বাড়ি তৈরি করা কিংবা নতুন বাড়ি কেনা বোধহয় প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেরই একটা স্বপ্ন। আর বাড়ি কেনার এই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে অনেকে বড়সড় পরিমাণ অর্থ ঋণ নিয়ে থাকেন। আবার অনেকেই নিজেদের সঞ্চিত সমস্ত অর্থই বাড়ির পিছনে ঢেলে দেন। আবার সম্পত্তি ক্রয় করা অন্যতম ভালো বিনিয়োগ বলেই মনে করে অধিকাংশ মানুষ। তাই খুব সাবধানে ভাবনা-চিন্তা করে তবেই বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
চুক্তি চূড়ান্ত করার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে বাড়ি সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় পড়তে না-হয়। আজ আমরা এমন ১০টি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব, যা বাড়ি কেনার সময় মাথায় রাখা উচিত।
* বাড়ি কেনার আগে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সেই বাড়িটির কার্পেট এরিয়া মূল্যায়ন করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে যে, বাড়ির বিল্ট-আপ এরিয়া এবং কার্পেট এরিয়া আলাদা। কার্পেট এরিয়া হল বাড়ির অন্দরের প্রকৃত মাপ। আবার বিল্ট-আপ এরিয়ায় কিন্তু বাইরের দেওয়াল এবং বারান্দাও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
* বাড়ির আশপাশের এলাকায় সব সুবিধা আছে কি না, সেটা দেখে নিতে হবে। মেট্রো, রেলস্টেশনের মতো যাতায়াতের মাধ্যম এবং হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, রেস্তোরাঁ-হোটেলের মতো অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। বাড়ির কাছাকাছি এই সব পরিষেবা থাকলে অনেকটাই সুবিধা হয় এবং সময়ও বাঁচে।
* ক্রেতা যেখানে বাড়ি কিনতে চলেছেন, সেখানকার আশপাশের বসবাসকারী লোকজনের মতামত অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আসলে মনে করা হয় যে, ক্রেতা যদি সম-মনস্ক ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে থাকেন, তাহলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।
* যে কোনও সম্পত্তি কেনার আগে এক জন আইন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। তাঁকে দিয়ে সম্পত্তির সমস্ত নথিপত্রের মূল্যায়ন করাতে হবে। সম্পত্তি সম্পর্কিত কাগজপত্র জটিল এবং কখনও কখনও ক্রেতারা এতে ফেঁসেও যেতে পারেন।
* যে এলাকায় বাড়ি কেনা হচ্ছে, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার আর একটি কারণও রয়েছে। এর মাধ্যমে সেই জায়গার আসল চিত্র ক্রেতার চোখে ধরা পড়বে। অনেক সময় বিক্রেতা প্রচুর সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে বলে দাবি করছেন, কিন্তু আদতে সেখানে তেমন কোনও সুবিধাই পাওয়া যায় না।
* আশপাশে কোনও ছোট বাড়ি রয়েছে কি না, সেদিকটাও দেখতে হবে। কারণ ছোট বাড়ি ভবিষ্যতে বাড়ানো হতে পারে। আসলে ছোট বাড়ি পরে বাড়ানো হলে ক্রেতা যে বাড়িটি কিনতে চাইছেন সেই বাড়িটি আড়ালে চলে যাবে এবং এর বাজার মূল্যও হ্রাস পাবে।
* নতুন বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, ক্রয়-পরবর্তী সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের খরচ যেন ক্রেতার বাজেটের সঙ্গে খাপ খায়। অতএব, রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন খরচ সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
* হোম লোন বা গৃহ ঋণ নেওয়ার আগে ভালো ভাবে সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে হবে। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিকল্পও খুঁজে রাখতে হবে এবং যেখান থেকে গ্রাহক সবচেয়ে সস্তায় ঋণ পাবেন, সেই বিকল্পটি বেছে নিতে হবে।
* নগদ পরিমাণ সম্পর্কে বিক্রেতার সঙ্গে ভালো ভাবে কথাবার্তা বলতে হবে। কোনও রকম প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে তাঁর থেকে জেনে নিতে হবে যে, কত পরিমাণ নগদ অর্থ দিতে হবে। বিক্রেতারা মাঝে মাঝেই প্রচুর নগদ অর্থ চান, বেশির ভাগের পক্ষেই যা দেওয়া সহজ হয় না।
* বিক্রেতার কাছ থেকে বাড়ির দর জানার পর, আশপাশের এই ধরনের বাড়ির গড় দাম জানার চেষ্টা করতে হবে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্মাণের গুণমান এবং অন্যান্য বাড়িতে নির্মাতার দেওয়া সুবিধাগুলি পর্যালোচনা করে নিতে হবে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.