আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমাদের দেশে নানান ভূতুড়ে স্থান রয়েছে। এই স্থানগুলিতে কেউই যাওয়ার সাহস করে না। তবে শুধু ভারতই নয়, এমন কিছু ভূতুড়ে স্থান রয়েছে বিদেশেও। ইটালিতে এমন একটি দ্বীপের রয়েছে যেখানে রোগী ও চিকিৎসকদের অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায়। এই দ্বীপটিকে উন্নত করার চেষ্টা করা হলেও আজব কারণে সে সব চেষ্টাই স্থগিত হয়ে যায়। কী এই দ্বীপের কাহিনি, জেনে নেওয়া যাক।
সবে ভূত চতুর্দশী, হ্যালোউইনের হইহুল্লোড় কাটিয়ে উঠেছেন অনেকে। ভূত, প্রেত নিয়ে বিস্তর আলোচনা, আবার হ্যালোউইন পার্টিতে বিভিন্ন ধরনের তাজ্জব করে দেওয়ার মতো ভূত-প্রেতের সাজপোশাকে দেখা গিয়েছে অনেককে। তা হলে এখানে এবার এমন এক দ্বীপের কথা বলে রাখি যেখানে নাকি শুধুমাত্র ভূত-প্রেতের বাস। তবে এই ভূত-প্রেতেরা নাকি শুধুমাত্র রোগী ও চিকিৎসক। এমন একটি দ্বীপে নাকি প্লেগ মহামারীতে মৃত্যু হয়েছে এমন চিকিৎসক ও রোগীদের ভূত রয়েছে। কোথায় এই দ্বীপ, কী এই দ্বীপের কাহিনি জেনে নেওয়া যাক।
উত্তর ইতালির ভেনিস ও লিডোর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত পোবোগ্লিয়া দ্বীপ। এই দ্বীপের ইতিহাস ৪২১ খ্রীষ্টাব্দের চেয়েও আগেকার। পোবোগ্লিয়া দ্বীপে কেউ বাস করে না। এই স্থানে পর্যটনও নিষিদ্ধ। পৃথিবীর সমস্ত ভূতুড়ে দ্বীপের মধ্যে অন্যতম হল এই দ্বীপ।
৪২১ খ্রীষ্টাব্দে এখন কিছু বর্বর আক্রমণকারী বসবাস করতে শুরু করেন। চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত এই দ্বীপ জনবহুল ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সকলে এই দ্বীপ ছেড়ে যেতে শুরু করে। ১৩০০-র কাছাকাছি সময়ে ব্ল্যাক ডেথ ও ব্যুবোনিক প্লেগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে এই রোগের সংক্রমিতদের এই দ্বীপে নির্বাসিত করা হতে থাকে। এঁদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন মৃত বা মৃতপ্রায় ব্যক্তি।
এখানেই শেষ নয় দ্বীপে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা যে সমস্ত রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রায় ছিল না, তাঁদের জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া হত। আরও আছে, ১৮০০ থেকে ১৯০০-র মাঝামাঝি সময়ে এই দ্বীপকে মনোরোগীদের হাসপাতালে পরিণত করা হয়। এখানে চিকিৎসকরা রোগীদের ওপর আজব ও বীভৎস পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালাতেন। এর ফলে অনেকের শরীর-স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকের আবার মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল।
স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে জানা যায় যে ১৯৩০-এর দশকে এখানে উপস্থিত কিছু চিকিৎসক নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং আত্মহত্য়া করেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই দ্বীপে ব্যুবোনিক প্লেগের সময়ে মৃত্যু হওয়া রোগী, হাসপাতালে মৃত মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী ও চিকিৎসকদের আত্মা ঘুরে বেড়ায়। কয়েক বছর আগে সরকার এই দ্বীপকে বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছু রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সরকারের প্রচেষ্টা বিফল হয়ে যায়। ফলে এই দ্বীপ এখনও নির্জন পড়ে রয়েছে।
এই দ্বীপে কোনও সংগঠন দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে না। কোনও কাজই এখানে পুরো করা যায় না। বিভিন্ন ভূতুড়ে কার্যকলাপে ভয় পেয়ে সকলেই এই দ্বীপ থেকে পালিয়ে যান। এমনকি মৎস্যজীবীরাও এই দ্বীপের ধারেকাছের জলাভূমিতে আসেন না। অবশেষে এই দ্বীপকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।