সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : প্রেগনেন্সি জটিলতার বিষয়টি গোপন রেখে পেটে ব্যাথার কথা বলে সকাল আটটায় মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন এক তরুণী (১৭)। তার সাথে আসেন বাবা-মা। অবস্থা গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে বলেন এবং একাধিক টেস্ট করাতে বলেন।
সকাল সাড়ে নয়টায় গাইনি বিভাগের ৫০২ নাম্বার রুমে ভর্তি হন ওই তরুণী।
বিকেলে হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা টয়লেট পরিষ্কার করতে আসলে টয়লেটের পাইপে এক নবজাতকের দেহের অংশবিশেষ আটকে থাকতে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। মুহূর্তেই এ ঘটনায় হাসপাতালে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়ে যায়। ওয়ার্ডে থাকা ছয়টি বেডের রোগী এবং স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে সকালে ভর্তি হওয়া ১৭ বছর বয়সী সেই তরুণী নিজের পেটের বাচ্চা নিজ ইচ্ছায় নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে নবজাতককে টয়লেটে ফেলে দেয় বলে স্বীকার করেন। তবে পরিবারের সদস্যদের দাবি মেয়ের বাচ্চা হবার বিষয় তারা কিছুই জানতেন না।
পুলিশ কারণ জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর স্বজনেরা নবজাতকের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। এর ফলে ভুক্তভোগী তরুণীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি দায় স্বীকার করলেও কেন এমনটি করেছেন এ বিষয়ে কোন কিছুই বলছেন না পুলিশের কাছে। প্রেগনেন্সির বিষয়টি গোপন রাখার কারণও জানাতে অস্বীকার করেন ওই তরুণী ও তার পরিবার।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তরুণী অবিবাহিত। তিনি জেলার একটি কলেজে অধ্যায়নরত আছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় প্রেগনেন্সির বিষয়টি গোপন রাখে তারা। নবজাতকটি ডেলিভারির পর হাসপাতালের টয়লেটের ভেতরে ফেলে দিয়ে সেই নবজাতকের মরদেহ গুম করার চেষ্টা করা হয়। তবে নবজাতকটি কখন কিভাবে মারা গেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নবজাতকটির পিতৃপরিচয় নিয়েও মুখ খুলতে রাজি নয় ওই তরুণী ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবিএম তৌহিদুজ্জামান বলেন, আজ সকালে ভুক্তভোগী তরুণী তার স্বজনদের সাথে এসে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। তার এমন ঘটনায় আমরা বিচলিত। পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর শিবাস্তিন। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। নবজাতকটির সুরতহাল শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।