জুমবাংলা ডেস্ক : বিলুপ্ত না করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ‘স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা আন্দোলনের মধ্যে রোববার এ সিদ্ধান্ত জানায় মন্ত্রণালয়।
বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত বাতিল হওয়ায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
এনবিআর বিলুপ্ত না করার ঘোষণা দিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
এর কিছু সময় পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ থেকে।
পরিষদ বলছে, “অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি থেকে স্পষ্ট যে, এনবিআর বিলুপ্ত হবে না; বরং এটিকে সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় আরও শক্তিশালী করা হবে। “রাজস্ব নীতি প্রণয়ণের লক্ষ্যে আলাদা একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের আগ পর্যন্ত অধ্যাদেশটি কার্যকর হবে না।”
আন্দোলনকারীরা বলছেন,“সরকারের এ ঘোষণার ফলে আমাদের এতদিনের দাবি ও কর্মসূচির যৌক্তিকতা দেশবাসীর কাছে প্রমাণিত হয়েছে।
“এই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সোমবার থেকে ঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হল।”
তবে এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি না মানায় তার সঙ্গে ‘অসহযোগ কর্মসূচি’ চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
গত ১২ মে রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।
পরদিন থেকে তা বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন দেশের প্রধান রাজস্ব আহরণকারী সংস্থাটির কর্মীরা।
তাদের আন্দোলনের মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় এখন বলছে, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
সেজন্য ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ওই অধ্যাদেশে সংশোধন করা হবে। এনবিআর, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রেসনোটে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সরকার আশা করেছিল যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট সার্ভিসের সকল উদ্বেগের অবসান ঘটবে। কিন্তু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাম্প্রতিক প্রেস রিলিজে মনে হচ্ছে, এ বিষয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
সে কারণে সরকারের অবস্থান আরো স্পষ্ট করতে তিন পয়েন্টে একটি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।
>> জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
>> বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালী করা এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতির আলাদা কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
সে কারণে সরকারের অবস্থান আরো স্পষ্ট করতে তিন পয়েন্টে একটি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।
>> জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
>> বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালী করা এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতির আলাদা কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
>> জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথককরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখের মধ্যে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। সংশোধনের আগ পর্যন্ত অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সরকার আশা প্রকাশ করছে যে, এই ঘোষণার মাধ্যমে কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের সকল উদ্বেগের অবসান ঘটবে এবং দেশের রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব সেবা প্রদানকারী সকল দপ্তর অবিলম্বে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।