জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলা নববর্ষের (পহেলা বৈশাখ) দিনে ঠাকুরগাঁওয়ের ধর্মগড় সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের বহু প্রতীক্ষিত মিলনমেলা এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে বন্ধ হয়ে গেল দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন।
প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় এবং ভারতের কিষানগঞ্জ জেলার সীমান্তে এ মিলনমেলার আয়োজন হতো। কাঁটাতারের দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাসি-কান্না আর আলিঙ্গনে মেতে উঠতেন দুই দেশের মানুষ।
স্বজনরা একেঅপরকে দিতেন খাবার ও উপহার। একদিনের জন্য হলেও ভেসে উঠত মিলনের আবেগঘন দৃশ্য। কিন্তু এবারও সেই দৃশ্য দেখা যাবে না।
স্থানীয়রা বলছেন, দেশভাগের পর যারা দুই দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন, তাঁদের জন্য এই মিলনমেলাই ছিল দেখা-সাক্ষাতের একমাত্র সুযোগ।
সীমান্ত খুলে দেওয়া হতো একদিনের জন্য। এবার সেই সুযোগও হারালেন তারা।
ধর্মগড় এলাকার বাসিন্দা হরিদাস বলেন, ‘নববর্ষ এলেই সীমান্তে একদিনের জন্য মেলা বসে। ওপার বাংলায় আমার আত্মীয়রা থাকেন। সীমান্তের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা হয়। খাবার দিই, কথাবার্তা বলি। এবার তা হচ্ছে না, খুব কষ্ট লাগছে।’
আর্নিকা রায় জানান, ‘আমার বোন আর বোনজামাই ভারতে থাকেন। প্রতিবছর এই মেলায় তাদের সঙ্গে দেখা হয়। এবার সেটাও হলো না।’
কামাল উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার ছোট ভাই আর মামারা ভারতে থাকেন। আমি ওদের দেখতে পারি না, শুধু নববর্ষের দিনেই কাঁটাতারের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা হতো। এবার সেই সুযোগও নেই।’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও কূটনৈতিক জটিলতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কবে আবার সেই মিলনমেলা ফিরবে, সে প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সীমান্তবাসীর মনে।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান জানান, ‘সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এ বছর মিলনমেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।