আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর অপারেশন কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। অথচ ইব্রাহিম আকিলকে ধরতে ৭০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৮৩ সালে বৈরুতে দুটি ট্রাক বোমা হামলায় মার্কিন দূতাবাস এবং মেরিন ব্যারাকের ৩০০ মানুষ নিহত হয়। যে ঘটনায় জড়িত ছিল হিজবুল্লাহর এই শীর্ষ কমান্ডার। খবর রয়টার্স
লেবাননের দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ইরান সমর্থিত এই সামরিক বাহনীর অভিজ্ঞ কমান্ডার বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের উপশহরে হিজবুল্লাহর এলিট বাহিনী রাদওয়ানের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন।
আকিল ছদ্ম নাম হিসেবে তাহসিন এবং আব্দেলকাদেরও ব্যবহার করতেন। তিনি হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক শাখা জিহাদ কাউন্সিলে দ্বিতীয় নেতা ছিলেন। গত জুলাইতে হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ নেতা ফুয়াদ শুকুরকে লক্ষ্য করে ওই স্থানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শুক্রবার আবারও একই স্থানে ইসরায়েল বিমান হামলা চালালে নিহত হয় আকিল।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল হামলা শুরু করলে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েল সীমান্তে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ। যা গত কয়েক সপ্তাহে ভয়াবহ আকার ধারণা করেছে।
ফুয়াদ শুকুরের মতো আকিলও একজন সাহসী ও অভিজ্ঞ নেতা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ইরানি রেভুলেশনারি গার্ডের মাধ্যমে ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। পরবর্তীতে সংগঠনটি লেবাননে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে।
একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ইব্রাহিম আকিল ১৯৬০ সালে লেবাননের বেকা উপত্যকায় জন্মগ্রহণ করেন। হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার আগে আকিল লেবাননের বড় শিয়া রাজনৈতিক দল আমালে যোগদান করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহ’র এই শীর্ষ নেতাকে ১৯৮৩ সালে বৈরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে ট্রাক বোমা হামলার জন্য দায়ী করা হয়। ওই ঘটনায় ৬৩ জন নিহত হয়। এছাড়া দূতাবাসে হামলার ঘটনার ৬ মাস পর একটি মার্কিন মেরিন ব্যারাকেও হামলার ঘটনা ঘটে। যাতে ২৪১ জন নিহত হয়। এ ঘটনার জন্যও তাকে দায়ী করা হয়।
এ ঘটনায় তাকে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং তার মাথার মূল্য ৭০ লাখ ডলার ঘোষণা করা হয়।
এদিকে মার্কিন মেরিন ব্যারাকে বোমা হামলা এবং লেবাননে পশ্চিমা স্থাপনায় হামলার ঘটনায় হিজবুল্লাহ জড়িত নয় বলে ২০২২ সালে এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
আকিলের দুরদর্শী নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ একটি ছায়া সংগঠন থেকে লেবাননে অধিক শক্তিশালী একটি সামরিক সংগঠন এবং রাজনেতিক দলে পরিণত হয়েছে। এছাড়া ২০০০ সালে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েল বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে এ অঞ্চলে ইসরায়েলের সঙ্গে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।