জুমবাংলা ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিক্ষার্থীদের জন্য আটটি আবাসিক হল রয়েছে। সম্প্রতি হলগুলোতে রাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্রদের রাত ১১টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের মাগরিবের আজান হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে হলে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রভোস্ট কাউন্সিলের ১৪০তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
হল সূত্রে জানা যায়, গত ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের ১৪০তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিন নম্বর প্রস্তাবে ছাত্র ও ছাত্রীদের রাতে হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্রদের ৫ টি হলে রাত ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থী প্রবেশ বাধ্যতামূলক এবং ছাত্রীদের ৩ টি হলে মাগরিবের আজান হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বিষয়টির পক্ষে বিপক্ষ নিয়ে ফেসবুকেও বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সমাধান বাদ দিয়ে ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে পড়ে আছে। রাত ১১টার পর অনেক শিক্ষার্থীর হলের বাইরেও বিভিন্ন কাজ থাকতে পারে। জরুরি প্রয়োজনে বাইরেও যেতে হতে পারে। নিরাপত্তার কথা বলে এভাবে সময়সীমা বেঁধে দেয়া সুষ্ঠু পদক্ষেপ হতে পারে না। বরং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের উচিত কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া।
অন্যদিকে কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আর এজন্য প্রত্যেক হলের রিডিং রুমে পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ, হলের ভেতরে ক্যান্টিন স্থাপন করা এবং ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে জরুরি অবস্থায় প্রবেশ ও প্রস্থানের রোডম্যাপও নির্ধারণ করতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এভাবে জোরপূর্বক আটকে রাখা সম্ভব নয়। প্রয়োজনে যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষার সমৃদ্ধি ঘটানো দরকার বলেও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করবে উল্লেখপূর্বক গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি প্রদান করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।
এই বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ.বি.এম. জাকির হোসেন বলেন, রাতে বাইরের লোকজন হলে আসে বলে বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট জানিয়েছেন। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো হলে প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।