জুমবাংলা ডেস্ক : সাধারণত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা দলবদ্ধভাবে বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়ান। বিভিন্ন মার্কেট ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আসিফ ওরফে আসিফ হিজড়া নামের ২২ বছর বসয়ী এক তরুণ তৃতীয় লিঙ্গের অন্যদের মতো দলবদ্ধভাবে নয়, বরং তিনি একাই ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন স্থানে। বিভিন্ন মার্কেট ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গে পরিচিত হতেন এবং সখ্যতা গড়ে তুলতেন। এর মাধ্যমে কৌশলে জেনে নিতেন নিরাপত্তার বিষয়ে। এসব জেনে নিয়ে রাতের আধাঁরে নিরাপত্তার ত্রুটি কাজে লাগিয়ে লুটে নিতেন টাকা পয়সাসহ মূল্যবান সব কিছু।
সম্প্রতি এই কায়দায় রাজধানীর নিউ মার্কেটের এলিফ্যান্ট রোডের একটি শাড়ী ও থ্রি-পিসের পাইকারী দোকানে গ্রিল কেটে ঢুকে নগদ ২৫ লাখ টাকা, মার্কিন ডলার ও ভারতীয় মুদ্রা নিয়ে যায় চোরেরা। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর করা মামলার তদন্তে নেমে দুর্ধর্ষ এই চোরের সন্ধান পায় নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। পরে গ্রেপ্তার করা হয় আসিফকে। সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তার মা, খালাসহ চারজনকেও। গ্রেপ্তার আসিফ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানা চর দক্ষিণবাড়ী এলাকার মো. আলমগীরের ছেলে।
পুলিশ বলছে, আসিফ হিজড়া দুর্ধর্ষ এক চোর। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের কোনো দলের সদস্য নন। একা একা ঘুরে চুরি করতেন। আর তার এই চুরির সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা জড়িত। তাদের সবার বিরুদ্ধে মাদক ও চুরিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
রবিবার নিউ মার্কেট থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় গত ২১ ডিসেম্বর রাত তিনটার দিকে রাংগুলি বিডি নামের শাড়ী ও থ্রি-পিস বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রিল কেটে ক্যাশ বক্স থেকে নগদ ২৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ২৭৩ ইউএস ডলার এবং ৮ হাজার ৪০টি ভারতীয় মুদ্রা চুরি করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে দেখা যায়, দোকানের গ্রিল কেটে এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে প্রবেশ করে দেশি-বিদেশি মুদ্রা চুরি করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চুরির সঙ্গে জড়িত আসিফ হিজড়াকে শনাক্ত করা হয়। এরপর রাজবাড়ীর চর দক্ষিণবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসিফ হিজড়া ও তার সহযোগী হিসেবে কাজ করা তার মা আনোয়ারা ওরফে আনুরী বেগম (৫০), খালা মোছা. হালিমা বেগম ওরফে ফালানী (৪৫) ও রাকিব উদ্দিন হৃদয়কে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া নগদ ২৫ লাখের মধ্যে ৯৪ হাজার টাকা ও মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় রুপি অক্ষত অবস্তায় উদ্ধার করা হয়।
ওসি আমিনুল আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, পারিবারিক এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে চুরি, মাদক কারবারসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসিফ গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে টার্গেট নির্ধারণ করেন। এরপর সুযোগ বুঝে চুরি করে আত্মগোপনে চলে যেতেন।
গ্রেপ্তার আসিফের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা, তার মায়ের বিরুদ্ধে ৪টি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। চুরি যাওয়া বাকি টাকা উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।