জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা বলেছেন, পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশের সঙ্গে অতীতের বৈরী সম্পর্ক পেছনে ফেলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশকে নিয়ে ১৯৭১ সালের ইস্যুটি ‘সমাধান করা’।
সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে এনসিপির সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল শনিবার পাকিস্তান হাইকমিশনে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে এসব মন্তব্য করেন। বৈঠক শেষে আখতার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের জনগণের পাকিস্তান সম্পর্কে ধারণা তাদের কাছে তুলে ধরতে। এনসিপি মনে করে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আগে যে বৈরী সম্পর্ক ছিল, তা উন্নত করার সুযোগ রয়েছে।’
আখতার বলেন, জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিকে ‘সবচেয়ে সংবেদনশীলভাবে’ বিবেচনায় নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে এবং সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার যে কোনো উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ইস্যুটি সমাধান করা জরুরি। আমরা তাদের সঙ্গে সেই প্রসঙ্গ তুলেছি।
১৯৭১ সালের তিনটি অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে ইসহাক দার কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, সেটা পাকিস্তান জানাতে পারবে।
একই বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা তাদের বলেছি ১৯৭১ সালের বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা উচিত। তারা জানিয়েছে, তারা প্রস্তুত।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি অমীমাংসিত ঐতিহাসিক ইস্যু এখনো রয়ে গেছে— ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভক্ত সম্পদের ন্যায্য অংশ বাংলাদেশকে দেওয়া।
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, বাংলাদেশে পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিনিময় কর্মসূচি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় এসব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আলোচনায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন সম্পর্কেও কথা হয়েছে। এছাড়া নদী ও ওষুধ শিল্পসংক্রান্ত বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।
সার্ক প্রসঙ্গে পাটোয়ারী বলেন, ভারতের কারণে সার্ক অচল হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সার্ককে কীভাবে আরও সক্রিয় করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানও একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং এই অঞ্চলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
এনসিপি প্রতিনিধি দলে ছিলেন মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক রেজা ও সদস্য সাগর বড়ুয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।