জুমবাংলা ডেস্ক : পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে প্রচলিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর নতুন নাম করা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এই নামে এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছে আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ জানান, এবার ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের কাছে এবার নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতির শুরু থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের কথা জানিয়েছিল। এ বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছিলেন নাম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অবশেষে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শোভাযাত্রার নাম নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হলো।
এবারের শোভাযাত্রার স্লোগান হবে—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এ প্রতিপাদ্যের আলোকে শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হবে বাংলার চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতির রূপ। পাশাপাশি আয়োজকরা জানিয়েছেন, গত বছরের জুলাই-অগাস্টে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে যে ‘ফ্যাসিবাদ’ বিদায় নিয়েছে, তা যেন আর কখনো ফিরে না আসে—এ বার্তাও ছড়িয়ে দেওয়া হবে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য-সচিব ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ, শোভাযাত্রার উপ-কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও উপ-কমিটিগুলো সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। শুরুতে শোভাযাত্রার নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। তবে নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অমঙ্গল দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নাম দেওয়া হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। এরপর থেকে গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এ নামেই শোভাযাত্রা করে আসছিল চারুকলা।
গত ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় জানানো হয়েছিল, এবারের পহেলা বৈশাখে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও গারোসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে অন্তর্ভুক্তিমূলক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
সবশেষ গত বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এবারের বাংলা নববর্ষে চারুকলার শোভাযাত্রায় বাঙালি ছাড়াও ২৭টি জাতিগোষ্ঠী অংশ নেবে বলে জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি জানান, চৈত্র সংক্রান্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্ট এবং নববর্ষের দিন ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবরে সুরের ধারার অনুষ্ঠান হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।