নেশা ও জুয়া ইসলামে হারাম

islamic

ধর্ম ডেস্ক : শান্তির ধর্ম ইসলাম বিবেকবান ব্যক্তিকে মর্যাদা দিয়েছে। বিবেকবানরা নেশা করেন না, আল্লাহতায়ালা ও প্রিয় নবীজির (সা.) নির্দেশনা মানেন। মদ ও জুয়া ইসলামে হারাম। কারণ নেশা মানুষকে অন্যায় কাজে প্ররোচিত করে। নেশাগ্রস্ত মানুষের জন্য তার পরিবার ধ্বংস হয়। সমাজ নষ্ট হয়। নেশাগ্রস্ত মানুষের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মদের নেশা, জুয়ার নেশায় মত্ত মানুষ সমাজ ধ্বংস করে। তাই নেশা ও জুয়া ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

islamic

নেশার অনিষ্ট থেকে উম্মতকে বাঁচাতে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদপানকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। নেশার জগতে পা বাড়ালে মানুষ ক্ষয়ে ক্ষয়ে নিঃশেষ হয়ে যায়।

মাদকাসক্তি মানুষকে জ্ঞানশূন্য করে দেয়। তখন তার সামাজিক বন্ধন ও সম্মানের কোনো চিন্তাই থাকে না। প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কখনোই তুমি মদপান করবে না। কারণ, তা সব অকল্যাণ ও অঘটনের চাবিকাঠি।’ (ইবনে মাজাহ-৩৪৩৪)।

পবিত্র আল কোরআন ও হাদিসে মদ ও জুয়াকে সমানভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিন, এ দুটি মহাপাপ। (সুরা বাকারা, আয়াত-২১৯)।

আমরা জানি ইসলামের দৃষ্টিতে মদ-জুয়া কবিরা গুনাহ। হারাম। শয়তান মানুষের কখনো ভালো চায় না।

ইসলামে যে কারণে মদ জুয়া হারামসে চায় মানুষ আল্লাহকে ভুলে থাকুক। সমাজে মন্দ আর ক্ষতিকর কাজের ব্যাপকতা ছড়িয়ে পড়ুক। জান্নাতিকে জাহান্নামি আর সমাজের শান্তিকে অশান্তিতে পরিণত করার জন্য শয়তান জাল বোনে মদ-জুয়ার মাধ্যমে। যারা জুয়া খেলে আর মদ খায় তাদের জীবন ধ্বংস, পরিবার নিঃস্ব, অশান্তির দাবানলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

আল কোরআনে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘হে ইমানদারগণ! মদ, জুয়া ও লটারি এসবই শয়তানের কাজ। তোমরা তা থেকে বিরত থাক। আশা করা যায়, তোমরা সফলতা লাভ করতে পারবে। (সুরা মায়েদা, আয়াত-৯০)।

মদ বেচাকেনা করা, পান করা, বহন করা, মদের ব্যবসার অনুমোদন সবই ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ। নবীজি (সা.) বদ দোয়া করেছেন মাদকতায় জড়িতদের প্রতি। যারা এর অনুমোদন করে, সরবরাহ করে তাদের প্রতিও।

জুয়াকে আরবিতে ‘মায়সির’ ও ‘কিমার’ বলা হয়। মায়সির ও কিমার এমন খেলাকে বলা হয়- যা লাভ ও ক্ষতির মধ্যে আবর্তিত থাকে। জুয়া খেলার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। নবীজি (সা.)-এর আগমনের সময় তৎকালীন মক্কায় নানা ধরনের জুয়ার প্রচলন ছিল। বর্তমানে প্রাচীন পদ্ধতি ছাড়াও জুয়ার ক্ষেত্রে আরও বহু নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে; এগুলোর সবই হারাম। এখন অনলাইনে জুয়া খেলা আর ক্যাসিনো জুয়া খেলা অহরহ দেখতে পাচ্ছি। মোবাইলে জুয়ার আসর। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সচেতন না হলে সামনের দিনগুলো অনেক ভয়াবহ হবে।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যকে জুয়া খেলার প্রতি আহ্বান করবে, তার উচিত কিছু সদাকা করে দেওয়া।’ হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) শুধু জুয়াকেই হারাম করেননি, বরং জুয়ার ইচ্ছা প্রকাশকেও গুনাহ সাব্যস্ত করেছেন। যে ব্যক্তি অন্যকে জুয়া খেলার জন্য ডাকবে তাকেও গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে উপযুক্ত সদাকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই জুয়া খেললে কী পরিণতি হতে পারে সে সম্পর্কে সবার চিন্তা করা উচিত।

https://inews.zoombangla.com/%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%98-%e0%a7%a7%e0%a7%ab-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%a4/

ইসলামে সব ধরনের জুয়া ও বাজি ধরা অবৈধ। এর থেকে প্রাপ্ত আয় হারাম। আর হারাম সম্পদ ভোগ করে ইবাদত-বন্দেগি করলে আল্লাহর দরবারে তা কবুল হয় না।

তাই আসুন, আমাদের যুব সমাজকে মদ-জুয়ার ভয়াল নেশা থেকে সাবধান করি। যুবক- যুবতীসহ সবাইকে আল্লাহতায়ালা এসব মন্দ কাজ পরিহার করার তৌফিক দান করুন। ইসলামের পথে কবুল করুন। আমিন।

লেখক : মুফতি মোহাম্মদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী