জুমবাংলা ডেস্ক : ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ বহুল প্রচলিত এ কথাটি এখন আর বাস্তবে নেই। এটি এখন কিতাবে জায়গা করে নিয়েছে। হাওর-বাওর, পুকুর, খাল-বিল, হাটবাজার কোথায়ও এখন আর মিঠাপানির সুস্বাদু মাছ আগের মত পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক দশকে দেশি প্রজাতির অনেক মাছই হারিয়ে যেতে বসেছে। মৎস্য অধিদফতরের তথ্য মতে, হারিয়ে যাওয়া দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা আড়াইশ’র বেশি। দেশি মাছের বদলে এখন বাজারে জায়গা দখল করে নিয়েছে বদ্ধপানিতে চাষ করা পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, ক্রস ও কার্পজাতীয় মাছ। তারপরও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে যে চাহিদা বেড়েছে সে পরিমাণ মাছের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের দাম চলে যাচ্ছে ক্রেতা-সাধারণের নাগালের বাইরে।
এ ছাড়া ডোবা-নালা, খাল-বিল ভরাট করায় মাছের আবাসস্থল কমে যাওয়া, কারেন্ট জালের অবৈধ ব্যবহার, ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত কীটনাশক ব্যবহার, নদীদূষণ, নদ-নদীর নব্য হ্রাস, উজানে বাঁধ নির্মাণ, ডিম ছাড়ার আগেই মা মাছ ধরে ফেলা, ডোবা-নালা-পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের চাষ ও মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো। নদ-নদী হাওর-বিলে মাছ কমে যাওয়ায় বংশ পরম্পরায় মাছ শিকারের ওপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবীরা প্রয়োজনীয় মৎস্য আহরণ করতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছে।
তবে মৎস্য বিভাগের অভিমত, মুক্ত জলাশয় অর্থাৎ নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর এসবে মৎস্য সম্পদ কমে এলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে বদ্ধ জলাশয়ে মাছের চাষাবাদ। এতে মিঠাপানির সুস্বাদু মাছ কমে এলেও চাষের মাছের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানায়, বর্তমানে আগের তুলনায় আট ভাগের একভাগ মাছও নেই নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওরে। তাই তারা সারাদিন শিকার করেও এক দেড়শ বা কোনো কোনো দিন দুইশ টাকার বেশি মাছ শিকার করতে পারে না। আর মাছ না থাকায় বাড়ির ঘাটে সারাদিন অলস বাঁধা থাকে তাদের মাছ শিকারের নৌকাগুলো। দ্রব্যমূল্যের এ অসহনীয় বাজারদরে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। জেলে পরিবারের অনেক তরুণ গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে রিকশা চালাচ্ছে অথবা অন্য কোনো পেশায় কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের মৎস্য খাতে। বিরূপ প্রভাবের কারণে কমেছে মাছের উৎপাদন। উৎপাদন কমায় মাছের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে ভোক্তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় প্রাকৃতিক উৎস যেমন- জলাশয়, খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর থেকে। বাকি ৬০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় চাষ থেকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উভয় প্রকার উৎপাদনই ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে চাহিদার তুলনায় বাজারে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। বেড়েছে দামও।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক উৎস এবং চাষের মাধ্যমে মাছ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আমাদের দেশে সাধারণত ডিম থেকে মাছের প্রজনন শুরু হয় ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হয় জুন থেকে আগস্টে। কিন্তু চলতি বছর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মে, জুন ও জুলাই মাস তীব্র খরার মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মাছ কম উৎপাদন হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদনও কম হয়েছে। কারণ, এবার পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায়নি।
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে মাছের পোনা ও ডিমের উৎপাদন কমেছে বলে স্বীকার করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে পাঁচ শতাংশ হারে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। পাশাপাশি মানুষের মাছ খাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। সর্বশেষ খানা জরিপে অনুযায়ী, দিনে মানুষ ৬৮ গ্রাম মাছ খাচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য, মানুষ প্রতিদিন দিনে ৮১ গ্রাম করে মাছ খাবে। ২০৪১ সালে এ লক্ষ্যে আমরা পৌঁছে যাব। গত বছর মাছের উৎপাদন তিন শতাংশ বেড়েছে। এ অর্থবছরে (২০২১৩-২৪) হয়ত খুব বেশি প্রবৃদ্ধি হবে না। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে তাপমাত্রা বেশ গরম ছিল। ফলে, মাছের পোনা ও ডিম উৎপাদন কম হয়েছে।
মিঠা পানির দেশি মাছের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট তুলে ধরা হলো।
ময়মনসিংহ থেকে মো. শামসুল আলম খান জানান, এ জেলার নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে দেশি প্রজাতির মাছ। অথচ নিকট অতীতেও এই অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে দেশিয় প্রজাতির হরেক রকমের মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর সেসব মাছ খুব বেশি দেখা যায় না। দেশী প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমেও এই অঞ্চলের নদ-নদী ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি নেই। পানির অভাবে দেশি মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে পানি কম হওয়ায় মাছের প্রজননও কমে যাচ্ছে। ফলে আগের তুলনায় দেশি জাতের অনেক মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মোস্তফা হোসেন জানান, দেশে ২৭০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ পাওয়া যায়। তবে সম্প্রতি সময়ে এসব প্রজাতির মাছের মধ্যে অনেকগুলোর প্রজাতির মাছ এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এসব মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অতি জুরুরি।
নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ জানান, মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে এখন দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। এক যুগ আগেও নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে প্রচুর পরিমান দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। অভয়াশ্রম না থাকা, অপরিকল্পিত জলমহাল ইজারা দেয়া, নির্বিচারে ডিমওয়ালা মাছ নিধন, ফসলী জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এখন আর আগের মতো হাওরে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এক সময় চারদিকে থই থই করা হাওড়ে ছিল অঢেল মাছের মেলা। এখন আর আগের মতো নেই জলাশয়ের সেই টইটম্বুর অবস্থা, নেই মাছের বৈচিত্র্যময়তা। নেত্রকোনার বিভিন্ন হাওরের মিঠা পানিতে আর দেখা মেলে না বিভিন্ন প্রজাতির পরিচিত মাছের। এক যুগ আগে হাওরে ২৫৩ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে অন্তত ৬৪ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে ৩০ প্রজাতিকে সংকটাপন্ন ও ৯ প্রজাতির মাছকে চরম সংকটাপন্ন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারিভাবে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ সংগ্রহের জন্য কাজ করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে হাওরের পানিতে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ পুণরায় অবমুক্তকরণসহ নানা প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানান মৎস্য কর্মকর্তারা। মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর পাড়ের মল্লিকপুর গ্রামের জেলে চন্দন বর্মণ ও শ্যাওড়াতলী গ্রামের নিপেন্দ্র বর্মন বলেন, তাঁরা পৈতৃক সূত্রে মাছ ধরা ও বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এক যুগ আগেও তাঁরা যেসব মাছ হাওর থেকে ধরতেন, এখন সে সবের বেশির ভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নতুন পানি আসার সময় কারেন্ট জাল ও চায়না বাইর দিয়ে অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা ধরার কারণে দেশি প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কিছুদিন পর হাওরগুলো মৎস্য শূন্য হয়ে পড়বে। খালিয়াজুরী উপজেলার বল্লভপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রবি চন্দ্র দাস বলেন, ‘নদী, খাল, বিল, হাওর ভরাট হয়ে যাওয়া ও পানি শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় এখন অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ থেকে মো. হাসান চৌধুরী জানান, হাওর পরিবেষ্টিত এ জেলা এক সময় মাছের রাজ্য হলেও এখন আগের তুলনায় দেশী প্রজাতীর মাছ হাট-বাজারে সচরাচর চোখে পড়ে না। দেশীয় মাছ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সে জায়গা দখল করেছে চাষকরা হাই ব্রিড জাতীয় মাছ। আর এই চাষের মাছ খেয়ে মিঠাতে হচ্ছে আমিষের চাহিদা।
সুনামগঞ্জে হাওরে এক যুগ আগেও পর্যাপ্ত পরিমান মিটা পানির সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত। প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া ওই মাছ স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, ভৈরবসহ দেশের বাইরে রপ্তানি করা হত। যাহা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির খাতে ভুমিকা রাখতো। জেলার ছোট –বড় ১৫৩ টি হাওরে ছিল মাছের সরোবর এখন এসব স্মৃতি। সে সব যেন রূপ কথার গল্প। এখন মাছের ভরা মৌসুমে ও সুস্বাদু দেশীয় মাছ স্থানীয় হাট-বাজারে দেখা মিলে না। নদী হাওরে জেলেরা সারাদিন চষেও মাছ ধরতে পারছেন না। গত কয়েক বছরে প্রায় ৩৫-৪০জাতের দেশীয় মাছের অস্তিত্ব পুরো পুরি হুমকির মুখে। গত শনিবার জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ পাকনা হাওর ও জেলা সদরে দেখার হাওর ঘুরে কয়েক জন জেলের সাথে কথা হলে তারা বলেন আগের মতো হাওর-নদীতে মাছ নেই। হাওরে পাতানো জাল তুলে হতাশ হতে হয় তাদের। কিছু ছোট পুটি, চান্দা, বাইলা,তারা-বাইম ছাড়া অন্য কোন মাছের দেখা মিলেনা। আগে বর্ষার পানিতে রুই, কাতলা, বোয়াল, কালি বাউসসহ অনেক জাতের মাছ পাওয়া যেত। এখন আর সেই মাছ নেই বলে জানান তারা।
নরসিংদী থেকে মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় খাল-বিল নদী-নালা কলকারখানার কেমিক্যালের দূষিত পানির কারণে মিঠা পানির মাছ বিপন্নের পথে। জেলার জলাশয় গুলোতে আগের মত বর্ষা মৌসুমে পানি আসে না। একসময় নদী-নালায় গুলোতে বর্ষা মৌসুম প্রচুর পরিমাণ দেশি মাছ ধরাপড়তো। এখন আর আগের মত এত বেশি মাছ পাওয়া যায় না জেলার খাল বিল ও জলাশয় গুলোতে। কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালের বর্জের পানি অবাধে নামছে এ সকল খাল, বিল, নদীনালা ও জলাশয়ে। মিঠাপানি মাছ আরো ধ্বংসের কারণ হচ্ছে, ধান চাষে ব্যবহারিত সার কীটনাশকের পানি নদী নালা খালে বিলে মিশে মাছের প্রজনন ধ্বংস করছে। এতে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের খাল-বিলে ও নদীতে দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় মাছ বিভিন্ন বাজারে খুবই কম পাওয়া যায় । উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মুহাম্মদ মালিক তানভীর হোসেন জানান, বিভিন্ন খামার ও পুকুর, বিল মৎস্য চাষীদেরকে পরার্মশ দেয়া হচ্ছে যে, দেশি শিং, মাগুর, পাপদা, টেংরা ও গুলশা চাষ করার জন্য । দেশিয় মাছ কমে যাওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন রকমের অবৈধ জাল , চিকন জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন অন্যতম কারণ। গফরগাঁও উপজেলার ৮নং গফরগাঁও ইউনিয়নের গড়াবের মোড়ে মাছ ব্যবসায়ী মো. আমান উল্লাহ জানান, গত ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র নদীতে বর্ষাকালে পানি না হওয়ার ফলে দেশির মাছের আকাল দেখা গেছে। এখন প্রতিদিন নৌকা দিয়ে তুলনামুলক ভাবে দেশি মাছ পাওয়া যায় একদম কম। সামান্য কিছু নানান ধরনের ছোট ছোট মাছ ও মাঝে মধ্যে কিছু কিছু বড় বড় দেশি মাছ পাওয়া যায়। সালটিয়া বাজারে আসা ক্রেতা শিলাসী গ্রামের মোঃ এমদাদুল হক (ইন্তু মহাজন) জানান, কয়েক বছর আগে বর্ষাকালে ধান ক্ষেতে ও বিলে দেশির মাছ প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত । কিন্তু কালেরবির্বতনে এখন আর দেশী মাছ চোখে পড়ে না। না পাওয়ার একমাত্র কারণ হলো যে, জমিতে বিভিন্ন ধরনের সারের প্রয়োগের কারনে দেশি মাছ আর উৎপাদন হতে পারছে না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োগের কারণে মাটি নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে দেশি মাছ পাওয়া সোনার হরিনের মতো।
ঢাকার ধামরাই থেকে মো. আনিস উর রহমান স্বপন জানান, ধামরাইয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন নদী, নালা, খাল বিলে আগের মতো পর্যাপ্ত পানি নেই। অপরদিকে কলকারখানার বর্জে নদী ও খালের পানি দূষণ, অসময়ে অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে দেশীয় মাছের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না। শুধু তাই নয় চায়না দুয়ারী জাল, কারেন্ট জাল ও চাই দিয়ে মা ও পোনা মাছ নিধন করার কারণে মাছের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না বলে জানালেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজনীন নাহার। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে চায়না দুয়ারী জাল ও কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করলে ও থামানো যাচ্ছে না।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী থেকে এস. কে. সাত্তার জানান, মিঠা পানির দেশিয় মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর মাছ বাজারে সরেজমিন গিয়ে নানা প্রজাতির চাষের মাছের দেখা মেলে। বিদেশী রুই, কাতলা, কৈ, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, সিলকাপ, ইত্যাদি মাছের যোগান যথেষ্ট থাকলেও দেখা মেলেনি দেশীয় প্রজাতির মাছ। খোঁজে দেখা যায় দুয়েকজন মৎস্যজীবি অল্প কিছু করে মাছ নিয়ে বসে আছেন। তাও যেভাবে দাম হাকা হচ্ছে তা নি¤œবিত্ত-মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার অনেক বাইরে। আদিকাল থেকেই দেশী মাছই পুষ্টির আঁধার। কিন্ত নদী-নালা, খাল, বিল শুকিয়ে মুক্ত জলাশয়ের মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। ফসলি জমিতে অতি মাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে মাছের জীবনচক্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।