জুমবাংলা ডেস্ক : অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানালেও আপাতত নির্বাচনি প্রস্তুতি থেকে সরে এসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলীয় কার্যক্রমে নির্বাচনের প্রতি কিংবা আসনভিত্তিক দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের যে প্রক্রিয়া চলমান ছিল সেখান থেকে দলটি সরে এসেছে।
জানা গেছে, রাজনৈতিক মাঠে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে শেখ হাসিনার বিচার ও আওয়ামী লীগকে দলীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে দলটি। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নিশ্চিত করা এবং জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে দলীয় কাঠামো শক্তিশালী করার দিকে জোর দিচ্ছে তারা। এনসিপির নীতি-নির্ধারণী নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী দীর্ঘ সময় পার হলেও সরকার এখনো গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে পারেনি, এটা আমাদের জন্য হতাশার। দলীয়ভাবে এনসিপির এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে শেখ হাসিনার বিচার এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন। দলটির নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে এই শীর্ষনেতা জানান, যেহেতু সরকার এখনো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানায়নি, আমরা এখন জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক বিস্তৃতি নিশ্চিত করার কাজে মনোযোগ দিচ্ছি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ঈদে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্ধশতাধিক নেতা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ করলেও ঈদ পার হওয়ার পর এদের অধিকাংশই এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক নেতা জনসংযোগে এলাকার মানুষের আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে স্থানীয় কার্যক্রম সীমিত করে দিয়েছেন। সম্প্রতি দলীয় পরিসরে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচনায় এসেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি প্রচারণা কিংবা জনসংযোগ বাদ দিয়ে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করলেও এনসিপি মনে করছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশনের কোনো সুপারিশ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি। এছাড়া সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে এনসিপি। তাদের দাবি ছিল, নিবন্ধনের সময়সীমা তিন মাস (৯০ দিন) বাড়ানো হোক। তবে নির্বাচন কমিশন দুই মাস সময় বাড়িয়েছে। এনসিপি বলছে, তারা নবগঠিত দল হওয়ায় নিবন্ধনের শর্ত পূরণে বাড়তি সময় প্রয়োজন। দলটি আশা করছে, এই দুই মাসের মধ্যে তারা শর্ত পূরণ করতে পারবে। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এখন তাদের অগ্রাধিকারে নেই। এ প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা মৌলিক সংস্কার চাই সবার আগে। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থবহ হবে না।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সার্ভিসসহ একাধিক প্রস্তাব
এদিকে এনসিপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দলীয়ভাবে তারা মনে করছে—সরকার এখনো নির্বাচন দেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। ভোটার তালিকা, প্রবাসীদের প্রক্সি ভোট এবং ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে আরও অন্তত এক বছরের বেশি সময় প্রয়োজন। এ কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে এনসিপি মনে করছে না। তাই নির্বাচনকে এখন লক্ষ্য না করে দল গোছানো এবং সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে তারা। এ লক্ষ্যে এনসিপি আগামী দুই মাসে বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন, বর্ধিত সভা এবং প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।