বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ২০২৩ সালে ছিল ইলেকট্রিক গাড়ির দারুণ উত্থানের সময়। এরপর থেকে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো আরও উন্নত করতে। ফলে নতুন বছরে বাজারে আসছে নতুন প্রযুক্তির অনেক নতুন গাড়ি।
টাটা কার্ভ ইভি
বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে টেক্কা দিতে আধুনিক ডিজাইনের ইলেকট্রিক গাড়ি কার্ভ ইভি আনতে যাচ্ছে টাটা। এটি ব্যাটারির পাশাপাশি পেট্রলচালিত ইঞ্জিনেও পাওয়া যাবে। এ বছরের মাঝামাঝিতে এটি বাজারে আসবে। এরই মধ্যে কার্ভ ইভির পরীক্ষা শুরু করেছে টাটা মোটরস। পুরো চার্জে এটি চলবে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। থাকবে ডুয়েল মোটর সেটআপ এবং অল হুইল ড্রাইভ। এই গাড়ির ডিজাইন অনেকটাই কাপল টাইপ এসইউভির মতো।
মাহিন্দ্রা এক্সইউভি ই৮
গাড়িটি এ বছরের অক্টোবর মাসে বাজারে আসতে পারে। রাফ অ্যান্ড টাফ লুকের সঙ্গে প্রিমিয়াম ফিচার্স এবং ডিজাইন রাখা হচ্ছে গাড়িতে। পুরো চার্জে এটি প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার চলার কথা। এসইউভির দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির জনপ্রিয়তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চলেছে এই গাড়ি। মাহিন্দ্রার এই নতুন মডেলের সঙ্গে এক্সইউভি ৭০০ মডেলটির অনেক মিল আছে। কিন্তু এ দুটির প্রধান ফারাক হলো, নতুন এই মডেলে রয়েছে একটি ফুল ইউডথ এলইডি লাইট বার এবং ব্ল্যাঙ্কড অব গ্রিল। সঙ্গে থাকছে ৮০ কিলোওয়াট আওয়ার ক্ষমতার ব্যাটারি প্যাক।
শাওমির ইলেকট্রিক গাড়ি
মোবাইল ফোন, টিভি, রাউটার ও ট্যাবের গণ্ডি থেকে বের হয়ে আরও বেশ কিছু বৈচিত্র্যময় পণ্য বাজারে আনার উদ্যোগ নিয়েছে শাওমি। এর অংশ হিসেবে ইলেকট্রিক গাড়ির জগতে প্রবেশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে অটোমোবাইল খাতে শাওমি দুটি মডেল নিয়ে আসছে। এর একটি এসইউ৭, অন্যটি এসইউ৭ ম্যাক্স। দুটি গাড়িই বেইজিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বিএআইসি গ্রুপ নির্মাণ করবে। এসইউ৭-এর প্রতি ঘণ্টার সর্বোচ্চ গতিবেগ ২১০ কিলোমিটার এবং এসইউ৭ ম্যাক্সের প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার। সবচেয়ে ভারী মডেলটির ওজন হবে ২ দশমিক ৬৬ টন। এসইউ৭ মডেলে থাকবে চীনের গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডির লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি। এসইউ৭ ম্যাক্সে থাকবে সিএটিএলের নিকেল-কোবাল্টভিত্তিক লিথিয়াম ব্যাটারি।
মারুতি ইভিএক্স
এ বছরের শেষের দিকে মারুতি তাদের প্রথম ইভি আনতে চলেছে বাজারে। এর আকার অনেকটাই গ্র্যান্ড ভিটারার মতো বড়। এর রেঞ্জ ৫৫০ কিলোমিটারের আশপাশে। এর সঙ্গে ৬০ কিলোওয়াট আওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ব্যাটারি প্যাক থাকছে। যদিও একেবারে প্রথম দিকের মডেলে ব্যাটারি প্যাক থাকবে খুবই ছোট। এরই মধ্যে এই গাড়ি নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ধারণা করা হচ্ছে, মারুতির অন্যান্য গাড়ির ডিজাইন থেকে মারুতি ইভিএক্স হবে একেবারে আলাদা।
টাটা সিয়েরা ইভি
টাটা মোটরসের দ্বিতীয় ইলেকট্রিক গাড়ি এটি। ভারতের ইলেকট্রিক গাড়ির বাজারে বড় চমক নিয়ে হাজির হতে পারে সিয়েরা। ২০২০ সালের অটো এক্সপোতে এই গাড়ি প্রথম সামনে আনা হয়। গাড়ির চূড়ান্ত নকশায় দেখা যায়, টাটা সিয়েরার ভেতরে পৃথক সিটের সঙ্গে পৃথক টেবিল রয়েছে, রয়েছে মুভি-স্ক্রিন। স্ক্রিনের আকারও খুব একটা ছোট নয়। টাটার নেক্সন এবং কার্ভের যে ডিজাইন, এর থেকেও টাটা সিয়েরা ইভির ডিজাইন অনেকটাই অভিনব হতে চলেছে। হ্যারিয়ার ও সাফারির মতো অনেকটা লুক এবং শক্তিশালী ব্যাটারি প্যাক নিয়ে এ বছরের শেষের দিকে আসতে চলেছে এই গাড়ি।
কিয়া ইভি৯
ইভি৯-এ থাকবে ৭৬ দশমিক ১ কিলোওয়াটের ব্যাটারি। বেস লাইট আরডব্লিউডি ট্রিম ছাড়া কিয়া ইভি৯-এর ৯৯ দশমিক ৮ কিলোওয়াটের ব্যাটারি প্যাকচালিত এয়ার ল্যান্ড ও জিটি-লাইন ট্রিম রয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮ মিলিমিটার এবং হুইলবেস ৩ হাজার ৯৯ মিলিমিটার দীর্ঘ। কিয়া ইভি৯-এর হুইলবেস মার্সিডিজ বেঞ্জ ই-ক্লাস এলডব্লুবির চেয়ে কিছুটা দীর্ঘ। ছয়জন যাত্রী ধারণক্ষমতার এই গাড়ির দ্বিতীয় সারির আসন ১৮০ ডিগ্রি ঘোরানো যায়। ইনফোটেইনমেন্ট ও ইনস্ট্রুমেন্টেশনের জন্য রয়েছে টুইন ১২ দশমিক ৩ ইঞ্চি স্ক্রিন। এতে রয়েছে অ্যালয় হুইল ডিজাইন, বড় এলইডি ডিআরএল, এলইডি হেডলাইট, টুইন সানরুফ, টাইগার-নাক গ্রিল, ফ্লাশ ডোর হ্যান্ডেল এলিমেন্ট।
সঙ্গে থাকবে এডিএএসের মতো দুর্দান্ত সেফটি ফিচার। ক্রুজ কন্ট্রোল, লেন অ্যাসিস্ট অ্যালার্ট এবং অটোমেটিক ইমার্জেন্সি ব্রেকিং ব্যবস্থা থাকবে গাড়িতে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর দাম পড়বে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।