বিনোদন ডেস্ক : গেল বৃহস্পতিবার তারকা দম্পতি শরিফুল রাজ ও পরীমণির একমাত্র সন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যের প্রথম জন্মদিন ছিল। আর এদিন রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে জমকালো আয়োজনে ছেলের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করবেন এই চিত্রনায়িকা। শুভেচ্ছা জানাতে সেখানে উপস্থিত হয় পরীর শুভাকাঙ্ক্ষীরা। উপস্থিত ছিলেন এই সময়ের চিত্রনায়িকা জাহারা মিতু এবং ‘ঢাকা অ্যাটাক’খ্যাত নির্মাতা দীপংকর দীপন।
অনুষ্ঠানে রাজ্যকে কোলে নিয়ে ক্যামেরাবন্দী হন মিতু ও দীপন। যা পরবর্তী সময়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন চিত্রনায়িকা। আর ক্যাপশনে লিখেন, ‘আমাদের একটা “পরীর বাচ্চা” আছে।’ আর এই ‘আমাদের’ কথাটির কারণেই নেটিজনদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছে নায়িকা ও নির্মাতা।যদিও পরবর্তী সময়ে সেই ছবি সরিয়ে নেন জাহারা মিতু।
তবে বিষয়টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে কথা বলেছেন নির্মাতা দীপংকর দীপন। দীর্ঘ এক স্ট্যাটসে তিনি লিখেছেন, ‘এটা কি পোস্ট, ভাই? এই পোস্টের ছবি ও লেখা মিলে কী দাঁড়ায়, সেটা কি তুমি বুঝ না মিতু? কমেন্ট দেখ, যা তুমি ডিলিটও করনি। আর, এদিকে অন্যদের বোঝাতে বোঝাতে আমার জীবন শেষ, জাহারা মিতুর সঙ্গে আমার কোনো (বিশেষ) সম্পর্ক নেই। দহরম-মহরম সম্পর্কও নেই, বরং খুব ফরমাল সম্পর্ক। একবার দুবার দেখা হয়েছে, তাও কোনো অনুষ্ঠানেই। অনেকে বিশ্বাস করে, অনেকেই করে না; খিক খিক করে হেসে বলে, ভাই ছবি ও পোস্টের ভাষা তো অন্য ইঙ্গিত দেয়। আর পারিবারিক অশান্তির কথা তো না-ই বললাম, সেটা সবাই বুঝবে।’
ছবি তোলার পেছনের গল্প টেনে এই নির্মাতা বলেন, ‘ছবি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা গিয়ে রাজ্যকে নিয়ে ছবি তুলেছি, অথচ বিষয়টা ছিল পুরো উল্টো। আমি ভালো মতো খেয়ালই করিনি সেদিন আমার পাশে কে ছবি তুলেছে। সিচ্যুয়েশনটা তেমনই ছিল। সেদিন “সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ” এর লোগো উন্মোচনের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের প্রায়ই শেষের দিকে নির্মাতা চয়নিকা দি (চয়নিকা চৌধুরী) এসে বললেন, দাদা পরীমণি চায় যে আপনার সঙ্গে রাজ্যের ছবি থাকুক। পরী অপেক্ষা করছে। তার একটু আগে হাউসের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হিসেবে পরী আমার হাতে র্যাফেল ড্র এর বক্স তুলে দিয়েছিল। আমি সেটা দিয়েছিলাম, রায়হান রাফিকে।
আমি রাজ্যের কাছে গেলাম। পরী রাজ্যকে আমার কোলে তুলে দিল। রাজ্য ভীষণ ভীষণ কিউট একটা বাচ্চা। এত মানুষের মধ্যে বাচ্চাটাকে সামলে রাখা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলাম। এত তুলতুলে বাচ্চা। রাজ্য এর অদ্ভুত বিষয় হলো থেমে থাকলে ও কাঁদে। হাঁটলে কান্না থামিয়ে চারপাশে তাকায়, আমি আরও শক্ত হয়ে রাজ্যকে সাবধানে কোলে আগলে হাঁটছিলাম। ওই সময়ে অনেকে এসে ছবি তুলেছে। সেসব দিকে নজর দেওয়ার মতো অবস্থা আমার ছিল না। অনেককে আমি দেখিওনি। এমনকি আমি নিজেও কোনো ছবি তুলতে পারিনি। আমি অস্থির ছিলাম, রাজ্যর যেন কোনো অসুবিধা না হয়।’
ছবির ক্যাপশনটি এমন কেন উল্লেখ করে দীপন বলেন, ‘আমি ইদানিং ফেসবুক থেকে একটু দূরে থাকি। গতকাল রাতে আমাকে ইনবক্সে ক’জন নক করল। সেখানে জানতে পারলাম, স্ক্রিনশটের পোস্টটি সম্পর্কে। পরে জানলাম, পরীর পোস্ট করা অনেক ছবি থেকে একটি ছবি জাহারা মিতু রিপোস্ট করেছে। তাতে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু ভেরিফায়েড পেজে আর কোনো ছবি পোস্ট না করে শুধু আমাকে নিয়ে ছবিটা পোস্ট করা কেন, পরীর সঙ্গে ছবিও তো ছিল। তাও না হয় ঠিক আছে, এই পোস্ট এর লেখা এই রকম কেন? দুটো মিলে এই পোস্ট আমাকে খুব বিব্রত-বিরক্ত-দুঃখিত করেছে। ছবির পোস্টের কিছু কমেন্ট পড়লেই বুঝবেন। আর ব্যক্তিগত জীবনে কি হয়েছে, হচ্ছে, সেটা আর না বলি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হয়তো বলবেন মিতুকে সরাসরি বলতেন, ডিলিট করে দিত পোস্টটা। দিত হয়ত। কিন্তু পোস্টটা তো পাবলিক ছিল- তাতে অনেক মানুষ যারা এই পোস্ট দেখেছে, আমাকে চেনে, তাদের মনে তৈরি হওয়া ধারণা আমি বদলাতে পারতাম না। কিছু দেখে যারা কিছু জানতে চায়, তাদের বিষয়টা বোঝানো যায়। কিন্তু যারা কিছু জানতে না চেয়ে, ধারণা করে ফেলে তাদের ভুল ধারণা বদলানো যায় না। কখনও যায় না, জানাই যায় না। তাই আমাকেও পাবলিকলি বলতে হলো। যদিও সব সমস্যা বলতে পারলাম না।’
সবশেষে নির্মাতা বলেন, ‘আসলে আমরা কীভাবে ফেসবুকে পোস্ট করব, ছবির ক্যাপশন কি দিব, কি ভাষা ব্যবহার করব সেগুলো খেয়াল করা খুব প্রয়োজনীয়। বাক্য বা শব্দ চয়নের কারণে পুরো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, তা যেন কারও জীবনে বিব্রতকর না হয়ে যায়, ব্যক্তিগত জীবন কঠিন না হয়ে যায়, সেটা লক্ষ্য রাখা ভীষণ দরকার, প্লিজ।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।