স্বনামধন্য পিসি গেমিং জায়ান্ট ভালভ উন্মোচন করেছে নতুন তিন গেমিং ডিভাইস। এর মধ্যে আছে হোম কনসোল স্টিম মেশিন, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেট স্টিম ফ্রেম এবং স্টিম কন্ট্রোলার। প্রতিটি ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়েছে লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম ‘স্টিম ওএস’। ভালভের বর্তমান কনসোল স্টিম ডেক-এর অপারেটিং সিস্টেমও এটি।

নতুন কনসোল ঘোষণার সংবাদে গেমাররা মন্তব্য করেছে, ‘যাক উইন্ডোজ ১১ মনোপলি ভাঙতে যাচ্ছে।’ স্টিম মেশিন নিয়ে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে ভালভ। এটি ২০১৪ সালে প্রথম বাজারে এসেছিল, যদিও তখন একেবারেই জনপ্রিয়তা পায়নি। এরপর প্রায় আট বছর কোনো কনসোল বাজারে আনেনি তারা, কন্ট্রোলার এবং অপারেটিং সিস্টেম তৈরিতে কাজ করে গেছে।
একবারে আট বছর পর ২০২২ সালে হাতে বহনযোগ্য কনসোল স্টিম ডেক উন্মোচন করে ভালভ। দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেটি, পাশাপাশি স্টিম ডেকের জন্য তৈরি স্টিম ওএস হয়ে ওঠে জনপ্রিয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে গেমাররা আশায় ছিল, আবারও স্টিম মেশিন বাজারে আনবে ভালভ, এবার আর ফ্লপ হবে না।
নতুন স্টিম মেশিনের হার্ডওয়্যার এএমডি এবং ভালভের যৌথ ডিজাইনে তৈরি।
এতে থাকছে এএমডির ‘জেন ৪’ আর্কিটেকচারের ছয়টি সিপিইউ কোরের প্রসেসর, যার প্রসেসিং থ্রেড ১২টি। সিপিইউর সঙ্গে মিলিতভাবে থাকছে এএমডি আরডিএনএ৩ আর্কিটেকচারের ২৮টি জিপিইউ কোর। পুরো সিপিইউ-জিপিইউ প্যাকেজের টিডিপি থাকছে মাত্র ৩০ ওয়াট।
ভালভের দাবি, স্টিম মেশিনের গেমিং পারফরম্যান্স স্টিম ডেকের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি, সহজেই ফোরকে রেজল্যুশনে গেম চালাতে সক্ষম। র্যাম থাকছে ১৬ জিবি ডিডিআর৫, স্টোরেজ থাকছে চিরচেনা এম.২ প্রযুক্তির।
তাই গেমার নিজেই সেটি আপগ্রেড করতে পারবে। কনসোলটি আকৃতিতে ম্যাক মিনির কাছাকাছি, দেখতে চারকোনা কালো বক্সের মতো। সামনে ও পেছনে থাকছে ইউএসবি পোর্ট, ইথারনেট এবং এইচডিএমআই জ্যাক। স্টিম মেশিনের সামনের প্যানেল বদলে নিজের ইচ্ছামতো কাস্টমাইজ করা যাবে। মজার বিষয়, স্টিম মেশিনের সামনে থাকছে একটি এলইডি প্রগ্রেস বার লাইট। গেম ডাউনলোড বা কনসোল আপডেট কত দূর এগোল, দেখার জন্য টিভি অন করার দরকার নেই, লাইট বার থেকেই বোঝা যাবে।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেট নিয়ে বহু বছর ধরেই ভালভ কাজ করছে। এইচটিসির সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি ভিআর হেডসেট ভালভ ইনডেক্স প্রথম ২০১৯ সালে বাজারে এসেছে। তবে এবারের হেডসেটের সঙ্গে ইনডেক্সের মিল সামান্যই। স্টিম ফ্রেম হেডসেটটি পিসির অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা যায়, আবার সেটি নিজেও গেম চালাতে সক্ষম।
স্টিম ফ্রেম হেডসেটের মধ্যে আছে ফোরকে ডিসপ্লে এবং আই ট্র্যাকিং ক্যামেরা। পিসির সঙ্গে তারহীন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে এটি, তারের ঝামেলা নেই। এর অপারেটিং সিস্টেমও স্টিম ওএস, তবে প্রসেসর কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ৩। মোবাইলের প্রসেসর ব্যবহৃত হলেও হেডসেটটি ভালভের সফটওয়্যারের মাধ্যমে পিসি গেম চালাতে সক্ষম।
স্টিম কন্ট্রোলারের লে-আউট অনেকটা স্টিম ডেকের মতো। অন্যান্য গেম কন্ট্রোলারের মতো বাটন ও জয়স্টিক আছে এতে, পাশাপাশি আছে দুটি টাচপ্যাড এবং জাইরোস্কোপ। পিসি গেম খেলার জন্য টাচপ্যাডগুলো চমৎকার কাজ করবে আশা করছে ভালভ। জয়স্টিকগুলো টিএমআর প্রযুক্তিতে তৈরি, তাই নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
নতুন তিনটি ডিভাইস আসবে ২০২৬ এর প্রথম প্রান্তিকে। মূল্য কত তা জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, স্টিম মেশিনের দাম হাজার ডলারের কাছাকাছি হতে পারে, কন্ট্রোলার হয়তো ১০০ থেকে ১৫০ ডলার এবং হেডসেটের মূল্য ৫০০ ডলারের কাছাকাছি। আগ্রহী ক্রেতারা আগেভাগেই বুকিং দেওয়ার জন্য প্রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



