জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি ৫ আগস্ট বাথরুমে আত্মগোপনে ছিলেন এবং ছাত্রদের সহায়তায় প্রাণে বেঁচে যান। ইউটিউব চ্যানেল ‘নাগরিক টিভি’র এডিটর ইন চিফ নাজমুস সাকিবকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
Table of Contents
সাক্ষাৎকার চলাকালে কিছু প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। এর আগে তিনি ভারতীয় গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার পতনের পর এটিই ছিল তার প্রথম কোনো গণমাধ্যমে মন্তব্য।
নাজমুস সাকিব ভারতীয় সেই সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন, যেখানে বলা হয়েছে তিনি বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন এবং ছাত্রদের সহায়তায় বেঁচে যান। উত্তরে কাদের বলেন, “এছাড়া কি উপায় ছিল?” তিনি স্বীকার করেন, “হ্যাঁ এটাও তো ঠিক”, যে ছাত্ররাই তাকে রক্ষা করেছেন।
তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের সময় ছাত্ররা কেন তাকে রক্ষা করলো? এ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, “ওরা বলছিলো, আপনার প্রতি রাগ ছিল। কিন্তু আপনার সামনে এসে আমাদের রাগ পানি হয়ে গেছে।”
দেশত্যাগ, পালানোর কারণ এবং তিন মাস অবস্থান
তিন মাস দেশেই থাকার বিষয়টি স্বীকার করে কাদের বলেন, “তিন মাস পরে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি, অভিযান শুরু হয়। শরীরও ভালো ছিল না, অনেক ওষুধ খেতে হয়। গ্রেফতার হলে সমস্যা হতো। তাই চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেই, আর ওখানে থাকবো না।”
আওয়ামী লীগ ও জনগণের ক্ষোভ প্রসঙ্গে আত্মপলব্ধি
সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তার মধ্যে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ২০১৮ সালের রাতের ভোট ও ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কাদের বলেন, “এগুলো আলোচনার বিষয়, আমাদেরও দৃষ্টিকোণ আছে। আজকে পৃথিবীর সব দেশে গণতন্ত্র একরকম নয়।”
তিনি আরও বলেন, “অপিনিয়ন পোল নেন, বেশিরভাগ মানুষ শেখ হাসিনাকে আবার চাইছে।”
শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও বেগম জিয়ার সঙ্গে তুলনা
শেখ হাসিনার দেশত্যাগকে অনেকে লজ্জাজনক মনে করলেও কাদের বলেন, “না, বেঁচে থাকার প্রয়োজন ছিল। পরিকল্পনা ছিল তাকে হত্যা করা হবে।” বেগম খালেদা জিয়ার দেশ ত্যাগ না করার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কাদের জানান, শেখ হাসিনা আপস করে যাননি, বরং বাঁচার প্রয়োজনেই গিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়
সাক্ষাৎকারে নাজমুস সাকিবের প্রশ্নগুলোর অনেকটিকে শত্রুতামূলক মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “আপনি বায়াসড। আপনি পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিক। সাংবাদিকদের নিউট্রাল হওয়া উচিত। আপনি ইউনূসের লোকদের মতো কথা বলছেন।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও আত্মসমালোচনার ইঙ্গিত
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কাদের বলেন, “দি সান রাইজেস এ… বাট ডিনাই… বিফোর। এখন আমরা যে অবস্থায় আছি, উই ক্যান গেট আউট অব দ্য গ্যাটার।”
তবে অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো অনুশোচনা বা ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের আত্মোপলব্ধি, আত্ম-সমালোচনা থাকতে পারে। দেশে ফিরেই আমরা সেসব নিয়ে আলোচনা করবো।”
উদ্দাম রোমান্সের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন! একা দেখার মত সেরা ওয়েব সিরিজ
সাক্ষাৎকারের শেষ মুহূর্ত
শেষে নাজমুস সাকিব প্রশ্ন করেন, “আপনারা কি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবেন না?” কাদের বলেন, “আমি সে কথার জবাব দিয়েছি। আমরা দেশে গিয়ে যা করবো।” সাক্ষাৎকার শেষে উত্তেজনার মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।