ফেলতে পারে। মহাকাশ সম্পদ (যেমন চাঁদের পানির বরফ বা হিলিয়াম-৩) নিয়ে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

    নাসার যুক্তি: নাসা এবং সমর্থকরা যুক্তি দেখান যে মহাকাশ অনুসন্ধানের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন (যেমন মেডিকেল ইমেজিং, যোগাযোগ প্রযুক্তি, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ, উপকরণের উন্নয়ন) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পৃথিবীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। এটি বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সীমানা প্রসারিত করে এবং মানবজাতিকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটের ভূমিকা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাছাড়া, মহাকাশ অনুসন্ধান মানবজাতিকে একত্রিত করে একটি বৃহত্তর লক্ষ্যে – যা নিজেই অমূল্য।


    জেনে রাখুন (FAQs) (H2)

    ১. আর্টেমিস মিশনের প্রধান লক্ষ্য কী?
    আর্টেমিস মিশনের প্রধান লক্ষ্য হল ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম নারী এবং প্রথম বর্ণের মানুষকে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করানো। এটি শুধু একবারের জন্য নয়, বরং চাঁদে মানুষের টেকসই উপস্থিতি গড়ে তোলা এবং সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালানোর পথ প্রশস্ত করা। এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হল এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানো।

    ২. আর্টেমিস ১ মিশন কেন গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
    আর্টেমিস ১ মিশন ছিল অনাক্রম্য (কোনো মানুষ ছাড়া)। এটি ছিল নাসার নতুন স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS) রকেট এবং ওরিয়ন মহাকাশযানের প্রথম যৌথ পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। মিশনটি সফলভাবে প্রমাণ করেছিল যে SLS রকেট শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য, ওরিয়ন যান গভীর মহাকাশে ভ্রমণ ও পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য নিরাপদ, এবং এর তাপ ঢাল চরম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। আর্টেমিস ২ ও ৩ এর জন্য এটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ।

    ৩. চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কেন অবতরণ করা হবে?
    চাঁদের দক্ষিণ মেরু বিশেষভাবে আকর্ষণীয় কারণ সেখানে কিছু গভীর গর্তের মধ্যে স্থায়ীভাবে ছায়ায় ঢাকা অংশ (Permanently Shadowed Regions – PSRs) আছে, যেখানে বরফ আকারে পানি জমে থাকার প্রমাণ মিলেছে। এই পানি ভবিষ্যৎ অভিযানগুলোর জন্য অমূল্য সম্পদ – পানীয় হিসেবে, শ্বাসের অক্সিজেন তৈরিতে এবং রকেটের জ্বালানির (হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন) উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও এই অঞ্চলের ভূতত্ত্ব বৈজ্ঞানিকভাবে খুবই সমৃদ্ধ।

    ৪. গেটওয়ে স্পেস স্টেশন কী?
    গেটওয়ে হল একটি ছোট আকারের স্পেস স্টেশন যা চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে ঘুরবে। এটি আর্টেমিস অভিযানগুলোর জন্য একটি কেন্দ্রীয় হাব হিসেবে কাজ করবে। মহাকাশচারীরা ওরিয়ন যান থেকে গেটওয়েতে আসবেন, সেখান থেকে চন্দ্র ল্যান্ডারে (যেমন স্টারশিপ এইচএলএস) চড়ে চাঁদে নামবেন এবং ফিরবেন। গেটওয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, গভীর মহাকাশে প্রযুক্তি পরীক্ষা এবং ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতির কেন্দ্র হবে। এটি একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প।

    ৫. মঙ্গলে মানুষ কবে যাবে?
    মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর জন্য নাসার আনুষ্ঠানিক কোনো তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এটি একটি অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য। আর্টেমিস কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি (যেমন উন্নত লাইফ সাপোর্ট, বিকিরণ সুরক্ষা, শক্তিশালী ল্যান্ডার) পরিপক্ক হলে, ধারণা করা হয় ২০৩০-এর দশকের শেষভাগ বা ২০৪০-এর দশকের শুরুর দিকে প্রথম মানব মঙ্গল অভিযান হতে পারে। স্পেসএক্সের মতো বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোও তাদের নিজস্ব লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।

    ৬. বাংলাদেশের তরুণরা এই অভিযান থেকে কী শিখতে পারে?
    নাসার এই অভিযানগুলো বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী হতে, স্বপ্ন দেখতে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। এটি দেখায় যে অসম্ভব বলে কিছু নেই। তরুণরা নাসার উন্মুক্ত শিক্ষামূলক উপকরণ ব্যবহার করতে পারে, STEM বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে, মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে এবং নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে পারে। মহাকাশ অভিযানের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন পৃথিবীর জীবনকেও উন্নত করে – সেই উদ্ভাবনী চিন্তার অনুপ্রেরণাও পাওয়া যায় এখান থেকে।


    এই মহাকাব্যিক যাত্রা শুধু পাথর ও ধূলিকণার গল্প নয়; এটি আমাদের কল্পনাশক্তির প্রসার, বিজ্ঞানের জয়গান এবং মানব অস্তিত্বের অনন্ত সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল স্বাক্ষর। নাসার নতুন মিশন: মহাকাশে অভিযানের নতুন দিগন্ত – আর্টেমিস কর্মসূচি – আমাদের শুধু চাঁদে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে না, তা প্রমাণ করছে যে মঙ্গলের লাল মরুভূমিতে মানুষের পদচারণা আর কল্পনা নয়, সময়ের ব্যাপার মাত্র। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমরা যখন স্বপ্ন দেখি এবং একসাথে কাজ করি, তখন নক্ষত্রলোকও আমাদের নাগালের বাইরে নয়। এই অভিযানের প্রতিটি ধাপ আমাদের শেখায় অধ্যবসায়, সহযোগিতা এবং কৌতূহলের মূল্য। তাই, আসুন, চোখ রাখি আকাশে। কারণ, সেই দূর নীল বিন্দুর বাইরেই লুকিয়ে আছে আমাদের ভবিষ্যতের নতুন ঠিকানা। মহাকাশের এই নতুন অধ্যায়ে আপনার মতামত, অনুভূতি জানান নিচে কমেন্টে – চলুন আলোচনায় অংশ নিই মানবতার এই মহাজাগতিক অভিযাত্রায়!


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘ও Artemis Program Bangla Space Article mars mission Moon Mission NASA SLS রকেট space exploration STEM শিক্ষা অভিযানের আর্টেমিস কর্মসূচি ওরিয়ন মহাকাশযান গেটওয়ে স্পেস স্টেশন চন্দ্রাভিযান চাঁদে দিগন্ত নতুন নাসার নাসার নতুন মিশন প্রভা প্রযুক্তি বিজ্ঞান মঙ্গল মিশন মঙ্গলে! মহাকাশ অভিযান মহাকাশে মহাকাশে বাংলাদেশ মানুষ মিশন স্টারশিপ HLS স্বপ্ন
    Related Posts
    ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয়

    ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয়: জরুরি পদক্ষেপ! আপনার ডিজিটাল জীবন ফিরে পেতে গাইডলাইন

    July 15, 2025
    শিশুদের জন্য নিরাপদ

    শিশুদের জন্য নিরাপদ ইউটিউব চ্যানেল: সঠিক বাছাই

    July 15, 2025
    পিসি গেম আপডেট

    পিসি গেম আপডেট: নতুন ফিচার জানুন! – আপনার গেমিং অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করার গাইড

    July 15, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Grill King Barbecue Innovations

    Grill King Barbecue Innovations:Leading the Outdoor Grilling Revolution

    ওয়েব সিরিজ

    উল্লুতে রিলিজ হলো নতুন ৫টি ওয়েব সিরিজ, ভুলেও বাচ্চাদের সামনে দেখবেন না

    vivo x200 fe price

    Vivo X200 FE Price: Specs, Launch Offers, and Full Details (July 2025)

    কম দামে ভালো স্মার্টফোন

    কম দামে ভালো স্মার্টফোন: স্মার্ট কিনুন

    রাত্রে ঘুম না আসার সমাধান

    রাত্রে ঘুম না আসার সমাধান: আপনার জন্য কার্যকরী টিপস

    অপু বিশ্বাস

    মুখ লুকিয়ে আদালতে যাওয়ার কারণ জানালেন অপু বিশ্বাস

    দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার উপায়

    দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার উপায়: সহজ টিপস

    প্রেমে প্রতারণার লক্ষণ

    প্রেমে প্রতারণার লক্ষণ: কীভাবে বুঝবেন?

    ভারতীয়দের ধরা মাছ বিক্রি

    ভারতীয়দের ধরা মাছ বিক্রি করে দিলো বাংলাদেশ

    খাদ্য উপদেষ্টা

    ১৫ টাকায় চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার: খাদ্য উপদেষ্টা

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.