বিনোদন ডেস্ক : এটাই সেই বৈশাখ, সারাটা বছর আমি যার প্রতীক্ষায় কাতর হয়ে থাকি। কোনো ঋতু আমার প্রিয়, কারণ প্রকৃতি তখন রাজকুমারীর মতো তার রূপের পসরা নিয়ে হাজির হয়। কোনো ঋতুতে রংবেরঙের নতুন সবজিতে রঙিন হয়ে ওঠে বাজার। কিন্তু বৈশাখের দাবি সবার চেয়ে আলাদা।
যা কিছু পুরনো, ব্যর্থতা আর হতাশার, সে সব পেছনে ফেলে বৈশাখ নিয়ে আসে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। তবু তার জন্যই সেটি আলাদা নয়। বৈশাখের আরও বড় আহ্বান মিলন উৎসবের, মানুষে মানুষে যোগের। এই মিলনের ডাক যে কী অকৃত্রিম আর কী সপ্রাণ, যারা নববর্ষ দিবসের বাংলাদেশ দেখেননি, তাদের পক্ষে কল্পনা করাও কঠিন।
আমি সব সময় বলি, বাংলাদেশের প্রাণস্পন্দন যদি অনুভব করতে চাও, এসো পয়লা বৈশাখে ঢাকায়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনার বটমূলে গানে গানে নববর্ষবরণ। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্তের গানে ভরে ওঠে চারপাশ।
ভোর দিনের দিকে গড়ায়, আর পথ হতে থাকে লোকারণ্য। আক্ষরিক অর্থেই লোকের অরণ্য। জনস্রোতে একের পর এক রাজপথ হয়ে ওঠে মিলনক্ষেত্র। গাড়ি আটকে যায়। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা কারুশিল্পীদের হাটও ততক্ষণে বসে গেছে পথে পথে।
নববর্ষের এই মিলন কোনো সীমারেখা মানে না। উবে যায় পার্থক্য- ধর্মের, বিত্তের, জাতির। লাল–সাদা পোশাকে ঢাকার তখন একাকার রূপ। বাংলাদেশের বৃহত্তম, সর্বজনীন আর অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাংলা নববর্ষ। এদিন যেন বাংলাদেশের অন্তরের দীপ্তি ঠিকরে বেরোয়।
আমার কাছে বাংলাদেশ আর বৈশাখে ভেদ নেই। পৃথিবীর যে কোণে, যত ব্যস্ততার মধ্যেই আমি ডুবে থাকি না কেন, পহেলা বৈশাখে সে কারণে ঢাকায় আমাকে থাকতেই হবে। সারা বছরের তুচ্ছ মলিনতা ধুয়েমুছে এই দিনটিতে যে স্নান হয়ে যায় আমার মনের!
লেখক : জয়া আহসান, অভিনেত্রী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।