জুমবাংলা ডেস্ক : আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তীকে নিয়ে তার এক বান্ধবীর ফেসবুক পোস্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। অবন্তীকে নিয়ে পোস্ট করা শিক্ষার্থীর নাম নসিন তাবাসসুম প্রাপ্তি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের চারুকলা ডিপার্টমেন্ট এর শিক্ষার্থী। তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
কোনো এক কারণে আমার ডিপার্টমেন্ট এ যাওয়া হচ্ছিলো না, সে সময়টাতে অবন্তিকা আমার সাথে কথা বেশ কমায় ফেলেছিল। এর মধ্যে অবন্তিকা আমাকে ফোনে বলে, প্রাপ্তি, সমস্যা হচ্ছে, আমি তোকে পরে বলবো। ফোনে বলা যাবে না। তো ডিপার্টমেন্ট এ এসে আমি অবন্তিকার সাথে দেখা করতে যাই, বিবিএ ফেকাল্টির সামনে ওকে দেখিও এবং বেশ উত্তেজিত অবস্থায় একজনের সাথে কথা বলতে দেখি। আমি অবন্তিকা কে জিজ্ঞেস করি, কি হয়েছে? এ কথা জিজ্ঞেস করার পর আমাকে বলে, সমস্যা হচ্ছে,আমি তোকে বাসায় গিয়ে বলবো।
এখান থেকেই ওর মুখ থেকে ঘটনা শোনা, যা কিছু তার মা আমাকে বলেছিল এবং কিছু অবন্তিকা। আমি এরপর ওর সাথে ঘনঘন মিট করা শুরু করি, কারণ ও ভারচুয়াল কিছুতেও বিশ্বাস করছিল না। তার ভাষ্যমতে যে ছেলে পেলে গুলো ওর পিছনে লেগেছে, তারা তার আইডি হ্যাক করার সম্ভাবনা বেশি।তারা কোনো হিন্টস পেলেই ওকে ফাসায় দিবে। সে এই রিস্ক নিতে চাচ্ছিলো না।
মূল ঘটনা:
লাকি নামের একটা মেয়ে ওর রুমমেট ছিল। (ওর সাথে যারা থাকতো, ওরাই ওর স্বভাব এনশিউর করে দিবেন) তো মেয়েটার একটা স্বভাব ছিল, একটা মানুষ এর কথা আরেকটা মানুষ এর কাছে বলা। তো মেসে মেয়েরা টের পেলে ওর সাথে দূরত্ব রাখা শুরু করে।
অবন্তিকা সাধারণত কাউকে সহজে জাজ করতে আসতো না, ওর কাছে গিয়েই মেয়েটা তখন বেশি মেলামেশা করতো, ফ্রেন্ড হতে চাইতো। লাকি বলা শুরু করলো,অবন্তিকা তার বেস্টির মতো। অবন্তিকা ও সরল মনে তাকে পজিটিভ লি নেয়ার চেষ্টা করে,বন্ধুত্ব করে।
ঘটনাক্রমে অবন্তিকা,আর অই মেয়ে টা হলে সীট পায়। সেখানে বিভিন্ন মেয়েদের কাছে অবন্তিকার বিষয় এ বিব্রতকর মন্তব্য+আরো কয়েকজনের নামে মন গড়া কথা ছড়ায়,কিছু এলিগেশন অবন্তিকার উপর ও পড়ে। এমন কি এই মেয়েটা ওর বাবা মায়ের নামে কটু কথা বিভিন্ন মানুষ কে শুনানো ছাড়েনি। যাদের নামে কথা রটানো হয়, অবন্তিকা টের পাচ্ছিলো,যাই বলবে সরাসরি, হীতেবিপরীত হতে পারে,আবার সে চাচ্ছিলো না,কেউ তাকে ভুল না বুঝুক,সেজন্য সে অন্য একটা ফেইক আইডি থেকে তাদের বিষয় টা কনসার্ন করার চেষ্টা করে। সেটা আম্মান ছেলেটার পোস্টের স্ক্রিন শট মনোযোগ দিয়ে পড়লেই বুঝতে পারবেন।এটাই তার জীবনে কাল হয়ে আসে।
পরবর্তীতে এই মেয়ের উপর যতগুলা এলিগেশন এসেছিল ওর বিভিন্ন সহপাঠী র বিরুদ্ধে কটু মন্তব্য করার জন্য, সব আরও অবন্তিকার দিকে ইজিলি চলে যায়। ওরা ধরেও বলে টেক্সট এর ধরন দেখে,এটা অবন্তিকার টেক্সট। এবং জিডি করে ICT এক্ট এ।
জ্বী,এত টুকু ই ওর দোষ ছিল, সেটা সে বুঝতে পারে,প্রক্টর অফিসে গেলে ওর মা সহ স্বীকারোক্তি দিয়ে আসে।কিন্তু এটা এই পর্যন্ত থাকে না। ওর ক্যারেক্টার থেকে শুরু করে আরও অনেক কিছুর এলিগেশন নিয়ে আসে,যেটার জন্য অবন্তিকা প্রস্তুত ছিল না এবং ও পুরো থতমত খেয়ে গেছিলো। ও কি কারণে এই ভুল করেছিল,সেটার জন্য কিছু সাক্ষী ও ছিল।কিন্তু ওকে অবাক করে দিয়ে ওর যারা সাক্ষী ছিল,তারা ওর বিরুদ্ধে ই কথা বলে। এটা ওর বুঝতে বাকি থাকে না,তাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়। আবার অনেকেই সরে আসে ফেসে যাওয়ার ভয়ে।
ওর পক্ষের যাদের কথার বলার কথা ছিল,তারা বললে হয়তো সেখানেই সমাঝোতা হয়ে যেতে পারতো। ও পুরো একা হয়ে যায়। ও এই শকেই আর কিচ্ছু বলতে পারেনা।ওরাও ওদের সুযোগ মতো যাচ্ছে তাই বলে যায় দূর্বলতার সুযোগ পেয়ে। আন্টি যথাসাধ্য চেষ্টা করেন ওর হয়ে কিছু বলতে। আরও একা হয়ে যায়, যখন দেখে, ওর বিষয় এ অলরেডি উল্টাপাল্টা কথা বলা সবাইকে শেষ। ও ওর ক্লাসে স্বভাবত ই কর্ণার হয়ে পড়ে এবং কিভাবে বুঝাবে সবাইকে,সেটা নিয়ে নিরুপায় হয়ে যায়। তার মধ্যে আম্মান/না হয় ওদের কেউ একজন, থ্রেট ও দিয়ে বসে,”কেউ ওর জন্য কিছু বলতে গেলে আগে আমাকে ফেইস করতে হবে” এরকম একটা কথা(মনে নেই)।ওর বন্ধু যারা ওর সাথে ছিল,তাদের কেও টিজ করতো “অবন্তিকার ফ্রেন্ড যাচ্ছে” এই বলে। অনেকে ওর সাথে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করলেও সবসময় বলতে আসতো না,এটা সে বুঝতে পারে।
ওর আইডি কন্সট্যান্ট মনিটোরিং এ ওরা রাখে সে নিয়ে ওর ডাউট ই থাকে না।বেশ কিছু হিন্টস পায়।শুধু তাই না,সে কোথায় যায়,কার সাথে কথা বলে সব তারা মনিটাইজ করা শুরু করে। দোষ লঘু দেখে তারা অবন্তিকার ক্যারেক্টার ইস্যু তুলে ধরে অফিশিয়াল দের কাছে বিভিন্ন রকম মাল মসলা দিয়ে, ওর স্টাডি ছয় মাসের জন্য সাসপেন্স ও করতে বলে।এমন কি বহিষ্কার ও চেয়ে বসে এদের মাঝে কেউ কেউ। স্বভাবত ই অফিশিয়াল ওদের প্রস্তাবে রাজি হয় না,যখন দেখছে,অবন্তিকার আব্বু আম্মু অফিশিয়াল দের কাছে ক্ষমা চেয়ে লিখিতনামা দিয়েছে, বার বার আসছেন,এবং অবন্তিকার ও স্বীকারোক্তি, এরকম কাজ আর করবে না।
এর মাঝে আম্মান ওর গায়ে হাত ও তুলতে এসেছিল।যেখানে মারতে গেছিলো,সে জায়গার চাক্ষুষ প্রমাণ রাখতে পারেনি দেখে এ বিষয় টা নিয়ে অফিশিয়াল পর্যন্ত জানায় নি। আমি এ সব শুনে ওকে বলি,ইভিডেন্স রাখতে।কারণ এই আটজন ছেলে মেয়ে গুলো সত্য মিথ্যা যাই বলুক,ওদের ইভিডেন্স এর বিরুদ্ধে বলতে গেলেও তার স্ট্রং ইভিডেন্স প্রয়োজন। তাছাড়া তাকে যেভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে,সেটার “bullying” পর্যায়ে চলে যাচ্ছিলো বাড়াবাড়ি ভাবে। এ সময় টাতে অবন্তিকাকে যাদের সাথে কথা বলতে দেখতো,তার কাছে গিয়েই এই ছেলে মেয়ে গুলো রিউমার ছড়ানো শুরু করতো এবং ব্রেইনওয়াশ করে তাদের কেও ওদের সাপোর্ট এ নিয়ে আসতো। থ্রেট ও দেয়,”কেউ এই মেয়ের জন্য কথা বলতে আসলে তারা আগে আমার সাথে কথা বলবি” এই টাইপ। নষ্টা মেয়ের তকমা যার কপালে রটে গেছে,তার কথা কে শুনবে?ওর শুভাকাঙ্ক্ষী যারা আছে,তাদের সাথেও সে কথা বলা কমায় দেয়।সে চাইতো না,তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে নিয়ে কোনো বিরুপ ধারণা পোষণ করুক।
সে ক্লাস শেষ করেই আমার ডিপার্টমেন্ট এ আসতো,সে বিশ্বাস করতো আমাকে কেউ ব্রেইনওয়াশ করতে পারবে না।আমার বিভাগ এর কয়েকজনকে +ফ্রেন্ড সার্কেল কে কিছু ঘটনা জানায় রাখি,যেন,ওকে আমাদের সাথে দেখলে যেন তাদের উল্টাপাল্টা বলে ব্রেইন ওয়াশ না করতে পারে। উল্লেখ্য এই পুরোটা সময় বলতে গেলে হয় আমার সাথে থাকতো,নতুবা কুমিল্লা যেত।হলে গেলে শুধু ঘুমানোর জন্য যেত। জ্বী,ওর এই অনুপস্থিতির সময় গুলো তে ওর বিষয় রিউমার একদম সাক্সেসফুলি ছড়াচ্ছিল এবং কুমিল্লা থেকে একদিন ও হলে উঠতে গিয়ে দেখে,তার হল রুমে লাকি নামের এই মেয়েটাই এবং সাথে আরেকজন।ও এটা দেখে খুব টেন্সড হয়ে যায়, আর ও টেন্সড হয়ে যায়, ওর রুমমেট দের হঠাৎ ওর প্রতি কোল্ড বিহেভিয়ার দেখে।
পরীক্ষার জন্য পরতে বসে দেখে,তার নতুন কেনা আইনের বই গুলো একটা ও নেই।তাদের সাথে মুখে মুখে কথা কাটাকাটি হলে ওর একদম ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন তোলে,ও বুঝে যায়,এই কথাগুলো তাদের কাছে এসেছে এমন কারো দ্বারা এসেছে যে কথাগুলো জানে ,যে কথাগুলো র কিছুই ওদের শেয়ার করে নি ওর রুমমেট দের কাছে।সেটা কেউ ই না,অই মেয়েটাই।ও ভয় পেয়ে যায় এবং ডিসাইড করে,হল ছেড়ে দিবে।
এর মাঝে ও হলের মেয়েরা ওর সাথে কিছু অপ্রীতিকর ব্যবহার করে,যেটা তে ও ভীষণ কষ্ট পায়। ওকে এক মাসের মতো সময় আমাদের মেসে রাখি।আমাদের মেসের মেয়েদের ও আমি গিয়ে গিয়ে বলি,ওর কথা, যেন ওরা ব্রেইনওয়াশড না হয়। এই এক মাস পরীক্ষার টাইম টাতে ও আমার সাথেই থাকে এবং বইখাতা আমার হেফাজতে রাখি। এর মাঝে মেয়েটা আমাকে বারবার বলতো,”প্রাপ্তি,আল্লাহ কি ওদের বিচার দিবে না?আমি কি দুনিয়াতে দেখে যেতে পারবো না?আমাকে এত কষ্ট রেখে ওরা এত আনন্দে থাকে কিভাবে?ওরা দিব্যি হাসছে,আর আমার ভেতর টা পুড়ে যাচ্ছে”…………
ওর কথার মাঝে আম্মান,লাকি, আর ওদের ফার্স্ট বেঞ্চার,এই মানুষগুলোর কথাই বেশি শুনতাম,ও বলতো,এরা এটার মাস্টার প্ল্যানার। প্রক্টোর স্যারের কথা বলতো,উনার ব্যবহার অবন্তিকার প্রতি, সেটার চাক্ষুষ প্রমাণ আন্টিই,আমার কিছু বলার নেই নেই এখানে। বলা হয়নি,এর মধ্যে এই আটজন ছেলেমেয়েরা অসংখ্যবার শিক্ষক দের রুমে আসা যাওয়া করতো,উনারা বারবার বলতেন,এই বিষয় গুলো নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করো।তাদের আসা যাওয়া দেখলে তো অবশ্য ই অবন্তিকার আম্মু আব্বুর ও সাক্ষাৎ করতে হবে,তাই ই হচ্ছিলো।আঙ্কেল এর শারীরিক অসুস্থতার জন্য মাঝেমধ্যে আসতে পারতেন না,আন্টি ই বেশির ভাগ সময় দৌড়াদৌড়ি করতেন এই অফিস থেকে অই অফিসে।
মেয়েটার দূর্বলতা ছিল,ও এই ভায়োলেন্ট ব্যবহার এর প্রতি এত টা পরিচিত ছিল না,ও বেশ ভয় পেত।সেজন্য আন্টি চেষ্টা করতেন ওকে সাপোর্ট দেয়ার।ও আরও দূর্বল হয়ে যায়, যখন দেখে ও,পুলিশ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হায়ার অথোরিটি(যার নামে এলিগেশন আসে),যে জায়গাগুলো তে ও পরামর্শ নিতে যাবে,সেখানে ছেলেটার কিছুটা আধিপত্য আছেই। নতুন মেসে যখন ও উঠতে নিবে,তখন আমার অনার্স এর শেষ সময়, আর এক মাস আছে।আমি আমার মেস ছেড়ে দিয়ে অবন্তিকার সাথে এই এক মাস ওর নতুন বাসায় উঠি। ও মানুষ জন এত ভয় পাওয়া শুরু করেছিল যে,নতুন বাসায় নতুন মেয়েদের সাথে কথা বলতেই ভয় পাচ্ছিলো।ওর মনে হতে থাকে,সবাই ওকে ধোঁকা দিবে।
আমি নতুন বাসার মেয়েদের ও প্রত্যেকটা মেয়ের কাছে গিয়ে গিয়ে ওর বিষয় এ কিছু শর্ট ব্রিফ দিয়ে যাই,যেন হলের মতো ঘটনা ফের না ঘটে। ওকে ঘন ঘন এই ছেলেপেলেরা ডাক ও দিতো,অবন্তিকা বলে দিত,যা হবে,চেয়ারম্যান স্যারের সামনে কথা হবে।এটা নতুন ট্র্যাপ ছাড়া কিছু ছিল ও না সত্যি বলতে। আমি ওর মানসিক অবস্থার উন্নতির জন্য আমার গ্রামের বাড়িতেও নিয়ে যাই এর মধ্যে।এর মাঝে আমি ওকে দুজন উকিল এর নাম্বার ও দেই। ও আমাকে বলে, ও এখন এসবে জড়ালে পড়াশোনায় পিছায় পড়বে,এটাই ওরা চাচ্ছে,তার উপর তার বাবা অসুস্থ,ওর আম্মু দৌড়াদৌড়ি করতেন হাসপাতালে। সব বিবেচনায় ওর ক্যারিয়ার গুছিয়ে ফাইট করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ও হয়। তার পর অবন্তিকার বাবা এর মাঝেই ইন্তেকাল করেন।
ওর বাবা মারা যাওয়ার পর এই আট জনের মাঝে একজন ওকে শুনায় শুনায় বলে,””এখন কারো আব্বু মারা গেছে দেখে যদি কেউ সুইসাইড করে, তাহলে কিন্তু আমরা দায়ী থাকবো না” এর মাঝে অবন্তিকার চুলে চুইংগাম ও লাগিয়ে দেয় তাদের কেউ একজন,যার কারণে ওর সামনের দিকের কিছু চুল কেটে ফেলে।সেটার ইভেডেন্স ও পায় না,কারণ অজান্তেই কাজ টা করা হয়।
অবন্তিকাকে যখন দেখছিলাম, ও চুপ হয়ে গেছে একদম,ওকে বলেছিলাম, তোর সাইড এর স্টোরি বলার অবশ্য ই রাইট আছে।যদিও তুই কিছু করলে ই ওরা তিল থেকে তাল বানায় দিচ্ছে,কিন্তু কিছু মানুষ এর অবশ্য ই জানা উচিৎ, স্পেশ্যালি যদি কেউ জানতে আসে।এটা শোনার পর সে একজন দুইজন করে বলা শুরু করে। তাকে বলতাম প্রতিবাদ করবি যদি অপ্রীতিকর কিছু ফেইস করিস।না করলে ওরা বারবার করবে। ও প্রতিবাদ টুকটাক করা শুরু করে, তাও খুব বেশিদিন হয় নি। পরবর্তীতে শুনি,মেয়েটার ব্যাচমেটরা মিলে সেই আটজনের বিরুদ্ধে নালিশ দিয়েছিল চেয়ারম্যান স্যারের কাছে।তারা তখন ও বিষয় এ রিউমার ছড়াতে এত টাই ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল,তাদের ব্যাচমেটরাই অতিষ্ঠ হয়ে নালিশ করতে যায়।
এরপর যতদূর জানি,বিভাগীয় শিক্ষক রা এ বিষয় এ সচেষ্ট হয়ে উঠেছিলেন এবং সবাই ই মোটামুটি ওকে co operate করছিল।
আমি এটা শুনে এত খুশি হয়েছিলাম,ভাবলাম,মেয়েটার শান্তি হয়েছে শেষ পর্যন্ত। তারপর সে বলছিল ভালো ই যাচ্ছিলো,সে পড়াশোনা মনোযোগ দিয়ে করছিল,কারণ ও পরিবারের হাল ধরতে চাচ্ছিলো,তার বাবাকে প্রাউড ফিল করাতে চাচ্ছিল।
ওর সাথে পরশুদিন ও আমি কথা বলেছি,এর মাঝে সত্যি বলতে কোনো অসুবিধার কথা জানায়নি।
এই সুইসাইডাল এটেম্পট এর নোট দেখে ই আমি বুঝে গিয়েছি,যা হয়েছে,ইতিমধ্যে কিছু হয়েছে। সে চাইলে আটজন সবার কথা টানতে পারতো,সে যাদের কাছ থেকে হেয় হয়েছে তাদের কথা ও টানতে পারতো।এমন কি যে মেয়েটার থেকে ঘটনার সুত্রপাত, সে তাকে ও সে টানে নি সুইসাইড নোট এ।এত কষ্ট মেয়েটা এত মানুষ এর কাছে পেয়েছে, তার আশেপাশের মানুষ জন কে জিজ্ঞেস করে অবাক হয়ে খেয়াল করে দেখবেন,মেয়েটা নিজ থেকে কাউকে কিচ্ছু জানায়নি,তাকে কোণঠাসা করে তার নামে রিউমার ছড়ায়ে তাকেই বলা হয়েছিল দিনের পর দিন,ও নাকি মানুষ কাছে কথা লাগায়। তাকে এমন কি এটাও বলা হয়েছে,”তুমি সুইসাইড করলে আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না”
তারা আইনের স্টুডেন্ট, ওকে ইন্ডিকেট করে কিছু আপত্তিকর কিছু লিখলে তা সাথে সাথে ডিলিট করে ফেলতো,সে ইভিডেন্স অবন্তিকার ফোন এবং তার মায়ের কাছেই কিছু আছে। একটা রিউমার,যেটা না প্রমাণ করলেই না,মেয়েটাকে বেশ্যা হিসেবে ও রিউমার ছড়ানো হয়েছিল এবং বলা হতো মেয়েটা গোল্ড ডিগার,ভাইদের কাছে গিয়ে লাগায়।শুধু তাই ই না,সে এটা টাকা পয়সার জন্য করে। এটার প্রমাণ আমি ই দিচ্ছি,ও এই পুরো টাইম টাতে আমার সাথে ই থাকতো বলা চলে,কুমিল্লায় যেত ঘনঘন(এটা যারা যেত কুমিল্লায় ওর সাথে, তারাই প্রমাণ দিবে)। ওর যে প্রাক্তন ছিল,সেটা ছেলেটা অবন্তিকার ফার্স্ট লাভ ছিল এবং খুব ই কমিটেড ছিল।সেটার প্রমাণ ওর প্রাক্তন ই দিবে,এর মাঝেও যে ফিজিক্যাল টাচ খুব একটা এলাউ করতো না। উল্লেখ্য, সে ফিজিক্যাল ইন্টেমেসি প্রচন্ড ভয় পেত।যেসব ভাইদের নিয়ে আপনারা assume করতেন,তাদের সাথে ইন্টেমেসি হওয়ার চান্স আছে,সাহস থাকলে তাদের মেনশন করুন।শিউর হয়ে নিন,আমিও শিউর হয়ে নেই।
ও এরকম যদি করে থাকে,তার নিশ্চয় ই অঢেল টাকাপয়সা থাকার কথা?কিন্তু আমি দেখেছি,মেয়েটা মার্কেট এ যেত,দেখে দাম জিজ্ঞেস করে রেখে দিতো। টাকা পয়সা ইনকামের জন্য মেয়েটা ডমিনোজ এ ও চাকরি করতো।তার পুরো ওয়াড্রব পুলিশ কে দিয়ে চেক করায় দেইখেন তো,কোনো খুব দামী কাপড়,গহনা পান কিনা?ওর কাপড় দেখে আপনারা হাসবেন,কারণ আমি দেখতাম, ও মাঝেমধ্যে যেদিন কেনাকাটা করতো শখ করে ও,সেগুলো ও একশো টাকা,৫০ টাকার মাল,তারপর সে বাসায় এসে চানাচুর মুড়ি খেতো, ভাত তরকারির বদলে। তার প্রত্যেকটা টাকা হিসাব করে দিতো আন্টি,কারণ আঙ্কেল এর পেছনে অনেক খরচ যাচ্ছিলো।উনি বহুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।(এটা ওর মেসমেট দের চেয়ে কে ভালো জানে?)আমরা ওকে এটা নিয়ে বকা দিতাম,কিন্তু মেয়েটা তাও এই পাগলামি গুলো মাঝেমধ্যে ই করতো।
আমার যতটুক মনে আছে,এটুক ই ছিল অবন্তিকার কথা। এরপর আরও ভালো বলতে পারবেন আন্টি,কারণ তিনি পুরো ঘটনাটাই চোখের সামনে witness করেছেন।উনার বলার মতো আরও অনেক কিছু থাকতে পারে।আমার কথাই শেষ কথা না।
আমি ওকে যতটুক সাপোর্ট করেছি,পুরোটাটা বিশ্বাস করে করেছি।ওকে যেভাবে মানসিক নির্যাতন এ দিনের পর দিন দেখেছি,আমার অবিশ্বাস করার উপায় ছিল না। আমি ও চাবো সুষ্ঠু তদন্ত হোক,মেয়েটা বিচার পাক।আপনারা অনেকেই স্পিক আউট করছেন,এটা আমার জন্য, ওর পরিবারের জন্য স্বস্তির।আপনাদের আরও অনেকের অনেক কিছু বলার অবশ্য ই আছে। কিন্তু মেয়েটার আত্নার শান্তির জন্য ও আমি চাবো,আপনারা সবাই সহযোগীতা করবেন যতটুক জানেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।