স্পোর্টস ডেস্ক : গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় সংসদে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। এরপর থেকেই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোনের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার আপাত ইতি ঘটেছে সন্ধ্যায় ২৫ জন পূর্ণ ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীকে ফোন দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তাদের নামও ঘোষণা করেছেন। সেখানে উচ্চারিত হয়নি জাহিদ আহসান রাসেলের নাম। গেল পাঁচ বছর যিনি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে। গাজীপুর জেলা থেকে তিনজন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে তালিকায়। তা থেকে বোঝাই যাচ্ছে এবার রাসেলকে রাখা হয়নি বিবেচনায়। তাতে অতীতের ধারা মেনে ফের পরিবর্তন আসছে ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকের চেয়ারে। এই দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত কে পাবেন তা পরিষ্কার হবে তা আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোন পাওয়াদের শপথের মধ্য দিয়ে।
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আগের সবার চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় ছিলেন জাহিদ আহসান রাসেল। জনসম্পৃক্ততার দিক থেকে তিনি ছিলেন অনেকটা এগিয়ে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের হাতে গড়া বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের স্থবিরতা কাটিয়ে দিয়ে হাজারো সমস্যাগ্রস্ত ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠকদের অর্থ ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন। তরুণ সুবিধাবঞ্চিত ক্রীড়াবিদদের জন্য চালু করেছেন ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক ক্রীড়া সংশ্লিষ্টকে অর্থ, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
রাসেল ফোন না পেলেও পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত পাপনকে রাখা হয়েছে ২৫-সদস্যের পূর্ণ মন্ত্রীর তালিকায়। এই তালিকায় আছেন বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর নামও। আরও আছেন আবাহনী লিমিটেডের পরিচালক, আজ সন্ধ্যায় বিলুপ্ত হতে যাওয়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি শাহরিয়ার আলম, আবাহনীর আরেক পরিচালক ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে প্রথম দুজনের আছে গভীর যোগসূত্র। পরের দুজনও দীর্ঘদিন জড়িত। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর নামও। এদের কাউকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।
নিকট অতীতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর দেখা মেলেনি। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে মাত্র তিন মাসের জন্য পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন নিতাই রায় চৌধুরী। এরপর থেকে আটজন প্রতিমন্ত্রী, সাতজন উপদেষ্টা ও একজন উপমন্ত্রী এই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তবে কোনো ব্যক্তিই পরপর দুই মেয়াদে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন না।
গেল তিন দশকে এই মন্ত্রণালয়ে কোনো পূর্ণ মন্ত্রীর দেখা মেলেনি বলে এবার মিলবে না সেটাও বলা যাচ্ছে না। পাপন এবং সাবের হোসেন চৌধুরীর মধ্য থেকে যে কাউকে ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকের চেয়ারে দেখা গেলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। বিসিবির গেল তিন মেয়াদের সভাপতি পাপন ক্রিকেটের বাইরের খেলাগুলো এগিয়ে নিতে নিয়মিতই সহায়তা দিয়ে থাকেন। আর ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে সাবের হোসেন চৌধুরীর অবদান লেখা রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ প্রবেশ করেছিল টেস্ট ক্রিকেটের কুলীন সমাজে।
এদিকে বুধবার সারা দিন রাসেলের পাশাপাশি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নাম। তবে গতকাল তালিকায় রাখা হয়নি তাকে।
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন গেল পাঁচ বছরের মন্ত্রিপরিষদ ছিল ৪৪ সদস্যের। বুধবার ঘোষিত হয়েছে ৩৬ জনের নাম। পরিষদের দৈর্ঘ্য আজ শপথের আগে কিছুটা বাড়তে পারে। তাতে ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক কে হবেন, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।