বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমান যুগে স্মার্টফোন কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অফিসের কাজ হোক বা পড়াশোনা, ছবি তোলা কিংবা অনলাইন কেনাকাটা— সব কিছুতেই স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বাড়ছে। তাই নতুন ফোন কেনার সময় শুধু দাম নয়, বরং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
Table of Contents
বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, একটি ভালো স্মার্টফোন কেনার আগে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত—
১. প্রসেসর ও র্যাম (Processor & RAM)
স্মার্টফোনের গতি ও পারফরম্যান্স প্রধানত নির্ভর করে এর প্রসেসর ও র্যামের ওপর। যারা মোবাইলে গেম খেলেন বা একসাথে একাধিক অ্যাপ চালান, তাদের জন্য অন্তত ৬ জিবি র্যাম ও মিড-রেঞ্জ বা হাই-এন্ড প্রসেসর যেমন Snapdragon 6/7/8 সিরিজ বা MediaTek Dimensity সিরিজের প্রসেসর থাকা জরুরি।
২. ব্যাটারি ও চার্জিং প্রযুক্তি
সারাদিন স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী ব্যাটারি। অন্তত ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি হলে ভালো এবং সঙ্গে ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট থাকলে সেটি অত্যন্ত কার্যকর। দ্রুত চার্জ হওয়া কর্মব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচায়।
৩. ক্যামেরা পারফরম্যান্স
অনেকেই ক্যামেরার দিকটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে শুধু মেগাপিক্সেল নয়— ক্যামেরার অ্যাপারচার, সেন্সর, লেন্স এবং সফটওয়্যার প্রসেসিং-ও গুরুত্বপূর্ণ। কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা ভিডিও মেকারদের জন্য OIS (Optical Image Stabilization) ফিচারটি অতীব প্রয়োজনীয়।
৪. ডিসপ্লে ও রেজল্যুশন
উন্নত ডিসপ্লে চোখের আরাম নিশ্চিত করে এবং ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে করে আরও বাস্তবসম্মত। AMOLED বা OLED ডিসপ্লে, Full HD+ রেজল্যুশন এবং অন্তত 90Hz বা 120Hz রিফ্রেশ রেট থাকলে সেটি সর্বোত্তম।
৫. স্টোরেজ ও এক্সপান্ডেবিলিটি
ফোনে কতটা অ্যাপ, ছবি, ভিডিও বা ফাইল রাখা যাবে তা নির্ভর করে স্টোরেজের উপর। বর্তমানে ১২৮ জিবি স্টোরেজকে ন্যূনতম মান ধরা হচ্ছে। যারা ভিডিও বানান বা বড় ফাইল সংরক্ষণ করেন, তাদের জন্য ২৫৬ জিবি বা মাইক্রোএসডি কার্ড সাপোর্ট থাকা ভালো।
৬. অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার আপডেট
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট ও সিকিউরিটি প্যাচ দেওয়া হয় কি না, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। অনেক ব্র্যান্ড ২-৩ বছর পর্যন্ত সফটওয়্যার সাপোর্ট দেয়। এর ফলে ফোনটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত নিরাপদ ও আপডেটেড থাকে।
৭. ব্র্যান্ড, ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা
বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের ফোন মানসম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের জন্য ভালো ওয়ারেন্টি ও সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা নিশ্চিত করে। তাই কেনার আগে দেখে নিন আপনার এলাকায় সেই ব্র্যান্ডের অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টার আছে কি না।
৮. বাজেট ও ব্যবহারকারীর চাহিদা
সবশেষে, স্মার্টফোন কেনার সময় নিজের চাহিদা ও বাজেট বিবেচনায় নেওয়াটাই সবচেয়ে জরুরি। যারা কেবল সাধারণ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য মিড-রেঞ্জ ফোনই যথেষ্ট। তবে যারা গেমিং, ভিডিও এডিটিং বা ফটোগ্রাফি করেন, তাদের জন্য নির্দিষ্ট ফিচারযুক্ত ফোন প্রয়োজন।
ছোট পর্দার রহস্যে বড় গল্প নিয়ে সেরা ওয়েব সিরিজ, একা দেখার মত!
নতুন স্মার্টফোন কেনা একটি বড় সিদ্ধান্ত এবং এটিকে একটি বিনিয়োগ হিসেবেও ধরা যায়। ভুল সিদ্ধান্ত নিলে অর্থের অপচয় হতে পারে। তাই শুধুমাত্র ব্র্যান্ড দেখে নয়, বরং নিজের প্রয়োজন ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী ফিচার যাচাই করে ফোন কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।