বিনোদন ডেস্ক : বর্তমান বিশ্ব মেতে আছে কোরিয়ান বিনোদন অঙ্গনের মনোমুগ্ধকর জগতে। কোরিয়ান চলচ্চিত্র যেমন বিশ্বসেরার কাতারে এখন, তেমনি কে-পপ এবং কে-ড্রামাও বিশ্বব্যাপী দর্শকদের মুগ্ধ করে চলেছে। কারণ কোরিয়ান বিনোদনের প্রেম, আবেগ ও মানবিক দিকগুলো গল্পকে জীবন্ত করে তোলে। দিনকে দিন বিশ্বব্যাপী কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রির দর্শক বেড়েই চলেছে।
বিশ্বব্যাপী কোরিয়ান থ্রিলার ঘরানার সিনেমাগুলো বেশি জনপ্রিয়। তবে রোমান্টিক ঘরানার সিনেমাতেও কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রি অনবদ্য। আজকের এই প্রতিবেদন কোরিয়ান সেরা ৭টি রোমান্টিক চলচ্চিত্রকে নিয়ে। শুক্রবার ছুটির দিনে দেখে নিতে পারেন এগুলো।
মাই স্যাসি গার্ল : ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জুন জি-হিউন এবং চা তায়-হিউন অভিনীত ‘মাই স্যাসি গার্ল।’ এই সিনেমার জনপ্রিয়তা টাইটানিকের সঙ্গে তুলনা করার মাত্রায় চলে গিয়েছিল। সিনেমাটি একজন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের দৈনন্দিন রুটিন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করা এবং তাঁর মাকে উপেক্ষা করা ছিল যার প্রধান কাজ।
একদিন, পাতাল রেলে যাওয়ার সময় তিনি ঘটনাক্রমে নামহীন স্যাসি মেয়েকে (জুন) দেখেন। এরপর, তাদের আকর্ষণীয় টুইস্ট ও প্রেমের গল্প দর্শকদের বিনোদন দেয়।
জানা যায় যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ সপ্তাহে প্রায় ৪৮ লাখেরও বেশি টিকিট বিক্রি হয় এই সিনেমার। এটি ২০০১ সালের দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ উপার্জনকারী সিনেমা হয়ে ওঠে। এটি সর্বকালের সেরা কোরিয়ান রোমান্টিক সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি।
অলওয়েজ : ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সো জি-সাব এবং হান হিও-জু। এটি একটি রোমান্টিক চলচ্চিত্র। নায়কের অতীত এবং একজন সাধারণ মেয়ের গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে। দুজনে পুরো সিনেমা জুড়ে অনস্ক্রিনে একটি ঝলমলে মিষ্টি রসায়ন গড়ে তুলেছে। দুই তারকার অভিনয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এই মুভির প্লটকে করেছে আরও প্রাণময়।
দ্য হ্যান্ডমেইডেন : ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য হ্যান্ডমেইডেন’ আরো একটি দুর্দান্ত কোরিয়ান চলচ্চিত্র। কালজয়ী ফিল্ম ‘ওল্ডবয়’-এর পরিচালক পার্ক চেন উকের ‘দ্য হ্যান্ডমেইডেন’ আরেকটি মাস্টারপিস। থ্রিলার, আংশিক রোমান্স এবং জাপান-শাসিত কোরিয়ায় গল্প নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমাটি। এই চলচ্চিত্রটি দুই নারী, লেডি হিডেকো (কিম মিন-হি) এবং সুক-হি (কিম টে-রি) এর প্রেমের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে। পার্কের এই সিনেমাটিতে রয়েছে লালসা, রাগ, রোমান্স।
ইল মারে : ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইল মারে’ বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি, তবুও এটি কোরিয়ান রোম্যান্স সিনেপ্রেমীদের জন্য একটি মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র। ‘স্কুইড গেম’খ্যাত লি জুং-জে এবং ‘মাই স্যাসি গার্ল’ খ্যাত জুন জি-হিউন এই চলচ্চিত্রের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ইল মারে একটি দুঃখজনক রোমান্টিক চলচ্চিত্র। ফিল্মটি একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। ২০০৬ সালে এই সিনেমার রিমেক, ‘দ্য লেক হাউস’ নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সিনেমা মুক্তি পায়। সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন চমৎকার এই রোমান্টিক চলচ্চিত্রটি।
টিউন ইন ফর লাভ : ২০১৯ সালে ‘টিউন ইন ফর লাভ’ সিনেমাটি মুক্তিপ্রাপ্ত সেরা কোরিয়ান রোম্যান্স সিনেমাগুলির মধ্যে একটি। কিম গো-ইউন এবং জুং হে-ইন যথাক্রমে মি-সু এবং হিউন-উ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমাটি দশ বছরের টাইমলাইনে সাজানো হয়েছে। সিনেমার চরিত্রগুলি আপনার চোখ থেকে অশ্রু ঝরাতে বাধ্য করবে।
এ ওয়্যারউলফ বয় : ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ফ্যান্টাসি রোমান্টিক কোরিয়ান চলচ্চিত্র এটি। দুই মেগা কে-ড্রামা অভিনেতা সং জোং-কি এবং পার্ক বো-ইয়ং অভিনয় করেছেন এই চলচ্চিত্রে। সিনেমাটি ২০১২ সালে টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সমসাময়িক বিশ্ব সিনেমা বিভাগে মুক্তি পায়। একই বছরে ১৭তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একটি প্রি-স্ক্রিনিং পায় সিনেমাটি। ‘এ ওয়্যারউলফ বয়’ হল সর্বকালের সেরা কোরিয়ান রোম্যান্স মুভিগুলির মধ্যে অন্যতম।
এ মোমেন্ট টু রিমেম্বার : ২০০৪ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ‘এ মোমেন্ট টু রিমেম্বার’ আরেকটি কোরিয়ান মাস্টারপিস। আপনি যদি একজন আবেগপ্রবণ ব্যক্তি হন, তবে এখনই দেখে ফেলুন এই সিনেমাটি। নায়ক-নায়িকা তাদের প্রেমের গল্প শুরুতেই বিয়ে করে। কিন্তু প্লট মোড় নেয় যখন নায়িকা আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হয় এবং ধীরে ধীরে নায়ককে ভুলে যেতে থাকে। এই সিনেমাটি অবশ্যই আপনার হৃদয় স্পর্শ করবে।
দ্য ক্লাসিক : ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি এখনো সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। এটি মা এবং মেয়ের প্রেমের গল্পকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। মায়ের পুরনো বাক্সে মেয়ে একটি চিঠি খুঁজে পায়। প্রতিটি চিঠি তাঁর মায়ের প্রেমের গল্প দেখানোর সময় দর্শকদের ফ্ল্যাশব্যাকে নিয়ে যায়। সর্বকালের সেরা রোমান্টিক কোরিয়ান মুভিগুলোর মধ্যে এটি একটি। এই সিনেমার বিখ্যাত বৃষ্টির দৃশ্যটি এখনও তরুণ-তরুণীদের মাঝে প্রিয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।