আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বিমানটি কলকাতা বিমানবন্দরে নামে। উদ্দেশ্য, জ্বালানি সরবরাহ করা এবং বিমান কর্মীদের বিশ্রাম। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ তা তাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেয়।
লম্বায় ৫৬ মিটার, চওড়ায় ৪৫ মিটার— বিশাল বিমান এসে নামল কলকাতা বিমানবন্দরে। রবিবার যা দেখতে যাত্রীদের মাঝে কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আকার শুধু নয়, বিমানের আকৃতিও নজরকাড়া। যেন আস্ত তিমি! তিমির মুখের মতোই বিমানের সামনের দিক সরু হয়ে এসেছে। মাথা এবং পেট যথারীতি ফোলা। তিমির আদলেই তৈরি করা হয়েছে এই বিমান।
বিশালাকার এই বিমানের নাম বেলুগা। এটি মূলত দেশ-বিদেশে মালপত্র পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বেলুগা যখন আকাশে ওড়ে, দেখে মনে হয় উড়ছে আস্ত এক তিমি। শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ এই বিমানটি কলকাতা বিমানবন্দরে নামে। উদ্দেশ্য, জ্বালানি সরবরাহ করা এবং বিমান কর্মীদের বিশ্রাম।
রবিবার সারা দিন কলকাতা বিমানবন্দরে ছিল বেলুগা। যাত্রীরা সারা দিন অভিনব এই বিমান দেখার সুযোগ পান। পরে রাত ৯টা নাগাদ তাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেয় বেলুগা। কলকাতা বিমানবন্দরের তরফে টুইট করে বেলুগার কথা জানানো হয়। টুইটে লেখা হয়, ‘‘দেখুন কে এসেছে! পৃথিবীর বৃহত্তম বিমানগুলির মধ্যে অন্যতম বেলুগা কর্মীদের বিশ্রাম এবং জ্বালানি সরবরাহের জন্য কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেছে।’’
পেল্লায় এই বিমান দেখতে কলকাতা বিমানবন্দরে যাত্রীদের মধ্যে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল। এত বড় বিমান সচরাচর দেখা যায় না। তা ছাড়া বিশাল সামুদ্রিক প্রাণীর আদলে তৈরি বেলুগার রূপও নজর কেড়েছে যাত্রীদের।
বিমানটির ছবি তুলে অনেকে সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেছেন। অনেকে বেলুগার সঙ্গে তুলেছেন নিজস্বী। বেলুগার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরে দিনভর উৎসাহীদের ভিড় ছিল। ইউরোপীয় বিমান সংস্থা এয়ারবাস নির্মিত এই বিমানের আসল নাম এয়ারবাস এ৩০০-৬০০এসটি। বিমানটি যে তিমির আদলে তৈরি করা হয়েছে, তার নাম বেলুগা। তিমির নাম অনুসারে বিমানের নামও জনপ্রিয় হয়েছে।
এয়ারবাসের তরফে তিমির আদলে একাধিক বিমান তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম বার আকাশে উড়েছিল বেলুগা। তার পর থেকে প্রতি বছর একটি করে বিমান তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগোয় এয়ারবাস।
এক-একটি বেলুগা বিমান তৈরিতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে। ১৯৯২ সালে এই ধরনের বিমান তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে মালপত্র নিয়ে অন্তত ৬০ বার যাতায়াত করে বেলুগা।
মূলত, বড় আকারের মালপত্র পরিবহণের জন্য বেলুগা ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য মালবাহী বিমানের চেয়েও এই বিমান আকারে বড়। বিমানের নানা অংশও বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ করে থাকে বেলুগা। ইউরোপ এবং পশ্চিম দুনিয়ায় বেলুগার নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে।
ভারত তথা কলকাতার আকাশে বড় একটা আসে না এই বিমান। শনিবার বিশেষ কারণে আমদাবাদ থেকে কলকাতায় আসতে হয় সেটিকে। মধ্যরাতে কলকাতায় নামে ‘আকাশ-তিমি’। ৫৬.১৫ মিটার লম্বা, ৪৪.৮৪ মিটার চওড়া এই বিমানের ভারবহন ক্ষমতা ৪৭ হাজার কিলোগ্রাম। বিমানটি উচ্চতায় ১৭.২৪ মিটার। এই বিমানে মোট ২ জন বিমানকর্মী থাকেন।
২৩ হাজার ৮৬০ লিটার জ্বালানি প্রয়োজন হয় বেলুগার। এই বিমানের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৬৪ কিলোমিটার। সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ৮৮০ থেকে ৯২৬ কিলোমিটার।
আকার এবং আকৃতির জন্য আকাশপথ পরিবহণে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বেলুগা। অনেকে একে ‘সুপার ট্রান্সপোর্টার’ তকমাও দিয়েছেন। বেলুগার একটি উন্নত সংস্করণ ২০২০ সাল থেকে চালু রয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে বেলুগা-এক্সএল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।