জুমবাংলা ডেস্ক : নিলাম ডেকে তিন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রার নোট বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত রোববার অনুষ্ঠিত নিলামে অংশ নিয়ে চারটি ব্যাংক বিভিন্ন মূল্যমানের সৌদি রিয়াল কিনেছে। দুটি ব্যাংক কিনেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম ও ইউরো। সব মিলিয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় এসব নোটের মূল্যমান প্রায় ১৯ কোটি টাকা। এ ধরনের নিলাম হয় খুব কম। এর আগে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির জন্য সর্বশেষ কবে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা জানা যায়নি।
জানা গেছে, নিলামে বিক্রি করা তিন ধরনের মুদ্রার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে সৌদি রিয়াল। চারটি ব্যাংকের কাছে ৬২ লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি রিয়াল ২৪ টাকা হিসেবে যার মূল্যমান দাঁড়ায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এসব রিয়ালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী ব্যাংক কিনেছে প্রায় ৩৮ লাখ রিয়াল। প্রায় ১৯ লাখ রিয়াল কিনেছে অগ্রণী ব্যাংক। বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক প্রায় চার লাখ রিয়াল কিনেছে। আর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কিনেছে ২ লাখ ২০ হাজার রিয়াল। এসব রিয়ালে ১, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ ও ৫০০ মূল্যমানের নোট রয়েছে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, হজের আগে সৌদি রিয়ালের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। গত রোববার বাংলাদেশ থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরব গেছে। করোনার কারণে টানা দু’বছর বহির্বিশ্ব থেকে কেউ হজে যাওয়ার সুযোগ পাননি। এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ২০১৯ সালে অবশ্য বাংলাদেশ থেকে যান ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। করোনার কারণে এবার সারাবিশ্ব থেকে কম লোক হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সৌদি আরব যাওয়ার জন্য হজের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বাইরে এবার একজন ১ হাজার ২০০ ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে নিতে পারবেন। ২০১৯ সালে একজনকে ১ হাজার ডলার সঙ্গে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সাধারণভাবে ডলার কিংবা সৌদি রিয়াল সঙ্গে নিয়ে যান। বাড়তি চাহিদার কারণে এ সময়ে রিয়ালের নোটের দর বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রবিবার নিলামে বিভিন্ন মূল্যমানের ৬ লাখ ৩০ হাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি দিরহাম ২৪ টাকা ৫০ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্যমান দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ মূল্যমানের ২ লাখ ৭৪ হাজার দিরহাম কিনেছে সোনালী ব্যাংক। একই ধরনের মূল্যমানের ৩ লাখ ৫৬ হাজার দিরহাম কিনেছে অগ্রণী ব্যাংক। সৌদি রিয়াল ও দিরহামের পাশাপাশি ব্যাংক দুটি ইউরো কিনেছে।
জানা গেছে, নিলামে অংশ নিয়ে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক বিভিন্ন মূল্যমানের মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার ইউরো কিনেছে। প্রতি ইউরো ৯৮ টাকা হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্যমান দাঁড়ায় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক কিনেছে ১ লাখ ১৪ হাজার ইউরো। আর অগ্রণী ব্যাংক কিনেছে ১ লাখ ২০ হাজার। এ ক্ষেত্রে ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ ও ৫০০ ইউরোর নোট বিক্রি করা হয়।
সংশ্নিষ্টরা জানান, শুল্ক গোয়েন্দা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কোনো অবৈধ বৈদেশিক মুদ্রা বা স্বর্ণ ধরা পড়লে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা করা হয়। প্রথমে এসব মুদ্রা ভল্টের অস্থায়ী খাতে জমা থাকে। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে আদালতে শুনানি হয়। এরপর আদালতের রায়ের ভিত্তিতে যার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি ফেরত পাবেন কিনা, তা ঠিক হয়। তিনি ফেরত না পেলে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়। এ ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থায়ী খাতে জমা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক তা বিক্রি করে দেয়। নিলামে ব্যাংক ও বিভিন্ন মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।