জুমবাংলা ডেস্ক : ৮৮ বছর বয়সী হালিমা খাতুন। বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন তিনি। থাকছেন ছেলেদের সংসারে। তবে জীবিত থাকলেও নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্রে তাকে দেখানো হয়েছে একজন মৃত ব্যক্তি হিসেবে। সম্প্রতি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে গেলে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয় তার পরিবারের লোকেরা। আর এ কারণেই বয়স্ক ভাতার কার্ড পাচ্ছেন না হালিমা খাতুন। বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সব ধরনের সাহায্য থেকেও। তাই সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বয়স্ক ভাতাসহ যাবতীয় সুবিধা পেতে হলে প্রমাণ করতে হবে হালিমা জীবিত আছেন।
দেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল সময় সংবাদের সাংবাদিক বি এম ইশ্রাফিলের এক প্রতিবেদনে এমনি তথ্য উঠে এসেছে।
হালিমা খাতুনের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নে। স্বামী মৃত কাইয়ুম শিকদার। হালিমা খাতুনের জন্ম ১৯৩৫ সালে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ভোট দিতে গিয়েছিলেন হালিমা খাতুন। আঙুলের ছাপ না মেলায় সেদিন ভোট দিতে পারেননি তিনি। তখন অবশ্য বিষয়টি আমলে নেয়নি পরিবারের সদস্যরা। তবে সম্প্রতি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে আবেদন করা হলে সেখান থেকে জানানো হয় তিনি ‘মৃত’। ৬ বছর আগেই মারা গিয়েছেন হালিমা খাতুন। আর জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারলে বয়স্ক ভাতা মিলবে জানিয়ে দিল সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে।
হালিমা খাতুনের বড় ছেলে মোস্তফা শিকদার বলেন, ‘মায়ের জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের আবেদন করতে গেলে তারা জানায় আইডি কার্ডে মাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তিনি নাকি ৬ বছর আগেই মারা গেছেন। আমরা বিষয়টি জানতামই না। কিন্তু আমার মা এখনো জীবিত। যারা জাতীয় পরিচয়পত্র হালনাগাদ করেছে, তারাই এই ভুল করেছে। এই ভুলের জন্য আমার মা বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না।’
হালিমা খাতুনের ছেলের বউ ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার শাশুড়ি এখনো জীবিত আছেন। বয়স্ক ভাতার কার্ড করাতে গেলে ওনারা জানায় আমার শাশুড়ি নাকি মৃত। এ কারণে আমার শাশুড়িকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয়া হয়নি।’
বড়গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কাইয়ুম শিকদারের স্ত্রী হালিমা খাতুন এখনো জীবিত আছেন। যারা জাতীয় পরিচয়পত্র হালনাগাদ করেছেন তারা ভুলে হালিমা খাতুনকে মৃত বানিয়ে রেখেছেন। এরকম অনেক মানুষের আইডি কার্ড ভুলে ভরা। এসব সংশোধন করতে মানুষের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এর একটা সমাধান হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কোনো উত্তর দেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ‘এটি আমাদেরই ভুল। বৃদ্ধা হালিমা খাতুনের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। বিষয়টি আমরা জানতাম না, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। হালিমা খাতুনের পরিবারের কেউ সমস্যার কথা লিখিতভাবে জানালে সমাধান করে তাকে বয়স্ক ভাতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
সূত্র ও ছবি : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।