জুমবাংলা ডেস্ক : ছোটবেলা থেকেই হেলিকপ্টারে উড়ার শখ ছিল নাজমুল হোসেন খানের (২৪)। হেলিকপ্টার তৈরি করে সেই পূরণ করতে যাচ্ছেন তিনি। কোটি টাকা নয়, মাত্র ২ লাখ টাকা খরচে দেশীয় প্রযুক্তি আর চায়না ইঞ্জিনে তৈরি করেছেন একটি হেলিকপ্টার। যা এখন আকাশে উড়ার অপেক্ষায়।
খুলনার ফুলতলা উপজেলার জামিরা ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান নাজমুল। তারা এক ভাই, এক বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। নাজমুল পড়াশুনা করছেন সরকারি বিএল কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষে। ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রমী কিছু করার প্রচেষ্টা থেকে গত তিন বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করেছেন এক আসন বিশিষ্ট হেলিকপ্টারটি। নিজের স্বপ্ন থেকে নাজমুল ওয়েবসাইটের সহযোগিতায় জ্ঞান অর্জন করে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছেন এই হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টারের ইঞ্জিন ব্যয়বহুল তাই নিজস্ব মেধায় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন মডিফাই করে এটি তৈরি করেছেন। মা—বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজ চেষ্টায় সফল হয়েছেন তিনি।
এখন আকাশে উড়ার অপেক্ষায় নাজমুলের হেলিকপ্টার। তবে এর জন্য প্রয়োজন আরো নিরাপত্তা সরঞ্জাম। ইতিমধ্যে নাজমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। হেলিকপ্টারটিকে আরো নিরাপদ ও আকাশে উড়ার উপযোগী করে তোলার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এখন প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতার।
হেলিকপ্টার প্রস্তুতকারী নাজমুল জানান, হেলিকপ্টারের বডি তৈরিতে ব্যবহার করেছেন এস এস পাইপ। এছাড়া চায়না ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের আরপিএম সাড়ে ৬ হাজার থেকে বাড়িয়েছেন ৯ হাজার আরপিএমএ। এর পাখা সাড়ে ৮ ফিট লম্বা, চওড়া ২১ মিটার। পুরো হেলিকপ্টারটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ ফিট। হেলিকপ্টারটি এক লিটার অকটেনে ১৮ থেকে ২০ মিনিট চলবে। যার সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার। তিনি বলেন, আশা করছি, পূজার পরেই পরীক্ষামূলকভাবে হেলিকপ্টারটি উড়াতে পারব।
নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম খান পেশায় একজন কৃষক। তবে একটি মুদি দোকান আছে তার। দারিদ্রতার মাঝেও ছেলের উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহিত করতে যুগিয়েছেন অর্থ। ছেলের সাফল্যে আবেগাপ্লুত তিনি।
স্থানীয়রা নাজমুলের হেলিকপ্টার উদ্ভাবনে উচ্ছ্বাসিত। নাজমুলের হেলিকপ্টার বানানোর পরিকল্পনাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন এলাকাবাসী। বর্তমানে যন্ত্রটি কাজ করায় গর্বিত তারা। প্রতিদিনই দূর—দূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন নাজমুলের হেলিকপ্টার দেখার জন্য।
স্থানীয়রা বলেন, নাজমুল হেলিকপ্টার তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে। সে আমাদের এলাকার গর্ব। আমরা তার সফলতা কামনা করি।
বিএল কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল খান বলেন, হেলিকপ্টারটি তৈরি করতে ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। হেলিকপ্টারটি উড়ানোর অপেক্ষায় আছি। তবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আবহাওয়াজনিত কারণে এখনই হেলিকপ্টারটি উড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বৃষ্টি কমলে হেলিকপ্টার উড়ানো সম্ভব হবে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেলিকপ্টার প্রস্তুতকারক নাজমুল খানকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া হেলিকপ্টার ওড়ানোর সময় ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।