আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মোবাইলে যোগাযোগ করার জন্য নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ। নেটওয়ার্ক ছাড়া ফোনে অপর প্রান্তে সংযোগ পাওয়া সম্ভব নয়। এখন যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ঘরে বসেই পাওয়া যায় থ্রিজি ফোরজি নেটওয়ার্ক। কিন্তু ঘানার এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে কেবলমাত্র গাছের নিচে গেলেই পাওয়া যায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক। সেখানে গাছই যেন কথা বলার মাধ্যম।
ঘানা পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দেশটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ঘনবসতিপূর্ণ দেশটিতে শত জাতির লোকের বাস। ঘানার আঞ্চলিক রাজধানী তামালি থেকে দুই ঘণ্টার পথ বলিসিনিয়া গ্রাম। বেশিরভাগ গ্রামবাসীর রয়েছে মোবাইল ফোন। কিন্তু নেটওয়ার্ক সব সময় না-পাওয়া যাওয়ায় তারা কথা বলতে পারেন না ইচ্ছেমতো। এ জন্য তারা একটি গাছের কাছে যান।
দেখতে সাধারণ মনে হলেও গ্রামবাসীর কাছে গাছটি অসাধারণ! এটি নিমগাছ। গ্রামের কোথাও নেটওয়ার্ক পাওয়া না গেলেও এই নিমগাছের নিচে ফোনের নেটওয়ার্ক পান গ্রামবাসী। ফলে গাছটির নিচে গ্রামবাসীর ভিড় লেগেই থাকে। গাছের নিচে দাঁড়িয়ে যে যত উঁচুতে পারে ফোন ধরে রাখে- এই বুঝি নেটওয়ার্ক এলো! অনেকে গাছের ডালের সঙ্গে ফোন বেঁধে রাখেন। কেউ আবার উঠে বসেন গাছের ডালে৷
গ্রামবাসীদের কাছে এই গাছ পরম সম্মানেরও। ফলে গাছের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে দিকে সবাই মিলে খেয়াল রাখেন। কারণ গাছটি একবার ভেঙে গেলে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হলে গ্রামবাসীদের ফোনে যোগাযোগ করার মতো আর কোন উপায় থাকবে না।
গ্রামবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী নিমগাছটি আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে ফোনের নেটওয়ার্ক থাকে না, কল করলে কেটে যায়। এই গাছের নিচে আসলেই আমরা কেবল কথা বলতে পারি। গাছটির কিছু হলে পুরো গ্রাম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অনেকেই কৌতূহল প্রকাশ করেন। দেশটির টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার টনি আসান গাছটির এই রহস্য প্রসঙ্গে বলেন, সাইট থেকে এরকম জায়গা সাধারণত অনেক দূরে। ফলে সেখানকার মানুষ সিগন্যাল ঠিকমতো পায় না। মোবাইল সিগন্যাল লাইটের আলোর মতো কাজ করে।
এর সামনে কিছু পড়লে সেটি প্রতিফলন ঘটায়। যেহেতু জায়গাটি দূরে, সেখানে যা কিছুই সামনে পড়ুক না কেন, তা প্রতিফলিত হবে। গাছ এ ক্ষেত্রে ভালো উদাহরণ। গাছের ডালপালা এই প্রতিফলন ঘটাতে পারে। ফলে সেখানে গাছটির কারণে সিগন্যাল গভীর হচ্ছে। তাছাড়া গাছটি বেশ উঁচু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।