বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ওগুলো মূল ধাতব বর্জ্য। বিজ্ঞানীরা এগুলোর কেতাবি নাম রেখেছেন ‘স্পেস জাংক’। এর জুতসই বাংলা হতে পারে ‘মহাকাশ বর্জ্য’। আর সংজ্ঞাগত দিক থেকে মহাকাশ বর্জ্য হচ্ছে মহাকাশে, বিশেষ করে পৃথিবীর চারদিকে
অকার্যকর মহাকাশযান, উৎক্ষেপণ যানের অকার্যকর পর্যায়, কোনো মহাকাশ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহাকাশযান ও নভোচারীদের ফেলে আসা বিভিন্ন রকম বর্জ্যও এর অন্তর্গত। কক্ষপথে ফেলে আসা অকার্যকর কৃত্রিম বস্তু ছাড়াও ক্ষয়ীভবন ও জারণের ফলে উৎপন্ন টুকরা, মহাকাশযান থেকে বহিষ্কার করা কঠিন হয়ে যাওয়া তরল পদার্থ, সলিড রকেট মোটর থেকে জ্বলনমুক্ত কণিকা, এমনকি রঙের টুকরাও মহাকাশ বর্জ্যের অন্তর্গত হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিভিন্ন রকেট কিংবা উপগ্রহের ত্যাগ করা অংশ জমে জমে তৈরি হয় এসব ধাতব ‘বর্জ্য’। আর এগুলো জমে রয়েছে পৃথিবী থেকে ১০ কিলোমিটার ওপরে।
আর সেসব ধাতব পদার্থই পৃথিবীর আবহাওয়ামণ্ডলে প্রভাব ফেলছে. বিশেষত ওজোনস্তরকে খেয়ে ফেলছে। এই গ্রহবাসীর ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেট সার্ভিস চাহিদা মেটাতে বর্তমানে মহাকাশে হাজার হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করা হয়। আরো অনেক উপগ্রহ রয়েছে উেক্ষপণের অপেক্ষায়। এসব উপগ্রহের আয়ু সীমিত এবং এগুলো থেকে এসব দূষক পদার্থ নির্গত হয়, যা ওজোনস্তরের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
গবেষকরা বলেন, এসব উপগ্রহ থেকে অল্প পরিমাণে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড কণা নির্গত হলেও তা ওজোনস্তরের বিনাশে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অগণিত উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড কণা নির্গতের পরিমাণ আট গুণ বেড়ে গেছে এবং আগামী দিনগুলোতে তা আরো বাড়বে। গবেষকরা বলেছেন, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড কণা সরাসরি ওজোন কণার সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায় না। তবে এটা ওজোন আর ক্লোরিনের মধ্যে ভয়াবহ রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়, যা ওজোনস্তরকে ক্ষয়ে যেতে বাধ্য করছে। আমেরিকার সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রকৌশল বিভাগ মহাকাশে ত্যাগ করা রকেট ফুয়েল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এসব তথ্য পেয়েছে।
সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নভোবিদ্যা বিভাগের গবেষক জোসেফ ওয়াং বলেন, ‘আমরা সবেমাত্র ভাবতে শিখেছি যে এসব রাসায়নিক বিক্রিয়া এই গ্রহবাসীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।’ গবেষকরা বলছেন, বিজ্ঞানীরা এমনিতেই মহাকাশ বর্জ্যের বিপদ নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। এখন জানা গেল, এসব কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে নির্গত রাসায়নিক কণাও বিপদের মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। অর্থাৎ মহাকাশ বর্জ্য বলতে আমরা এত দিন যা বুঝে এসেছি, এখন দেখা যাচ্ছে মহাকাশ বর্জ্যের আওতা আরো অনেক বড়। সূত্র : গালফ নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।