জুমবাংলা ডেস্ক : কুষ্টিয়ার পান্টি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রায় ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রেখে জোরপূর্বক অব্যাহতি পত্রে স্বাক্ষর করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিতও করা হয়।
জানা যায়, সোমবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে বারটার দিকে অত্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামানের নের্তৃত্বে দর্শন বিভাগের শিক্ষক আজিজুর রহমান ও প্রদর্শক মাজেদুর রহমানের সহযোগিতায় পান্টি ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের এনামুল হক এতেম মেম্বার, বাগবাড়িয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুস সামাদ, সহিদ, নগরকয়া গ্রামের ছিয়াই মোল্লা,মনিরুল ও গোবরা গ্রামের ওবাইদুলসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের ১০-১২ জন দলীয় কর্মীকে সাথে নিয়ে অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা প্রায় ঘন্টাব্যাপী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রেখে তার কাছ থেকে আগে থেকেই পান্টি কলেজের প্যাডে কম্পিউটার কম্পোজ করা অব্যাহতি পত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে নেন।
এ ঘটনায় কলেজ জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের ভয়ে সবাই নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। জোরপূর্বক স্বাক্ষরিত ওই আবেদন পত্রে লেখা রয়েছে ”বর্তমান শারীরিক অবস্থার কারণে আমার পক্ষে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্বপালন করা সম্ভব নয়।
বিধায় আমি স্বেচ্ছায় অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপক বাংলা কিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামানকে অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত পদে দায়িত্ব বুঝে দিলাম।” এই কলেজের বর্তমান সভাপতি মনিরুজ্জামানের মেয়াদ পূর্ণ না হলেও তারা এক প্রভাবশালী নেতাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার জন্য অধ্যক্ষকে চাপ সৃষ্টি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, আমরা প্রতিদিনের ন্যায় কলেজে এসে দাপ্তরিক কাজ করতে থাকি এর মধ্যে হঠাৎ বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জানের নের্তৃত্বে দুইজন শিক্ষকের সহযোগীতায় এলাকার ১০-১২ জন ক্যাডার সাথে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করেন ও একটি কলেজের প্যাডে কম্পিউটার কম্পোজ করা একটি আবেদন পত্রে স্বাক্ষর দিতে বলেন। এ সময় তিনি স্বাক্ষর করে দিতে রাজি না হলে তাকে লাঞ্চিত করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন অধ্যক্ষ হতে চাওয়া পদলোভী নামধারী শিক্ষক রোকনুজ্জামান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অত্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বর্তমান এমপি চাচ্ছেন না মোশারফ হোসেন আর অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করুক এবং বর্তমান কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান দায়িত্বে থাকুক।
এ কারণে আমরা মোশারফ হোসেনের নিকট থেকে আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করে নিয়েছি। এ সময় তর্কাতর্কি হলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনকে লাঞ্চিত করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায় করে নেওয়ার পর থেকে কলেজ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া ব্যক্তিরা রাজনৈতিক আর্শীবাদপুষ্ট ও প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পুলিশের কাছে জানাতেও ভয় পাচ্ছেন ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন।
দুর্গা ঠাকুর তৈরিতে পতিতালয়ের মৃত্তিকা লাগে কেন? জানলে চমকে যাবেন
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানিয়ে বলেন, ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।