লাইফস্টাইল ডেস্ক: বেশ গরম পড়েছে। খাচ্ছি, গরম লাগছে। বসছি, গরম লাগছে। কাজে যাচ্ছি, গরম লাগছে। টিভি দেখছি, তাতেও গরমবোধ হচ্ছে। স্বস্তি নেই কোনোভাবেই। এর মাঝে আরেক দুশ্চিন্তা ত্বক কীভাবে সুস্থ, সুন্দর, সজীব রাখবো। আর যদি ওয়েলি স্কিন অর্থাৎ তৈলাক্ত ত্বক হয়, তাহলে তো দুশ্চিন্তার অভাব নেই। সেক্ষেত্রে চাই একটু বাড়তি যত্ন। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে ফাঁকেই করতে হবে সেসব যত্নের ব্যবস্থা। গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে যা করতে পারি,
১. সকালে যখন আপনি ঘুম থেকে উঠছেন এবং যখন আপনি ঘুমাতে যাচ্ছেন, দিনের এই দুই সময় নিয়ম করে আপনার মুখ ধোবেন। মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে কার্পণ্য করে লাভ নেই। সারাদিনে ৫-৬ বার মুখ ধুলে সেটা ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে বেশ উপকারী।
২. মুখ শুধু পানি দিয়ে ধুতে পারেন। চাইলে, একটি মাইল্ড ফেস ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। না হলে সকালে ক্রিমি ক্লিনজার ও রাতে জেল ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন৷ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি নয়, কলের ঠান্ডা পানিই মুখের জন্য যথেষ্ট।
৩. পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলার পর তোয়ালে দিয়ে মুখ শুকনো করে নিন। বেশি ভালো হয়, যদি তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে মুখ মুছতে পারেন৷ ভুলেও কখনও মুখ ঘষবেন না। যখনই মুখ ধোবেন তরপর নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিন। কখনই স্কিনের ওপর বেশি ঘষাঘষি করবেন না তাতে করে মুখের স্কিনে প্রেসার পরে। মুখের স্কিন খুব নরম ও পাতলা হয়।
৪. যখন আপনি মুখ ধুচ্ছেন কিংবা ময়শ্চারাইজার লাগাচ্ছেন কিংবা মেকআপ লাগাচ্ছেন, খেয়াল রাখবেন কখনও জোর দিয়ে ঘষবেন না। এর জন্য আপনার ত্বকে প্রদ্রাহ হতে পারে যা ত্বকের জন্য আরও খারাপ। ত্বকে অক্সিজেনের পরিমাণ কম পৌঁছাবে। ত্বক পুষ্টি পাবে না।
৫. তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে ফেস মাস্ক ব্যবহার করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ত্বকের জন্য ক্লে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবেন। চারকোল মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন, যা তৈলাক্ত ত্বকেরএকাধিক সমস্যা সমাধান করতে পারে। জেল মাস্ক বা শিট মাস্কও আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
৬. প্রতিদিন শসাররস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে তৈলাক্তভাব দূর হয়। ত্বকের যত্নে শসা আসলে বেস্ট। শসার রসে চালের গুঁড়া মেশালে হয়ে যাবে স্ক্র্যাব, এটা ব্যবহার করতে পারেন। শশার রসের সঙ্গে বেসন অথবা আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে ও গলায় ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
৭. তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে নিয়মিত গোলাপ জল, লেবুর রস আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে রেখে আলতো ভাবে তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন ধীরে ধীরে। এতে ব্রণ এবং ফুসকুড়ির দাগ উধাও হয়ে যাবে। অতিরিক্ত লেবুর রস ব্যবহার করবেন না যেন।
৮. মুখ ধোওয়ার পানিতে এক চিমটি লবণ দিয়ে নিতে পারেন। লবণ ত্বক থেকে বাড়তি তেল শোষণ করে নেয়। অয়েলি স্কিনের জন্য একটি ফেসিয়াল ক্লিনজার কিনুন। সবসময় হারবাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
৯. নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল দিয়ে skin পরিষ্কার করলে তা তৈলাক্ত ত্বকের এর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। অনেকেই জানেন না, রসুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক থাকায় ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে রসুনের পেস্ট ব্যবহারও ভালো। তবে, রসুন সবার ত্বকে স্যূট করে না। আপনার ত্বকে কী স্যুট করছে না জেনে কিছু ব্যবহার করবেন না। আপনার ত্বক কী চায় আপনাকেই বুঝতে হবে।
১০. মুলতানি মাটির সঙ্গে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট করে সারা মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, এটি তৈলাক্তভাব দূর করে আপনার ত্বককে মসৃণ করে তুলবে। চন্দনের গুণ অতুলনীয়, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য চন্দনের গুঁড়োর সঙ্গে মুলতানি মাটি এবং পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে তা মুখে ১০-১৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।
১১. বিউটি প্রোডাক্ট ও মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করার সময় আপনাকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। একাধিক সিরামের লেয়ার ব্যবহার করবেন না। একটি ভাল সিরাম বেছে নিন আপনার দিনের বেলার জন্য। রাতের জন্য রেটিলন ইনফিউসড সিরাম বা জেল ব্যবহার করতে পারেন। মেকআপ প্রাইমারের পর স্ট্রোব ক্রিম ব্যবহার করবেন না। একটি ডিউই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন।
১২. টোনার ব্যবহার করুন। মেকআপের পর সেটি ফেস মিস্ট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জল সব থেকে ভাল হবে। সানস্ক্রিন বেছে নেওয়ার সময়েও সতর্ক থাকবেন। একটি ফেস মিস্ট আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে সারাদিন। আর সঠিক সানস্ক্রিন আপনার মুখে সুরক্ষা স্তর তৈরি করবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েস্চারাইজিং নিয়মিত প্রয়োজন। এটাই প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এক্ষেত্রে উপরের সবগুলো ধাপই যে মানতে হবে তা নয়। আপনার ত্বকের কথা শুনুন। ত্বক কী চায় জেনে সে অনুযায়ী গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।