বিনোদন ডেস্ক : ‘এখন ছবি শেয়ার করে কী হবে ভাই? যাদের ভিউ আছে, তাদের পেছনেই তো সবাই দৌড়ায়। কিন্তু যাদের একমাত্র আয়ের উৎস মিডিয়া, তাদের কথা কি কেউ ভাবেন?’— ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এসব কথা বলেন ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’খ্যাত অভিনেত্রী ফারিয়া শাহরিন।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মারা গেছেন অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। তার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। সে বিষয়টি উল্লেখ করে ফারিয়া শাহরিন বলেন, ‘হিমু আপুর একটা ভিডিও দেখলাম, যেখানে উনি লাইভে ডিগবাজি খাচ্ছেন। শুনলাম, ওই লাভ করলে নাকি পে করা হয়। কেন ভাই আপনারা কি পারেন না সব আর্টিস্টদের নিয়ে কাজ করতে? যাদের ভিউ আছে তাদের তো আছেই, পাশাপাশি যারা অভিনয়টা ভালোবাসেন তাকে ভালোবেসে অভিনয় যাদের জীবন তাদের সবাইকে কোনো না কোনো কাজ দিতে?’
তিনি আরও বলেন, কাল দেখলাম, আপুটার বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ ছিল না, উনি কার কাছে মনের কথা বলতেন? ওনার সংসার কীভাবে চলতো, কীভাবে একা একা উনি সংসারে সার্ভাইভ করেছেন, খেয়ে-পরে বেঁচে ছিলেন তা কি কেউ ভাবছেন? নিশ্চয়ই অভিনয় থেকে সে যা প্রত্যাশা করে পায়নি বলেই এসব লাইভ করতেন, নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন, আয় করতেন! এটা আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, তা আমি জানি না। কিন্তু একজন শিল্পী শুটিং নিয়ে থাকবেন এটাই তার কাজ, ওই কাজ যদি আপনারা নিয়মিত করতে না দেন দম আটকে আসার কথা, হতাশায় চলে যাওয়া খুব বেশি স্বাভাবিক। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কেউ ভাবি-ই না।’
ফারিয়া শাহরিনেরও মাঝে মাঝে হতাশ লাগে। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘যারা সবাই ছবি শেয়ার করতেছেন, এরকম আরো অনেক আর্টিস্ট আপনাদের সাথে কাজ করতেছে, একটা কাজের ডাক পেতে প্রতিদিন তারা অপেক্ষা করেন। কিন্তু আপনারা শুধু যাদের ভিউ আছে তাদের নিয়া দৌড়ান। কেন ভাই? ভালো পরিচালক হলে তো ভিউ আপনাদের নির্দেশনার জন্যই আসবে, আর্টিস্ট তো পরের কথা। আমারো মাঝে মাঝে হতাশ লাগে, মনে হয় কী করতেছি, যা করার যোগ্য তা তো করতেছি না, একটা গ্রুপই করে যাচ্ছে; তখন মনে হয়, আমারই ব্যর্থতা, আমিই কিছু পারি না। সুতরাং আমি আমার মতো থাকি। কিন্তু সবার জীবন তো আর এক না। এই দুনিয়াতে বেঁচে থাকাটা সবার কাছে এক না।’
সবার পাশে সবাইকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ফারিয়া শাহরিন বলেন, ‘দয়া করে আপনারা সবাই সব আর্টিস্টকে কাজে লাগান। কাল থেকে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। এরকম মৃত্যু দেখতে চাই না, প্লিজ সবাই সবার পাশে দাঁড়ান।’
ইতোমধ্যেই অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুকে লক্ষ্মীপুরে তার মা শামিম আরা চৌধুরীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টায় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী জামে মসজিদের সামনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মসজিদের কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
প্রসঙ্গত, হুমায়ারা হিমু ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্য দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন। এরপর টেলিভিশনে নিয়মিত নাটকে অভিনয় শুরু করেন।
২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে হুমায়রা হিমুর অভিষেক হয়। চলচ্চিত্রের গল্পটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয় সমালোচকদের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।