ছবির এই শস্যের নাম ‘এগুসি’। এটি এক ধরনের তরমুজের বীজ, যা প্রোটিনের একটি প্রাথমিক উৎস। এই শস্যদানা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে খাওয়া হয়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপিত যানের মাধ্যমে আফ্রিকা মহাদেশের ঐতিহ্যের এই দূতটিকে পাঠানো হয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজেরিয়ার গবেষক টেমিডায়ো ওনিওসুন মহাকাশ অভিযানে পাঠানোর জন্য এগুসি নামের তরমুজের বীজ জাতীয় এই দানাদার শস্য বেছে নিয়েছিলেন, তখন এটি কেবল বিজ্ঞানের বিষয় ছিল না- এটি ছিল প্রতীকবাদের বিষয়। কেননা, পশ্চিম আফ্রিকার অনেক রান্নাঘরের একটি প্রধান উপাদান হচ্ছে এই এগুসি।
ওনিওসুন বলেন, “নাইজেরিয়ার সবাই এগুসি খায়, এমনকি কিছু পশ্চিম আফ্রিকার দেশের অন্যান্য মানুষ এবং প্রবাসী আফ্রিকানরাও। এগুসি হল সেই বীজ যা আমাদের গল্প বলে।”
গত ১ আগস্ট উৎক্ষেপণ করা ক্রিউ-১১ মহাকাশ ক্যাপসুলে কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা, আর্মেনিয়া এবং পাকিস্তান থেকে আসা ঐতিহ্যবাহী বীজগুলোর সঙ্গে এগুসিও ছিল।
নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওয়ো রাজ্যের স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা নাইজেরিয়ান তরমুজের বীজ, ৯ আগস্ট পূর্ববর্তী মহাকাশ ক্যাপসুলের ক্রুদের সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরে আসার আগে কক্ষপথে সাত দিন কাটিয়েছিল।
নাইজেরিয়ার মহাকাশ সংস্থা এনএএসআরডিএ রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে কৃষি গবেষণার উদ্দেশ্যে নাসা মিশনে এগুসি এবং আরও পাঁচটি ফসলের বীজ পাঠিয়েছিল। ওনিওসানের এগুসি স্পেস ইন আফ্রিকার মাধ্যমে একটি সাংস্কৃতিক উদ্যোগ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছিল। কক্ষপথে থাকা বীজগুলো এখন গবেষকদের কাছে বিতরণ করা হচ্ছে, যাতে তারা তাদের পুষ্টিগুণের উপর মহাকাশে অবস্থানের প্রভাব অধ্যয়ন করতে পারেন।
গবেষক দলের সদস্য ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ওয়াগনার ভেন্ড্রাম জানান, বীজগুলো ইন ভিট্রোতে বিতরণ করা হবে এবং মহাকাশের মাইক্রোগ্রাভিটি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে সৃষ্ট জিনগত পরিবর্তনগুলোর জন্য এগুলো অধ্যয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, “উদ্ভিদ এবং বীজের পরিবর্তনগুলো দেখে আমরা বলতে পারি- সেই গাছগুলো কি এখনো একই রকম? তারা কি এখনও মহাকাশচারীদের জন্য একই স্তরের পুষ্টি সরবরাহ করবে?”
ওনিওসান জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য হল আগামী দশকগুলোতে মহাকাশে বাসস্থান সম্প্রসারিত হলে আফ্রিকার স্থানীয় ফসলগুলো চাঁদ এবং মঙ্গল গ্রহে ভবিষ্যতের খাদ্য ব্যবস্থার অংশ হয়ে উঠুক। সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।