ধর্ম ডেস্ক : ইফতার পবিত্র রোজার অন্যতম অনুষঙ্গ। এর মাধ্যমে রোজা পূর্ণ হয়। ইফতার শুধু পেটের ক্ষুধা নিবারণ নয়, এটি একটি স্বতন্ত্র ইবাদতও। দয়াবান আল্লাহতায়ালা মুমিনের পুরস্কারের জন্য ইফতারের মুহূর্তটি নির্ধারণ করেছেন। এই সময়ের কোনো দোয়া সাধারণত বৃথা যায় না।
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, ইফতারের সময় কোনো দোয়া বাতিল করা হয় না। এ সময়ের দোয়া খুব তাড়াতাড়ি কবুল হয়। রোজাদারকে ইফতার করানোর মধ্যেও বিশেষ সওয়াব রয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যিনি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবেন, তা তার অপরাধ ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হবে। তিনি রোজাদারের সমান সওয়াব পাবেন।’
সহিহ্ বোখারি সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নেওয়া সুন্নত। অযথা ইফতারে দেরি করতে নেই। তবে সূর্যাস্তের বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। কেউ যদি সময় হয়ে গেছে মনে করে সময়ের আগেই খেয়ে ফেলে তার রোজা ভেঙে যাবে। তাকে এই রোজার কাজা করতে হবে। ইফতারের মুহূর্তে অযথা গল্প-গুজবে লিপ্ত না হওয়াই ভালো। এ সময় মনে মনে জিকির ও তওবা করা উচিত। অনেকে এক সঙ্গে ইফতার করলে সম্মিলিতভাবে দোয়াও করা যেতে পারে।
ইফতারকেন্দ্রিক অপচয় এখন আমাদের সমাজে মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপচয় কোনো ক্ষেত্রেই ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলামে অপচয়কারীকে ‘শয়তানের ভাই’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনেকে মনে করেন, রোজাদার যত খুশি খেতে পারবেন, এর কোনো জবাবদিহি নেই। এটি মূলত ঠিক নয়। অতিরিক্ত খাবারকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। এর কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে বিঘ্ন ঘটে। সংযমের জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতেই সিয়াম সাধনা। সারা দিন রোজায় সংযম অবলম্বন করার পর ইফতারের মুহূর্তে অসংযমী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইফতার যতটুকু প্রয়োজন এতটুকুই করতে হবে। প্রয়োজনের বেশি করলে তা অপচয় হবেই।
বিভিন্ন ইফতার আয়োজনে অপচয়টি বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়। অথচ আমাদের দেশে অসংখ্য মানুষ ইফতারের জন্য তেমন কিছুই পায় না। সামান্য খেয়ে বা না খেয়ে রোজা রাখে এমন মানুষের সংখ্যা প্রচুর। রমজানে অসহায়-দুস্থ মানুষগুলোর দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো সবার ইমানি দায়িত্ব। আপনি পর্যাপ্ত খেলেন কিন্তু ‘আপনার প্রতিবেশী একজন না খেয়ে বা সামান্য খেয়ে রোজা রাখছে তার প্রতি খেয়াল রাখা আপনার সামাজিক দায়িত্বও বটে। পবিত্র রমজানে ইমানি ও সামাজিক এই দায়িত্ববোধ আরও বেশি করে জাগ্রত করা জরুরি। কোনো কারণে ইফতার অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা নষ্ট না করে গরিব-দুস্থদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়াই উত্তম।
লেখক : আলেম ও ধর্মীয় নিবন্ধকার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।